১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নন্দীগ্রামে আমায় লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল’ – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 244

নিজস্ব প্রতিনিধি­ : কথায় বলে, ‘সমঝদারোকে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়।’ কারও নাম মুখে আনেননি, কিন্তু নন্দীগ্রামে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলে ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলে কার্যত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক ঢিলে অনেক পাখিই মেরেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

বুধবার রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে চলতি অধিবেশনে বিজেপি বিধায়কদের ‘উগ্র’ আচরণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংসদীয় গণতন্ত্রের পীঠস্থান যে কোনও মাস্তানি করার জায়গা নয় স্পষ্ট ভাষায় যেমন সেই বার্তা দিয়েছেন, তেমনই ফের একবার বিধানসভার ভোটের সময়ে নন্দীগ্রামে তাঁর উপরে হামলার কথা তুলে এনে পদ্ম শিবিরকে পরোক্ষে নিশানা করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, ১০ মাস আগের সেই আঘাত ভোলেননি।

আরও পড়ুন: Supreme Court on VC Appointment: ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সায় ললিত কমিটির

গত বিধানসভা ভোটে গোটা দেশের কাছে আলোচনার চর্চা হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম আসনটি। দ্বৈরথে নেমেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো ও তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নাম লেখানো শুভেন্দু অধিকারী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সামান্য ভোটে হেরেছিলেন মমতা। কিন্তু সেই হারের পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে ভোট পুনর্গণনার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তবে সেই মামলার তেমন অগ্রগতি হয়নি।
এদিন রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে বিজেপি বিধায়কদের আচরণের নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বিজেপি। ওরা মানুষের কথা শোনে না। যারা সাধারণভাবে নিজের এলাকায় জিততে পারে না, তারা আবার বড় বড় কথা বলে। আমরা শান্তি চাই ওরা অশান্তি চায়। আমরা শিল্প চাই ওরা দুর্ভিক্ষ চায়। খালি দাঙ্গা করে। বাংলা দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিল।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

 

আরও পড়ুন: Jadavpur University: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু!

এখন উন্নয়নের শিখরে উঠেছে। যারা ভাষা জানে না, এনআরসি আন্দোলন করলে গুলি করে মারে, কোভিডে মারা গেলে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয় তারা আবার কথা বলে কী করে? বিধানসভা ভোটে সমস্ত অপপ্রচারের জবাব দিয়েছে বাংলার মানুষ। মনে রাখবেন বাংলায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে।’ বিধানসভার ভোট প্রচারে বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, অব কি বার ২০০ পার। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী শ্লেষের সঙ্গে বলেন, ‘বড় বড় কথা বলেছিল। অব কি বার ২০০ পার। আমি বলছি, এবার অব কি বার পগার পার।’

নন্দীগ্রামে তাঁকে হারাতে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমাকে প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। নন্দীগ্রামে হারাতে আন্ডারস্ট্যান্ডিং (সমঝোতা) করা হয়েছিল। এমনকী আমাকে লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়েছিল। যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তাঁদের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’যদিও কারা ষড়যন্ত্র করেছিলেন ,কারা সমঝোতা করেছিলেন, তা উহ্যই রেখেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। কিন্তু তাঁর অভিযোগ নিয়ে ফের নতুন করে রাজনৈতিক মহলে জলঘোলা শুরু হয়েছে।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নন্দীগ্রামে আমায় লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল’ – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, বৃহস্পতিবার

নিজস্ব প্রতিনিধি­ : কথায় বলে, ‘সমঝদারোকে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়।’ কারও নাম মুখে আনেননি, কিন্তু নন্দীগ্রামে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলে ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলে কার্যত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক ঢিলে অনেক পাখিই মেরেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

বুধবার রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে চলতি অধিবেশনে বিজেপি বিধায়কদের ‘উগ্র’ আচরণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংসদীয় গণতন্ত্রের পীঠস্থান যে কোনও মাস্তানি করার জায়গা নয় স্পষ্ট ভাষায় যেমন সেই বার্তা দিয়েছেন, তেমনই ফের একবার বিধানসভার ভোটের সময়ে নন্দীগ্রামে তাঁর উপরে হামলার কথা তুলে এনে পদ্ম শিবিরকে পরোক্ষে নিশানা করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, ১০ মাস আগের সেই আঘাত ভোলেননি।

আরও পড়ুন: Supreme Court on VC Appointment: ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সায় ললিত কমিটির

গত বিধানসভা ভোটে গোটা দেশের কাছে আলোচনার চর্চা হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম আসনটি। দ্বৈরথে নেমেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো ও তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নাম লেখানো শুভেন্দু অধিকারী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সামান্য ভোটে হেরেছিলেন মমতা। কিন্তু সেই হারের পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে ভোট পুনর্গণনার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তবে সেই মামলার তেমন অগ্রগতি হয়নি।
এদিন রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে অংশ নিতে গিয়ে বিজেপি বিধায়কদের আচরণের নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বিজেপি। ওরা মানুষের কথা শোনে না। যারা সাধারণভাবে নিজের এলাকায় জিততে পারে না, তারা আবার বড় বড় কথা বলে। আমরা শান্তি চাই ওরা অশান্তি চায়। আমরা শিল্প চাই ওরা দুর্ভিক্ষ চায়। খালি দাঙ্গা করে। বাংলা দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিল।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

 

আরও পড়ুন: Jadavpur University: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু!

এখন উন্নয়নের শিখরে উঠেছে। যারা ভাষা জানে না, এনআরসি আন্দোলন করলে গুলি করে মারে, কোভিডে মারা গেলে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয় তারা আবার কথা বলে কী করে? বিধানসভা ভোটে সমস্ত অপপ্রচারের জবাব দিয়েছে বাংলার মানুষ। মনে রাখবেন বাংলায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে।’ বিধানসভার ভোট প্রচারে বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, অব কি বার ২০০ পার। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী শ্লেষের সঙ্গে বলেন, ‘বড় বড় কথা বলেছিল। অব কি বার ২০০ পার। আমি বলছি, এবার অব কি বার পগার পার।’

নন্দীগ্রামে তাঁকে হারাতে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমাকে প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। নন্দীগ্রামে হারাতে আন্ডারস্ট্যান্ডিং (সমঝোতা) করা হয়েছিল। এমনকী আমাকে লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়েছিল। যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তাঁদের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’যদিও কারা ষড়যন্ত্র করেছিলেন ,কারা সমঝোতা করেছিলেন, তা উহ্যই রেখেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। কিন্তু তাঁর অভিযোগ নিয়ে ফের নতুন করে রাজনৈতিক মহলে জলঘোলা শুরু হয়েছে।