২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই পাকিস্তানি নাবালককে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানে বিদেশ মন্ত্রককে অনুমতি দিল না কর্নাটক হাইকোর্ট

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৮ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার
  • / 24

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দুই পাকিস্তানি নাবালককে ভারতে নাগরিকত্ব প্রদান মামলায় ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রককে অনুমতি দিতে অস্বীকার করল কর্নাটক হাইকোর্ট। দুই নাবালক তাদের ভারতীয় মায়ের সঙ্গে ভারতে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিল কর্নাটক হাইকোর্ট।

মামলা প্রসঙ্গে হাই কোর্টের বিচারপতি এম নাগপ্রসন্ন বলেছেন, আবেদনকারীরা পাকিস্তানের পাসপোর্ট ত্যাগ করলেও সে দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেনি। কারণ শুধু পাসপোর্ট সমপর্ণ নাগরিকত্ব ত্যাগের সমান হতে পারে না।

আরও পড়ুন: জোর করে রুশ সেনায় ভারতীয়রা স্বীকার বিদেশমন্ত্রকের, দেশে ফেরাতে উদ্যোগী ভারত

পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ২১ বছর বয়সের পর তারা সেই দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে পারে। এই পরিপ্রক্ষিতে তারা ভারতের নাগরিকত্ব পেতে পারে না। আবেদনকারী দুই নাবালক রাষ্ট্রহীন নয়, তারা পাকিস্তানের নাগরিক। আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, এই মামলায় সন্তানদের নাগরিকত্ব দেওয়া জন্য বিদেশ মন্ত্রককে কোনও নির্দেশিকা দেওয়া যাবে না। সেইসঙ্গে দুই নাবালককে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ভারতীয় আইনও লঙ্ঘন করা যাবে না।

আরও পড়ুন: রুম সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয়দের উদ্ধারের প্রস্তুতি বিদেশ মন্ত্রকের

উল্লেখ্য, আবেদনকারী দুই নাবালকের বাবা পাকিস্তানি, মা ভারতীয়। নাবালিকা কন্যার বয়স ১৭ ও পুত্রের বয়স ১৪ বছর। দুইজনেরই জন্ম দুবাইতে। বর্তমানে মা আমিনার সঙ্গে দুই সন্তানই বেঙ্গালুরুতে থাকে। সেই সূত্রেই ভারতে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য মায়ের মাধ্যমে দুই নাবালক ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য কর্নাটক হাইকোর্টে আবেদন করে।

আরও পড়ুন: দলিত মহিলাকে প্রকাশ্যে নগ্ন করে মারধর, বরখাস্ত পুলিশ আধিকারিক

আসাদ মালিকের সঙ্গে দুবাইতে ২০০২ সালে শরিয়াহ আইনে আমিনার বিয়ে হয়। দুবাইতেই তাদের দুই সন্তানের জন্ম হয় যথাক্রমে ২০০৪ ও ২০০৮ সালে। দুবাই আদালতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ২০১৪ সালে। বিচ্ছেদের পর দুই সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে বাবা আসাদ মালিক। শিশুরা তাদের মায়ের সঙ্গে দুবাইতে থেকে যায়। পরে মা আমিনা দুবাইতে কোনও কাজ না পেয়ে ২০২১ সালে বেঙ্গালুরুতে তার বাবার বাড়ি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো আমিনা শিশুদের ভারতে আনার জন্য তিনি দুবাইয়ের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুবাইয়ের ভারতীয় কনস্যুলেট জেনারেল মানবিক কারণে ৩১ মে ২০২১-এ একটি অস্থায়ী পাসপোর্ট মঞ্জুর করেন, এই শর্তে যে তারা তাদের পাকিস্তানি পাসপোর্ট সমর্পণ তাদের নাগরিকত্বের মর্যাদা সাপেক্ষে হবে।

দুবাইতে ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের কনস্যুলেট জেনারেল ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট করেছেন যে, দুটি অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুকে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানে তাদের কোনও আপত্তি নেই, তবে পাকিস্তানি নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ২১ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিরা নাগরিকত্ব ত্যাগের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দুই পাকিস্তানি নাবালককে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানে বিদেশ মন্ত্রককে অনুমতি দিল না কর্নাটক হাইকোর্ট

আপডেট : ৮ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দুই পাকিস্তানি নাবালককে ভারতে নাগরিকত্ব প্রদান মামলায় ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রককে অনুমতি দিতে অস্বীকার করল কর্নাটক হাইকোর্ট। দুই নাবালক তাদের ভারতীয় মায়ের সঙ্গে ভারতে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিল কর্নাটক হাইকোর্ট।

মামলা প্রসঙ্গে হাই কোর্টের বিচারপতি এম নাগপ্রসন্ন বলেছেন, আবেদনকারীরা পাকিস্তানের পাসপোর্ট ত্যাগ করলেও সে দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেনি। কারণ শুধু পাসপোর্ট সমপর্ণ নাগরিকত্ব ত্যাগের সমান হতে পারে না।

আরও পড়ুন: জোর করে রুশ সেনায় ভারতীয়রা স্বীকার বিদেশমন্ত্রকের, দেশে ফেরাতে উদ্যোগী ভারত

পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ২১ বছর বয়সের পর তারা সেই দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে পারে। এই পরিপ্রক্ষিতে তারা ভারতের নাগরিকত্ব পেতে পারে না। আবেদনকারী দুই নাবালক রাষ্ট্রহীন নয়, তারা পাকিস্তানের নাগরিক। আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, এই মামলায় সন্তানদের নাগরিকত্ব দেওয়া জন্য বিদেশ মন্ত্রককে কোনও নির্দেশিকা দেওয়া যাবে না। সেইসঙ্গে দুই নাবালককে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ভারতীয় আইনও লঙ্ঘন করা যাবে না।

আরও পড়ুন: রুম সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয়দের উদ্ধারের প্রস্তুতি বিদেশ মন্ত্রকের

উল্লেখ্য, আবেদনকারী দুই নাবালকের বাবা পাকিস্তানি, মা ভারতীয়। নাবালিকা কন্যার বয়স ১৭ ও পুত্রের বয়স ১৪ বছর। দুইজনেরই জন্ম দুবাইতে। বর্তমানে মা আমিনার সঙ্গে দুই সন্তানই বেঙ্গালুরুতে থাকে। সেই সূত্রেই ভারতে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য মায়ের মাধ্যমে দুই নাবালক ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য কর্নাটক হাইকোর্টে আবেদন করে।

আরও পড়ুন: দলিত মহিলাকে প্রকাশ্যে নগ্ন করে মারধর, বরখাস্ত পুলিশ আধিকারিক

আসাদ মালিকের সঙ্গে দুবাইতে ২০০২ সালে শরিয়াহ আইনে আমিনার বিয়ে হয়। দুবাইতেই তাদের দুই সন্তানের জন্ম হয় যথাক্রমে ২০০৪ ও ২০০৮ সালে। দুবাই আদালতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ২০১৪ সালে। বিচ্ছেদের পর দুই সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে বাবা আসাদ মালিক। শিশুরা তাদের মায়ের সঙ্গে দুবাইতে থেকে যায়। পরে মা আমিনা দুবাইতে কোনও কাজ না পেয়ে ২০২১ সালে বেঙ্গালুরুতে তার বাবার বাড়ি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো আমিনা শিশুদের ভারতে আনার জন্য তিনি দুবাইয়ের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুবাইয়ের ভারতীয় কনস্যুলেট জেনারেল মানবিক কারণে ৩১ মে ২০২১-এ একটি অস্থায়ী পাসপোর্ট মঞ্জুর করেন, এই শর্তে যে তারা তাদের পাকিস্তানি পাসপোর্ট সমর্পণ তাদের নাগরিকত্বের মর্যাদা সাপেক্ষে হবে।

দুবাইতে ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের কনস্যুলেট জেনারেল ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট করেছেন যে, দুটি অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুকে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানে তাদের কোনও আপত্তি নেই, তবে পাকিস্তানি নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ২১ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিরা নাগরিকত্ব ত্যাগের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।