২৭ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এসআইআরে নাম বাদ গেলে সিএএর মাধ্যমে মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবেন: শান্তনু ঠাকুর

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার
  • / 104

 

ভোটার তালিকার ইন্টেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনুপ্রবেশ ইস্যু তুলে ভোটের বাজার গরম করা বরাবরই বিজেপির প্রচলিত কৌশল। এবারও সেই পথে হেঁটেই এসআইআরের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিশানা করে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা একের পর এক হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় হিন্দু উদ্বাস্তু ও নমঃশূদ্র ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, সঠিক নথি না থাকলে এক মুহূর্তে তাঁরা দেশহারা হয়ে যেতে পারেন।

এ অবস্থায় সামনে এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া ভোটব্যাংক উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার সীমান্ত জুড়ে প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, এসআইআরে নাম বাদ গেলেও উদ্বেগের কারণ নেই, কারণ সিএএ রয়েছে। ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে আন্তর্জাতিক মতুয়া গোঁসাই সম্মেলনে তিনি বলেন, “এসআইআরে নাম বাদ গেলে সিএএর মাধ্যমে মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবেন। আপনারা সিএএতে আবেদন করুন। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানাব, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেও যেন কারও নাম বাদ না যায়।”

শান্তনু ঠাকুর আরও বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নয়, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের কেউ বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে না। তবে এসআইআরে নাম বাদ গেলে সিএএর মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়া কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “এসআইআর নির্বাচন কমিশনের আওতায়, আর সিএএ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিষয়। তাই এসআইআরে নাম বাদ গেলেও সিএএর মাধ্যমে নাগরিকত্ব মিলতে পারে। নাগরিক হলে তাঁর ভোটার কার্ডও হয়ে যাবে।”

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, শান্তনু ঠাকুরের এই বক্তব্য মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁদের দাবি, ভোটের আগে মতুয়া ভোটব্যাংক ধরে রাখতেই এই আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বিজেপি জানে, এসআইআরে মতুয়াদের নামই বেশি বাদ যাবে। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতেই শান্তনু ঠাকুর আবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ওদের আসল লক্ষ্য মানুষকে হয়রান করা। ভোট এলেই নাগরিকত্বের তাস খেলে।”
সিপিএম নেতা সমিত কর বলেন, “এসআইআরের নামে নাগরিকত্ব বাতিলের পর সিএএ করাতে বাধ্য করার এটাই বিজেপির কৌশল।”

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এসআইআরে নাম বাদ গেলে সিএএর মাধ্যমে মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবেন: শান্তনু ঠাকুর

আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার

 

ভোটার তালিকার ইন্টেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনুপ্রবেশ ইস্যু তুলে ভোটের বাজার গরম করা বরাবরই বিজেপির প্রচলিত কৌশল। এবারও সেই পথে হেঁটেই এসআইআরের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিশানা করে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা একের পর এক হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় হিন্দু উদ্বাস্তু ও নমঃশূদ্র ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, সঠিক নথি না থাকলে এক মুহূর্তে তাঁরা দেশহারা হয়ে যেতে পারেন।

এ অবস্থায় সামনে এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া ভোটব্যাংক উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার সীমান্ত জুড়ে প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, এসআইআরে নাম বাদ গেলেও উদ্বেগের কারণ নেই, কারণ সিএএ রয়েছে। ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে আন্তর্জাতিক মতুয়া গোঁসাই সম্মেলনে তিনি বলেন, “এসআইআরে নাম বাদ গেলে সিএএর মাধ্যমে মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবেন। আপনারা সিএএতে আবেদন করুন। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানাব, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেও যেন কারও নাম বাদ না যায়।”

শান্তনু ঠাকুর আরও বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নয়, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের কেউ বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে না। তবে এসআইআরে নাম বাদ গেলে সিএএর মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়া কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “এসআইআর নির্বাচন কমিশনের আওতায়, আর সিএএ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিষয়। তাই এসআইআরে নাম বাদ গেলেও সিএএর মাধ্যমে নাগরিকত্ব মিলতে পারে। নাগরিক হলে তাঁর ভোটার কার্ডও হয়ে যাবে।”

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, শান্তনু ঠাকুরের এই বক্তব্য মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁদের দাবি, ভোটের আগে মতুয়া ভোটব্যাংক ধরে রাখতেই এই আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বিজেপি জানে, এসআইআরে মতুয়াদের নামই বেশি বাদ যাবে। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতেই শান্তনু ঠাকুর আবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ওদের আসল লক্ষ্য মানুষকে হয়রান করা। ভোট এলেই নাগরিকত্বের তাস খেলে।”
সিপিএম নেতা সমিত কর বলেন, “এসআইআরের নামে নাগরিকত্ব বাতিলের পর সিএএ করাতে বাধ্য করার এটাই বিজেপির কৌশল।”