স্টেশনে গুনধর ছেলে বাবা-মাকে ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় মৃত্যু হল বাবার

- আপডেট : ২০ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার
- / 37
উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, বারুইপুর : মায়ের হাতে ৩০০ টাকা গুঁজে দিয়ে বারুইপুর স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মে বৃদ্ধ বাবা ও মাকে ফেলে রেখে বেপাত্তা হয়েছিল গুণধর ছেলে। শারীরিক অসুস্থতায় ৭৫ বছরের গোবিন্দ বাবুর মৃত্যু হয়। কিন্তু ছেলে তো ফেরেনি। স্বামীর মৃতদেহ শশ্মানে যাবে কীভাবে? সৎকার কাজ হবে কীভাবে সেই ভেবেই দিশেহারা হয়ে উঠেছিলেন বৃদ্ধা ৬৯ বছরের কমলা পুরকাইত।
কিন্তু তাঁর এই অবস্থায় পাশে এসে দাঁড়ালো বারুইপুর থানার ও বারুইপুর পৌরসভা। সিভিক ভলেন্টিয়ার পুলকেশ নস্কর বলেন, থানা বড় বাবুর নির্দেশে ও বারইপুর পৌরসভার সাহায্যে নিয়ে, এই শেষকৃত্য সম্পন্ন করলাম আমরা। সোমবার বারুইপুর কীর্তন খোলা শশ্মানে বৃদ্ধের শেষকৃত্ত সম্পন্ন হল। স্বামীর মুখাগ্নি করলেন স্ত্রী। ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার নিজে দায়িত্ব নিয়ে বৃদ্ধা কমলাদেবীর এই কাজে সব সাহায্য করলেন। এমনকী কাজের পরে বৃদ্ধা কে আবার পৌঁছে দিলেন সেই হোমে।
বৃদ্ধা কমলাদেবীর কথায়, ছেলে ফেরেনি। কিন্তু থানার সিভিক ভলেন্টিয়ার আজ আমার সঙ্গে থেকে ছেলের দায়িত্ব পালন করল।গত ১০ আগস্ট থেকে দম্পতির ঠাঁই হয়েছিল বারুইপুর স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মে। ৭৫ বছরের বৃদ্ধ গোবিন্দ পুরকাইত এর হাঁটাচলার ক্ষমতা ছিল না। বারুইপুর জি আর পি তাঁদের উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাকে রেখেছিল বারুইপুর পুরসভার আশ্রয় হীনদের হোমে।
সেখানে থাকার পরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগে বৃদ্ধর মৃত্যু হয় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে। দম্পতির বাড়ি রামনগর থানার রায়চক এর মানখন্ড গ্রামে। স্বামীকে হারিয়ে চোখে জল নিয়ে কমলাদেবী বলেন, ছেলে হাতে ৩০০ টাকা গুঁজে দিয়ে ধর্মতলায় কাজে যাচ্ছে বলে বেরিয়ে গিয়েছিল। বলেছিল ফিরে এসে আবার নিয়ে যাবে। কিন্তু ছেলে আর ফিরল না।
স্বামীও চলে গেল। কোথায় এখন কী করবো জানা নেই। শশ্মানে আসা অন্য শশ্মান যাত্রীরাও এমন গুণধর ছেলের কড়া শাস্তি চান প্রশাসনের কাছে। একমাত্র ছেলে হয়ে কী করে পারলো এমন হীন কাজ করতে প্রশ্ন তাঁদের।