তেলেঙ্গানার গ্রামীণ ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জীবিকা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে

- আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার
- / 138
মুসলিম সমাজের পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচিত ইমামরা এখন দুই বেলা খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন—বিশেষ করে তেলেঙ্গানার গ্রামীণ ও দুর্গম এলাকার ইমামরা।
মসজিদের ইমামরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরিচালনার পাশাপাশি এলাকার শিশুদের ইসলামিক শিক্ষাদান করেন। তাঁদের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব অঞ্চলের মুসলমানরা স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অভ্যস্ত। কিন্তু তাঁদের এই শ্রম ও নিষ্ঠা খুব কমই স্বীকৃতি পায়।
সমস্যা শুরু হয় যখন সরকার তাঁদের মাসিক সম্মানী বিলম্বে দিতে থাকে। রঙ্গা রেড্ডি জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের ইমাম মোহাম্মদ হামিদ বলেন, “আগে সময়মতো সাম্মানিক পেলে সংসার চলত। এখন পাঁচ মাসে একবার টাকা পাই, এতে টিকে থাকা খুবই কঠিন।”
গ্রামাঞ্চলের ইমাম ও মুয়াজ্জিনরা প্রায় বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেন। তাঁদের আয়ের উৎস মূলত স্থানীয় অনুদান, যা শহরের তুলনায় অনেক কম। নালগোন্ডা জেলার এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, “আমাদের গ্রামে প্রায় ৬০টি মুসলিম পরিবার ছিল, এখন অর্ধেকই হায়দরাবাদে চলে গেছে। কয়েকটি পরিবার মিলে প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে তহবিল সংগ্রহ করে ইমামকে দিই, কিন্তু সবার পক্ষে অনুদান দেওয়া সম্ভব নয়।”
হায়দরাবাদের আশেপাশের অনেক গ্রামে মাত্র ১০টি পরিবার থাকলেও সেখানে মসজিদ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের প্রচেষ্টায়। কিন্তু ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের পারিশ্রমিক প্রদানের কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই।
বেশিরভাগ ইমাম ও মুয়াজ্জিনই বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। তাঁদের কথায়, “শহরে মানুষ আমাদের চেনে ও সহায়তা করে। কিন্তু গ্রামে মানুষ দরিদ্র, জোর করে টাকা নেওয়া যায় না। মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, ভবিষ্যতে কীভাবে চলব বুঝতে পারছি না।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ ও ইমামদের আর্থিক সহায়তার দায়িত্ব সরকারের নয়, বরং স্থানীয় মুসলিম সমাজের ওপর বর্তানো উচিত। বিশ্বাস যদি সত্যিকারের হয়, তা বিশ্বাসীরাই টিকিয়ে রাখবেন।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বহু ইমাম ‘বিমারু’ রাজ্য (বিহার, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড) থেকে আসেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা এখানেই থাকতে চান এবং স্থানীয়দের ইমাম বা মুয়াজ্জিন হতে দিতে চান না। তবে সরকার চাইলে স্থানীয় মুসলিম যুবকদের এই দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করতে পারে। সূত্র: সিয়াসাত ডেইলি