২১ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের যাত্রীবাহী লঞ্চে ভয়াবহ আগুন, মৃত ৩৬, হাসপাতালে ভর্তি ৭৫

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার
  • / 101

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বাংলাদেশের যাত্রীবাহী লঞ্চে ভয়াবহ আগুন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৬ দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। প্রাণে বাঁচতে একের পর এক মানুষ ঝাঁপ দিতে থাকেন সুগন্ধী নদীতে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও যৌথ বাহিনী। এ ঘটনায় দগ্ধ প্রায় ৭৫ জনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আরও ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

‘এমভি-অভিযান ১০’ নামে তিনতলা ওই লঞ্চে প্রায় এক হাজার যাত্রী ছিল। ঘটনায় মানুষ আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়।ভস্মীভূত গোটা লঞ্চ।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত এইচএম সইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের হাসপাতালে বার্ন ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এদিকে যাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাঁদের অধিকাংশ মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছেন। ৬৭ জনকে সার্জারি ইউনিটে রাখা সম্ভব হলেও বাকিদের স্থানান্তরিত করতে হয় ঢাকায়।

আরও পড়ুন: অসুস্থ ধনখড়, বুকে ব্যথা নিয়ে এইমসে ভর্তি উপরাষ্ট্রপতি

লঞ্চের এক যাত্রী জানান, ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে হঠাৎ লঞ্চের ইঞ্চিনরুমের দিকে থেকে আগুন দেখতে পান তারা। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এ সময় অনেকেই জীবন বাঁচাতে নদীতে লাফ দেয়। আহতও হয় অনেকে।

আরও পড়ুন: আখনুরে আইইডি বিস্ফোরণে মৃত ২ জওয়ান

দুর্ঘটনার সময় লঞ্চে তিন শতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, লঞ্চের রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে সঠিক হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ঘটনার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বাস দুর্ঘটনা, দগ্ধ হয়ে ৪৪ জনের প্রাণহানি

আরেকজন যাত্রী জানান, লঞ্চটি ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। সেই আগুন মুহূর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে যায়। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরাও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে কোনও ক্রমে প্রাণ বাঁচান বলে জানান।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান জানান, ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে, লঞ্চের বডি গরম থাকায় উদ্ধার কাজ কিছুটা দেরি হচ্ছে। লঞ্চে পাঁচ শতাধিক যাত্রী থাকলেও আগুনে ৭০-৮০ জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।”

লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানিয়েছেন, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এসময় লঞ্চে বেশ কয়েকজন যাত্রী দগ্ধ হয়। প্রাণে বাঁচতে বেশ কয়েকজন নদীতে ঝাঁপ দেন।
এদিকে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক বিল্লাল উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের নামপরিচয় এখনো জানা যায়নি।’
শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত স্টাফ নার্স মিজানুর রহমান জানান, ভর্তি রোগীদের মধ্যে সাত থেকে আটটি শিশু রয়েছে।

 

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলাদেশের যাত্রীবাহী লঞ্চে ভয়াবহ আগুন, মৃত ৩৬, হাসপাতালে ভর্তি ৭৫

আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বাংলাদেশের যাত্রীবাহী লঞ্চে ভয়াবহ আগুন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৬ দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। প্রাণে বাঁচতে একের পর এক মানুষ ঝাঁপ দিতে থাকেন সুগন্ধী নদীতে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও যৌথ বাহিনী। এ ঘটনায় দগ্ধ প্রায় ৭৫ জনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আরও ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

‘এমভি-অভিযান ১০’ নামে তিনতলা ওই লঞ্চে প্রায় এক হাজার যাত্রী ছিল। ঘটনায় মানুষ আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়।ভস্মীভূত গোটা লঞ্চ।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত এইচএম সইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের হাসপাতালে বার্ন ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এদিকে যাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাঁদের অধিকাংশ মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছেন। ৬৭ জনকে সার্জারি ইউনিটে রাখা সম্ভব হলেও বাকিদের স্থানান্তরিত করতে হয় ঢাকায়।

আরও পড়ুন: অসুস্থ ধনখড়, বুকে ব্যথা নিয়ে এইমসে ভর্তি উপরাষ্ট্রপতি

লঞ্চের এক যাত্রী জানান, ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে হঠাৎ লঞ্চের ইঞ্চিনরুমের দিকে থেকে আগুন দেখতে পান তারা। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এ সময় অনেকেই জীবন বাঁচাতে নদীতে লাফ দেয়। আহতও হয় অনেকে।

আরও পড়ুন: আখনুরে আইইডি বিস্ফোরণে মৃত ২ জওয়ান

দুর্ঘটনার সময় লঞ্চে তিন শতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, লঞ্চের রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে সঠিক হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ঘটনার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বাস দুর্ঘটনা, দগ্ধ হয়ে ৪৪ জনের প্রাণহানি

আরেকজন যাত্রী জানান, লঞ্চটি ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। সেই আগুন মুহূর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে যায়। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরাও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে তীরে কোনও ক্রমে প্রাণ বাঁচান বলে জানান।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান জানান, ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে, লঞ্চের বডি গরম থাকায় উদ্ধার কাজ কিছুটা দেরি হচ্ছে। লঞ্চে পাঁচ শতাধিক যাত্রী থাকলেও আগুনে ৭০-৮০ জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।”

লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানিয়েছেন, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এসময় লঞ্চে বেশ কয়েকজন যাত্রী দগ্ধ হয়। প্রাণে বাঁচতে বেশ কয়েকজন নদীতে ঝাঁপ দেন।
এদিকে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক বিল্লাল উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের নামপরিচয় এখনো জানা যায়নি।’
শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত স্টাফ নার্স মিজানুর রহমান জানান, ভর্তি রোগীদের মধ্যে সাত থেকে আটটি শিশু রয়েছে।