১৩ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইলেন মধ্যপ্রদেশের নির্দোষ দিনমজুর

সামিমা এহসানা
  • আপডেট : ৪ জানুয়ারী ২০২৩, বুধবার
  • / 18

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সাম্প্রতিক অতীতে কোনো সাধারণ ভারতীয় এমন ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন বলে মনে করতে পারছেন না আইনজীবীরা। অনেকে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না। মধ্যপ্রদেশের এক দিনমজুর ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন সরকারের কাছে। কারণ মিথ্যা মামলায় গত ৪ বছর থেকে বিধ্বস্থ হয়েছে ওই দিনমজুর ও তাঁর পরিবারের জীবন।

২০১৮ সালে মধ্যপ্রদেশের রতলম জেলার বাজনা থানায় একটি গণধর্ষণের মামলা দায়ের হয়। ৩০ বছরের কান্তিলাল সিং ও আরও দুজনকে তলব করে পুলিশ। কান্তিলাল স্পষ্ট জানান, তিনি অপরাধ করেননি। কিন্তু পুলিশ তার খোঁজ শুরু করলে বাধ্য হয়ে বারবার বাসা বদল করে পালিয়ে বেড়ান কান্তিলাল। শেষপর্যন্ত ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর পুলিশ গ্রেফতার করে কান্তিলালকে। তারপর দু’বছর জেল বন্দী। ৬৬৬ দিন জেলে কাটানোর পর গত ২২ অক্টোবর জেলমুক্ত হন পেশায় দিনমজুর কান্তিলাল।

কিন্তু ২০১৮-২০২২ প্রায় ৪ বছর বিনা অপরাধে সাজা খাটতে হয়েছে কান্তিলালকে। বাড়িতে উপার্জনের কেউ না থাকায় অনাহারে কেটেছে তাঁর মা, স্ত্রী ও তিনটি ফুটফুটে সন্তানের জীবন। অভাবের তাড়নায় স্কুল ছুট হয়েছে তাঁর সন্তানরা। ৪ বছরের আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। তিনি ও তাঁর পরিবার তীব্র মানসিক ষন্ত্রণা ভোগ করেছেন এই ৪ বছর। কিন্তু এই ক্ষতির দায় কে নেবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে বিগত ৪ বছরের যাবতীয় কষ্ট, অভাব ও মানসিক ষন্ত্রণার বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন কান্তিলাল। কিন্তু তাই বলে ১০ হাজার কোটি টাকা? এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন কান্তিলালের আইনজীবী বিজয় যাদব। তিনি বলেছেন, ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়াটা অবাস্তব মনে হলেও কান্তিলাল গত চারবছরে যে হয়রানির শিকার হয়েছেন, তার তুলনায় এই ক্ষতিপূরণ খুবই সামান্য। পশুরাও সুরক্ষা পায়। কিন্তু ধর্ষণের মিথ্যা মামলা থেকে পুরুষদের রক্ষা করার কোনোও আইন নেই। অন্যদিকে কান্তিলাল নিজে জানিয়েছেন, এই অন্যায় যাতে আর কখনও কারোর সঙ্গে না হয়, তাই তিনি এমন ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

ক্ষতিপূরণ চাওয়ার পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ সরকার, অভিযোগকারিণীর স্বামী ও তিনজন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ওই দিনমজুর। ১০ জানুয়ারি রতলম জেলা ও সেশন কোর্টে মামলাটির শুনানি হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইলেন মধ্যপ্রদেশের নির্দোষ দিনমজুর

আপডেট : ৪ জানুয়ারী ২০২৩, বুধবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সাম্প্রতিক অতীতে কোনো সাধারণ ভারতীয় এমন ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন বলে মনে করতে পারছেন না আইনজীবীরা। অনেকে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না। মধ্যপ্রদেশের এক দিনমজুর ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন সরকারের কাছে। কারণ মিথ্যা মামলায় গত ৪ বছর থেকে বিধ্বস্থ হয়েছে ওই দিনমজুর ও তাঁর পরিবারের জীবন।

২০১৮ সালে মধ্যপ্রদেশের রতলম জেলার বাজনা থানায় একটি গণধর্ষণের মামলা দায়ের হয়। ৩০ বছরের কান্তিলাল সিং ও আরও দুজনকে তলব করে পুলিশ। কান্তিলাল স্পষ্ট জানান, তিনি অপরাধ করেননি। কিন্তু পুলিশ তার খোঁজ শুরু করলে বাধ্য হয়ে বারবার বাসা বদল করে পালিয়ে বেড়ান কান্তিলাল। শেষপর্যন্ত ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর পুলিশ গ্রেফতার করে কান্তিলালকে। তারপর দু’বছর জেল বন্দী। ৬৬৬ দিন জেলে কাটানোর পর গত ২২ অক্টোবর জেলমুক্ত হন পেশায় দিনমজুর কান্তিলাল।

কিন্তু ২০১৮-২০২২ প্রায় ৪ বছর বিনা অপরাধে সাজা খাটতে হয়েছে কান্তিলালকে। বাড়িতে উপার্জনের কেউ না থাকায় অনাহারে কেটেছে তাঁর মা, স্ত্রী ও তিনটি ফুটফুটে সন্তানের জীবন। অভাবের তাড়নায় স্কুল ছুট হয়েছে তাঁর সন্তানরা। ৪ বছরের আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। তিনি ও তাঁর পরিবার তীব্র মানসিক ষন্ত্রণা ভোগ করেছেন এই ৪ বছর। কিন্তু এই ক্ষতির দায় কে নেবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে বিগত ৪ বছরের যাবতীয় কষ্ট, অভাব ও মানসিক ষন্ত্রণার বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন কান্তিলাল। কিন্তু তাই বলে ১০ হাজার কোটি টাকা? এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন কান্তিলালের আইনজীবী বিজয় যাদব। তিনি বলেছেন, ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়াটা অবাস্তব মনে হলেও কান্তিলাল গত চারবছরে যে হয়রানির শিকার হয়েছেন, তার তুলনায় এই ক্ষতিপূরণ খুবই সামান্য। পশুরাও সুরক্ষা পায়। কিন্তু ধর্ষণের মিথ্যা মামলা থেকে পুরুষদের রক্ষা করার কোনোও আইন নেই। অন্যদিকে কান্তিলাল নিজে জানিয়েছেন, এই অন্যায় যাতে আর কখনও কারোর সঙ্গে না হয়, তাই তিনি এমন ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

ক্ষতিপূরণ চাওয়ার পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ সরকার, অভিযোগকারিণীর স্বামী ও তিনজন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ওই দিনমজুর। ১০ জানুয়ারি রতলম জেলা ও সেশন কোর্টে মামলাটির শুনানি হবে।