১৮ জুন ২০২৫, বুধবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমরমিয়ে তোলাবাজি,  পথ অবরোধ পাথর ব্যবসায়ীদের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৬ জানুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার
  • / 22

নিজস্ব প্রতিনিধি, রামপুরহাট:  তোলাবাজির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলো মল্লারপুর পাথর শিল্পাঞ্চল পাথর ব্যবসায়ীদের। বুধবার রাত থেকে পথ অবরোধের ফলে কয়েক হাজার লরি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যায়।  প্রশাসনের আশ্বাসে এই অবরোধ তুলে নেন পাথর ব্যবসায়ীরা। নলহাটি ও মল্লারপুরে চলছে রমরমিয়ে তোলা আদায়। ৯ মাস ধরে বীরভূমের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট) কেটে টাকা তুলছিল ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। সেই সময় পাথর ব্যবসায়ী কিংবা লরি মালিকদের কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে কিছু অসাধু লোকজন প্রশাসনের কাছ থেকে সেই দায়িত্ব কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ।

ওই অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল ডিসিআর ছাপিয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক বেশি টাকা পাথর বোঝাই লরি থেকে আদায় করতে শুরু করেছে। এরই প্রতিবাদে জায়গায় জায়গায় আন্দোলনে নামছেন পাথর ব্যবসায়ী থেকে লরি মালিকেরা। তোলাবাজির প্রতিবাদে তাঁরা মল্লারপুর – কাষ্ঠগড়া রাস্তা অবরোধ করে।

আরও পড়ুন: জনপ্রিয়তাই কি ভাদু শেখের মৃত্যুর জন্য দায়ী! উত্তর খুঁজছে বগটুই গ্রাম

পাথর ব্যবসায়ী বাসারুল শেখ, কৌশিক গোস্বামীরা বলেন, “আগে সরকারি কর্মীরা ডিসিআর কাটতেন। তখন আসল কাগজ হাতে পেতাম। টাকা কম লাগত। এখন টুলু মণ্ডল নামে একজন দায়িত্ব নিয়ে নিজের লোকজন দিয়ে টাকা আদায় করছে। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে যে কাগজ দিচ্ছে সেটাও নকল। আমরা চাই সরকারি ডিসিআর ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকরাই আদায় করুক”।

আরও পড়ুন: রামপুরহাট হত্যালীলাঃ ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছেঃ’ পার্থ

 

আরও পড়ুন: সবলা মেলার সূচনা রামপুরহাটে

ময়ূরেশ্বর ১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শ্রীকান্ত দে বলেন, “ওখানে অফিসাররা বসে আছেন। তবে মাসরা এলাকায় যে গেট রয়েছে সেটা রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের অধীনে পড়ছে। বাকিটা জেলা শাসক কিংবা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলুন।

জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই ডিসিআর গেট ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের অধীনে থাকার কথা। কিন্তু কোথায় আছে সেটা আমার কাছে কোন খবর নেই’।

অভিজিৎবাবু নিজে সরকারি অর্ডারে সাক্ষর করলেও তিনি নিজেই জানেন না কোথায় ডিসিআর গেট রয়েছে। এই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা মিল্টন রসিদ। তিনি বলেন, “প্রশাসনের মদতেই  ডিসিআরের নামে তোলাবাজি চলছে। আমরা প্রশাসনকে বলব অবিলম্বে তোলাবাজি বন্ধ করুন। নয়তো আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব’।

প্রসঙ্গত, বীরভূম জেলায় পাথর শিল্পাঞ্চলে ছয়টি ডিসিআর গেট রয়েছে। তার মধ্যে পাঁচামী, রায়পুর এবং শালবাদরা ডিসিআর গেট দেখভাল করেন টুলু মণ্ডল নামে  সিউড়ির এক নেতা। তার সিউড়ির বাড়িতে সিবিআই – ইডি ইতিমধ্যে তল্লাশি চালিয়েছে। তাকেই ফের তিনটি গেটের তোলার অলিখিত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নলহাটি এবং রাজগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই নেতাকে। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অধীনে গোয়ালা গ্রামে ডিসিআর গেট উল্লেখ করা হয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রমরমিয়ে তোলাবাজি,  পথ অবরোধ পাথর ব্যবসায়ীদের

আপডেট : ৬ জানুয়ারী ২০২৩, শুক্রবার

নিজস্ব প্রতিনিধি, রামপুরহাট:  তোলাবাজির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলো মল্লারপুর পাথর শিল্পাঞ্চল পাথর ব্যবসায়ীদের। বুধবার রাত থেকে পথ অবরোধের ফলে কয়েক হাজার লরি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যায়।  প্রশাসনের আশ্বাসে এই অবরোধ তুলে নেন পাথর ব্যবসায়ীরা। নলহাটি ও মল্লারপুরে চলছে রমরমিয়ে তোলা আদায়। ৯ মাস ধরে বীরভূমের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট) কেটে টাকা তুলছিল ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। সেই সময় পাথর ব্যবসায়ী কিংবা লরি মালিকদের কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে কিছু অসাধু লোকজন প্রশাসনের কাছ থেকে সেই দায়িত্ব কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ।

ওই অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল ডিসিআর ছাপিয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক বেশি টাকা পাথর বোঝাই লরি থেকে আদায় করতে শুরু করেছে। এরই প্রতিবাদে জায়গায় জায়গায় আন্দোলনে নামছেন পাথর ব্যবসায়ী থেকে লরি মালিকেরা। তোলাবাজির প্রতিবাদে তাঁরা মল্লারপুর – কাষ্ঠগড়া রাস্তা অবরোধ করে।

আরও পড়ুন: জনপ্রিয়তাই কি ভাদু শেখের মৃত্যুর জন্য দায়ী! উত্তর খুঁজছে বগটুই গ্রাম

পাথর ব্যবসায়ী বাসারুল শেখ, কৌশিক গোস্বামীরা বলেন, “আগে সরকারি কর্মীরা ডিসিআর কাটতেন। তখন আসল কাগজ হাতে পেতাম। টাকা কম লাগত। এখন টুলু মণ্ডল নামে একজন দায়িত্ব নিয়ে নিজের লোকজন দিয়ে টাকা আদায় করছে। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে যে কাগজ দিচ্ছে সেটাও নকল। আমরা চাই সরকারি ডিসিআর ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকরাই আদায় করুক”।

আরও পড়ুন: রামপুরহাট হত্যালীলাঃ ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছেঃ’ পার্থ

 

আরও পড়ুন: সবলা মেলার সূচনা রামপুরহাটে

ময়ূরেশ্বর ১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শ্রীকান্ত দে বলেন, “ওখানে অফিসাররা বসে আছেন। তবে মাসরা এলাকায় যে গেট রয়েছে সেটা রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের অধীনে পড়ছে। বাকিটা জেলা শাসক কিংবা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলুন।

জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই ডিসিআর গেট ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের অধীনে থাকার কথা। কিন্তু কোথায় আছে সেটা আমার কাছে কোন খবর নেই’।

অভিজিৎবাবু নিজে সরকারি অর্ডারে সাক্ষর করলেও তিনি নিজেই জানেন না কোথায় ডিসিআর গেট রয়েছে। এই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা মিল্টন রসিদ। তিনি বলেন, “প্রশাসনের মদতেই  ডিসিআরের নামে তোলাবাজি চলছে। আমরা প্রশাসনকে বলব অবিলম্বে তোলাবাজি বন্ধ করুন। নয়তো আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব’।

প্রসঙ্গত, বীরভূম জেলায় পাথর শিল্পাঞ্চলে ছয়টি ডিসিআর গেট রয়েছে। তার মধ্যে পাঁচামী, রায়পুর এবং শালবাদরা ডিসিআর গেট দেখভাল করেন টুলু মণ্ডল নামে  সিউড়ির এক নেতা। তার সিউড়ির বাড়িতে সিবিআই – ইডি ইতিমধ্যে তল্লাশি চালিয়েছে। তাকেই ফের তিনটি গেটের তোলার অলিখিত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নলহাটি এবং রাজগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই নেতাকে। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অধীনে গোয়ালা গ্রামে ডিসিআর গেট উল্লেখ করা হয়েছে।