৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লকডাউনে দলিত-আদিবাসী পড়ুয়াদের শিক্ষার ঘরে তালা: নয়া সমীক্ষা

  • সুস্মিতা
  • আপডেট : ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার
  • 84

নয়াদিল্লি: ঝাড়খন্ডের আদিবাসী গ্রাম ডাম্বির পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া চাঁদনি হিন্দিতে একটি বাক্যও পড়তে পারে না। এখন তাকে জটিল জটিল বাক্যে ভরা মোটা ইংরেজি বই পড়তে হবে, অথচ এই ভাষা সে এক বর্ণও বোঝে না। লকডাউনের আগে ভাল ফল করছিল সে স্কুলে। কিন্তু অনলাইন শিক্ষা ও টিউশনের অভাবে এতদিন সে যা শিখেছিল তা ভুলতে বসেছে। চাঁদনি একা নয়। স্বেচ্ছাসেবী গবেষক সংগঠন রোড স্কলারজের সমীক্ষা বলছে, গ্রামের ৩৬ জন শিশুর মধ্যে ৩০ জনই একটি শব্দও পড়তে পারে না। ১৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১৪০০ পরিবারকে নিয়ে তারা সমীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য পেয়েছে। উদ্বিগ্ন বহু অভিভাবকই মনে করছেন যে, তাঁদের সন্তানরা সাক্ষরতায় পিছিয়ে পড়ছে।
এই সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, ৯৭ শতাংশ অভিভাবকই চান যে স্কুলগুলি পুনরায় খুলে যাক। ৬০ শতাংশ দলিত-আদিবাসী পড়ুয়ারা সরকারি স্কুলে যায়। এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল গ্রাম ও বস্তি এলাকাতে। সোমবার প্রকাশিত এই রিপোর্ট প্রস্তুত করেছেন আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক ঋতিকা খেরা, অর্থনীতিবিদ জাঁ দ্রেজ ও গবেষক বিপুল পাইকরা। তাঁদের সহযোগিতা করেছেন প্রায় ১০০ স্বেচ্ছাসেবী। এই সমীক্ষায় যে ছবি উঠে এসেছে তা খুবই হতাশাজনক। বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলে ৮ শতাংশ শিশু অনলাইন ক্লাসে যোগ দিয়েছে এবং কেবলমাত্র আট শতাংশ অভিভাবক মনে করেন যে, অনলাইন শিক্ষা নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা তাঁদের রয়েছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করা শিশুদের প্রায় অর্ধেকই কয়েকটি শব্দের বেশি পড়তেই পারে না।
ডাম্বির বাসিন্দা নেমি দেবী জানান, পড়ুয়ারা তাদের বাবা-মায়ের নামও বানান করতে জানত। এখন তারা সে-সব ভুলে গেছে। শিশুদের কাছ থেকে শিক্ষা কেড়ে নিয়ে গেছে লকডাউন। তিনি ভয় পাচ্ছেন যে, এদেরও অবস্থা হবে তাঁদের মতো। অশিক্ষিত হয়ে থেকে যাবে, ভাল কোনও চাকরি পাবে না। অসম, বিহার, ঝাড়খন্ড ও উত্তরপ্রদেশ সহ বহু রাজ্যে লকডাউনের সময় অফলাইনে পড়ুয়াদের শিক্ষা দেওয়ার কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। এমনই তথ্য উঠে এসেছে এই সমীক্ষায়। এর আগে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ইউনিসেফ ও ইউনেসকো।

ট্যাগ :
সর্বধিক পাঠিত

বাংলাতেই মাইক্রো অবজারভার নিয়োগ কেনো? কমিশনকে প্রশ্ন অভিষেকের

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

লকডাউনে দলিত-আদিবাসী পড়ুয়াদের শিক্ষার ঘরে তালা: নয়া সমীক্ষা

আপডেট : ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার

নয়াদিল্লি: ঝাড়খন্ডের আদিবাসী গ্রাম ডাম্বির পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া চাঁদনি হিন্দিতে একটি বাক্যও পড়তে পারে না। এখন তাকে জটিল জটিল বাক্যে ভরা মোটা ইংরেজি বই পড়তে হবে, অথচ এই ভাষা সে এক বর্ণও বোঝে না। লকডাউনের আগে ভাল ফল করছিল সে স্কুলে। কিন্তু অনলাইন শিক্ষা ও টিউশনের অভাবে এতদিন সে যা শিখেছিল তা ভুলতে বসেছে। চাঁদনি একা নয়। স্বেচ্ছাসেবী গবেষক সংগঠন রোড স্কলারজের সমীক্ষা বলছে, গ্রামের ৩৬ জন শিশুর মধ্যে ৩০ জনই একটি শব্দও পড়তে পারে না। ১৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১৪০০ পরিবারকে নিয়ে তারা সমীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য পেয়েছে। উদ্বিগ্ন বহু অভিভাবকই মনে করছেন যে, তাঁদের সন্তানরা সাক্ষরতায় পিছিয়ে পড়ছে।
এই সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, ৯৭ শতাংশ অভিভাবকই চান যে স্কুলগুলি পুনরায় খুলে যাক। ৬০ শতাংশ দলিত-আদিবাসী পড়ুয়ারা সরকারি স্কুলে যায়। এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল গ্রাম ও বস্তি এলাকাতে। সোমবার প্রকাশিত এই রিপোর্ট প্রস্তুত করেছেন আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক ঋতিকা খেরা, অর্থনীতিবিদ জাঁ দ্রেজ ও গবেষক বিপুল পাইকরা। তাঁদের সহযোগিতা করেছেন প্রায় ১০০ স্বেচ্ছাসেবী। এই সমীক্ষায় যে ছবি উঠে এসেছে তা খুবই হতাশাজনক। বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলে ৮ শতাংশ শিশু অনলাইন ক্লাসে যোগ দিয়েছে এবং কেবলমাত্র আট শতাংশ অভিভাবক মনে করেন যে, অনলাইন শিক্ষা নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা তাঁদের রয়েছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করা শিশুদের প্রায় অর্ধেকই কয়েকটি শব্দের বেশি পড়তেই পারে না।
ডাম্বির বাসিন্দা নেমি দেবী জানান, পড়ুয়ারা তাদের বাবা-মায়ের নামও বানান করতে জানত। এখন তারা সে-সব ভুলে গেছে। শিশুদের কাছ থেকে শিক্ষা কেড়ে নিয়ে গেছে লকডাউন। তিনি ভয় পাচ্ছেন যে, এদেরও অবস্থা হবে তাঁদের মতো। অশিক্ষিত হয়ে থেকে যাবে, ভাল কোনও চাকরি পাবে না। অসম, বিহার, ঝাড়খন্ড ও উত্তরপ্রদেশ সহ বহু রাজ্যে লকডাউনের সময় অফলাইনে পড়ুয়াদের শিক্ষা দেওয়ার কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। এমনই তথ্য উঠে এসেছে এই সমীক্ষায়। এর আগে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ইউনিসেফ ও ইউনেসকো।