২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫ বছর আইনি লড়াই করার পর শিক্ষকতায় চাকরি পেলেন ১৫ জন

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৭ জুন ২০২৩, শনিবার
  • / 37

পারিজাত মোল্লা:  চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি পেলেন ১৫ জন। টানা ৫ বছর আইনি লড়াই করার পর এই জয় বলে জানা গেছে। রেখা রায়, শবনম আরা,  রূপালী বেজ সহ ১৫ জনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, -‘ ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েও তারা চাকরি থেকে বঞ্চিত হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের ইচ্ছাকৃত ভুলের জন্য’। নবম-দশম শ্রেণির এসএলএসটির ইতিহাস বিষয়ে একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েও স্কুল সার্ভিস কমিশন চাকরিপ্রার্থীদের অতিরিক্ত এক নম্বর দেয়নি বলে অভিযোগ। পরে এই ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল যার তদন্ত করছে সিবিআই।

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষায়  ওএমআর শিট প্রকাশ পেতে আসল তথ্য সামনে আসে। ২০২২ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন হাইকোর্টের নির্দেশে ওএম আর সিট প্রকাশ করে থাকে। পরবর্তী সময়ে বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন এই শিক্ষকদের নিয়োগের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত করে এবং সুপারিশপত্র ইস্যু করে। বর্তমানে ১৫ জনকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের স্কুলে যোগদান করানোরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি পর্বে আবেদনকারীদের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী এজলাসে জানান, ‘ স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রশ্ন ছিল, “গান্ধি আরউইন চুক্তি কখন সম্পাদিত হয়?” এ,বি,সি,ডি চারটি উত্তর দেওয়া ছিল। মামলাকারীরা উত্তর দিয়েছিলেন গান্ধি আরউইন চুক্তি সম্পাদিত হয় মার্চ ১৯৩১ সালে। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায় মামলাকারীরা ভুল উত্তর দিয়েছে। পরেও তারা কখনই মানতে চাননি যে মামলাকারীরা সঠিক উত্তর দিয়েছেন’।গত ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েও স্কুল সার্ভিস কমিশনে  চাকরি পাননি ওই ১৫ জন শিক্ষক। স্কুল সার্ভিস কমিশনে বার বার আবেদন করেও লাভ না হওয়ায় তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ লড়াই। গত পাঁচ বছর হাইকোর্টের বিভিন্ন এজলাসে ঘুরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন ওইসব প্রার্থীরা।

আরও পড়ুন: মণিপুরে নিহতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ সহ চাকরির ঘোষণা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের

অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁদেরকে নিয়োগের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত করে এবং সুপারিশপত্র দেয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে ১৫ জনকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয় গত শুক্রবার। বিচারপতি ওই শিক্ষকদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে স্কুলে যোগদানের নির্দেশও দেন।২০১৬ সালের নবম দশম শ্রেণির এসএলএসটি নিয়োগে ব্যাপক হারে দুর্নীতি হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ৫ বছরে ৫০টি জেট দুর্ঘটনার কবলে, ৫৫ জন সেনার প্রাণহানি

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই দুর্নীতি মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। শুধু তাই নয়, যে ওএমআর শিট নিয়ে কারচুপি করা হয়েছিল সেটাও সামনে আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। আর সেই ওএমআর শিট সামনে আসতেই অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে।নবম দশম শ্রেণির এসএলএসটির ইতিহাস বিষয়ে একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েও স্কুল সার্ভিস কমিশন চাকরিপ্রার্থীদের অতিরিক্ত এক নম্বর দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়। গত বছর ডিসেম্বরে স্কুল সার্ভিস কমিশন হাইকোর্টের নির্দেশে ওএমআর সিট প্রকাশ করে। আবেদনকারীরা দেখতে পান যে তাঁরা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরে তাঁদের নম্বর দেওয়া হয়নি। কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মামলাকারীরা অতিরিক্ত এক নম্বর পাওয়ার যোগ্য এবং ওই এক নম্বর বাড়িয়ে তাদের নিয়োগ পত্র দিতে হবে। এরপর গত শুক্রবার তাঁরা চাকরির নিয়োগপত্র পেলেন।

আরও পড়ুন: পাঁচ বছরে কমবে দেড় কোটি চাকরি

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৫ বছর আইনি লড়াই করার পর শিক্ষকতায় চাকরি পেলেন ১৫ জন

আপডেট : ১৭ জুন ২০২৩, শনিবার

পারিজাত মোল্লা:  চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি পেলেন ১৫ জন। টানা ৫ বছর আইনি লড়াই করার পর এই জয় বলে জানা গেছে। রেখা রায়, শবনম আরা,  রূপালী বেজ সহ ১৫ জনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, -‘ ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েও তারা চাকরি থেকে বঞ্চিত হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের ইচ্ছাকৃত ভুলের জন্য’। নবম-দশম শ্রেণির এসএলএসটির ইতিহাস বিষয়ে একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েও স্কুল সার্ভিস কমিশন চাকরিপ্রার্থীদের অতিরিক্ত এক নম্বর দেয়নি বলে অভিযোগ। পরে এই ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল যার তদন্ত করছে সিবিআই।

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষায়  ওএমআর শিট প্রকাশ পেতে আসল তথ্য সামনে আসে। ২০২২ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন হাইকোর্টের নির্দেশে ওএম আর সিট প্রকাশ করে থাকে। পরবর্তী সময়ে বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন এই শিক্ষকদের নিয়োগের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত করে এবং সুপারিশপত্র ইস্যু করে। বর্তমানে ১৫ জনকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের স্কুলে যোগদান করানোরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি পর্বে আবেদনকারীদের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী এজলাসে জানান, ‘ স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রশ্ন ছিল, “গান্ধি আরউইন চুক্তি কখন সম্পাদিত হয়?” এ,বি,সি,ডি চারটি উত্তর দেওয়া ছিল। মামলাকারীরা উত্তর দিয়েছিলেন গান্ধি আরউইন চুক্তি সম্পাদিত হয় মার্চ ১৯৩১ সালে। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায় মামলাকারীরা ভুল উত্তর দিয়েছে। পরেও তারা কখনই মানতে চাননি যে মামলাকারীরা সঠিক উত্তর দিয়েছেন’।গত ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েও স্কুল সার্ভিস কমিশনে  চাকরি পাননি ওই ১৫ জন শিক্ষক। স্কুল সার্ভিস কমিশনে বার বার আবেদন করেও লাভ না হওয়ায় তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ লড়াই। গত পাঁচ বছর হাইকোর্টের বিভিন্ন এজলাসে ঘুরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন ওইসব প্রার্থীরা।

আরও পড়ুন: মণিপুরে নিহতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ সহ চাকরির ঘোষণা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের

অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁদেরকে নিয়োগের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত করে এবং সুপারিশপত্র দেয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে ১৫ জনকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয় গত শুক্রবার। বিচারপতি ওই শিক্ষকদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে স্কুলে যোগদানের নির্দেশও দেন।২০১৬ সালের নবম দশম শ্রেণির এসএলএসটি নিয়োগে ব্যাপক হারে দুর্নীতি হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ৫ বছরে ৫০টি জেট দুর্ঘটনার কবলে, ৫৫ জন সেনার প্রাণহানি

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই দুর্নীতি মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। শুধু তাই নয়, যে ওএমআর শিট নিয়ে কারচুপি করা হয়েছিল সেটাও সামনে আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। আর সেই ওএমআর শিট সামনে আসতেই অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে।নবম দশম শ্রেণির এসএলএসটির ইতিহাস বিষয়ে একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েও স্কুল সার্ভিস কমিশন চাকরিপ্রার্থীদের অতিরিক্ত এক নম্বর দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়। গত বছর ডিসেম্বরে স্কুল সার্ভিস কমিশন হাইকোর্টের নির্দেশে ওএমআর সিট প্রকাশ করে। আবেদনকারীরা দেখতে পান যে তাঁরা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরে তাঁদের নম্বর দেওয়া হয়নি। কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মামলাকারীরা অতিরিক্ত এক নম্বর পাওয়ার যোগ্য এবং ওই এক নম্বর বাড়িয়ে তাদের নিয়োগ পত্র দিতে হবে। এরপর গত শুক্রবার তাঁরা চাকরির নিয়োগপত্র পেলেন।

আরও পড়ুন: পাঁচ বছরে কমবে দেড় কোটি চাকরি