০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় আবারও রক্তপাত, স্বাস্থ্য শিবিরের সামনে ট্যাঙ্ক, উদ্বাস্তু শিবিরে বোমা, শিশুসহ নিহত অন্তত ৭০

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার
  • / 204

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উত্তর ও মধ্য গাজায় ফের আগুন ঝরাল ইসরাইলি বিমান। শনিবার রাতভর নুসেইরত উদ্বাস্তু শিবির ও গাজা সিটির একাধিক আবাসিক এলাকায় টানা বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭০ জন। নুসেইরাতে একই পরিবারের ৯ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। তুফাহ এলাকায় বিমান হানায় মারা গিয়েছেন আরও ১১ জন—যাঁদের মধ্যে ৬ জনই শিশু ও মহিলা। শাতি উদ্বাস্তু শিবিরে একটি পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

রাষ্ট্রসংঘে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আক্রমণাত্মক ভাষণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই হামলা শুরু হয়। সেখানেই তিনি গাজায় “দ্রুত কাজ শেষ” করার ডাক দেন। এর প্রতিবাদে বৈঠক চলাকালীন ওয়াকআউট করেন একাধিক দেশের প্রতিনিধি। কিন্তু নিজের দেশেই বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন নেতানিয়াহু। হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি বন্দিদের পরিবারও গাজার গণহত্যা বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন।

গাজার মাটিতে এখন দখলদার বাহিনীর ট্যাঙ্ক, উদ্বাস্তু শিবিরের অদূরে অবস্থান করছে ইসরায়েলি সেনা। চিকিৎসক সংগঠন ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স জানিয়েছে, হামলার আশঙ্কায় তাদের ত্রাণ ও চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বাধ্য হতে হয়েছে। স্বাস্থ্য শিবিরের মাত্র আধমাইল দূরে ট্যাঙ্ক দাঁড়িয়ে থাকায় প্রতিনিয়ত গোলাবর্ষণের হুমকি তৈরি হচ্ছে।

রাষ্ট্রসংঘের অনুরোধ উপেক্ষা করে খাদ্য সরবরাহও বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। ফলে শিশুদের জন্য এক গ্লাস জল কিংবা সামান্য খাবার জোগাড় করতে পরিবারগুলোকে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, ইতিমধ্যেই প্রায় ৩ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছেন। আরও ৭ লাখকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছে ইসরাইল—তাদের যাওয়ার কোনও জায়গা নেই।

এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার নিউ ইয়র্কে মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার কথা নেতানিয়াহুর। ট্রাম্প দাবি করছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির দিকে কিছুটা অগ্রসর হয়েছেন। তবে বিশ্বজুড়ে নেতানিয়াহুকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেওয়ার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনিও।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাজায় আবারও রক্তপাত, স্বাস্থ্য শিবিরের সামনে ট্যাঙ্ক, উদ্বাস্তু শিবিরে বোমা, শিশুসহ নিহত অন্তত ৭০

আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উত্তর ও মধ্য গাজায় ফের আগুন ঝরাল ইসরাইলি বিমান। শনিবার রাতভর নুসেইরত উদ্বাস্তু শিবির ও গাজা সিটির একাধিক আবাসিক এলাকায় টানা বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭০ জন। নুসেইরাতে একই পরিবারের ৯ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। তুফাহ এলাকায় বিমান হানায় মারা গিয়েছেন আরও ১১ জন—যাঁদের মধ্যে ৬ জনই শিশু ও মহিলা। শাতি উদ্বাস্তু শিবিরে একটি পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

রাষ্ট্রসংঘে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আক্রমণাত্মক ভাষণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই হামলা শুরু হয়। সেখানেই তিনি গাজায় “দ্রুত কাজ শেষ” করার ডাক দেন। এর প্রতিবাদে বৈঠক চলাকালীন ওয়াকআউট করেন একাধিক দেশের প্রতিনিধি। কিন্তু নিজের দেশেই বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন নেতানিয়াহু। হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি বন্দিদের পরিবারও গাজার গণহত্যা বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন।

গাজার মাটিতে এখন দখলদার বাহিনীর ট্যাঙ্ক, উদ্বাস্তু শিবিরের অদূরে অবস্থান করছে ইসরায়েলি সেনা। চিকিৎসক সংগঠন ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স জানিয়েছে, হামলার আশঙ্কায় তাদের ত্রাণ ও চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বাধ্য হতে হয়েছে। স্বাস্থ্য শিবিরের মাত্র আধমাইল দূরে ট্যাঙ্ক দাঁড়িয়ে থাকায় প্রতিনিয়ত গোলাবর্ষণের হুমকি তৈরি হচ্ছে।

রাষ্ট্রসংঘের অনুরোধ উপেক্ষা করে খাদ্য সরবরাহও বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। ফলে শিশুদের জন্য এক গ্লাস জল কিংবা সামান্য খাবার জোগাড় করতে পরিবারগুলোকে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, ইতিমধ্যেই প্রায় ৩ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছেন। আরও ৭ লাখকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছে ইসরাইল—তাদের যাওয়ার কোনও জায়গা নেই।

এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার নিউ ইয়র্কে মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার কথা নেতানিয়াহুর। ট্রাম্প দাবি করছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির দিকে কিছুটা অগ্রসর হয়েছেন। তবে বিশ্বজুড়ে নেতানিয়াহুকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেওয়ার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনিও।