৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, বাংলাদেশে রফতানি কমিয়ে দিল আদানি গোষ্ঠী

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ১ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার
  • / 13

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ বকেয়া বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ায় আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত বাংলাদেশের দুটি পাওয়ার ইউনিটের একটি বন্ধ করে দিল। এছাড়াও বাংলাদেশের ৮০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট বন্ধ করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে। এই বিদ্যুতকেন্দ্র থেকে এরআগে প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হত।

আদানির এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ মুশকিলে পড়বে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। জানা গেছে, বাংলাদেশের স্থানীয় পাওয়ার প্ল্যান্টগুলির মধ্যে এস আলম সমর্থিত বানসখালী প্ল্যান্ট এবং বাংলাদেশ ভারত যৌথ উদ্যোগের রামপাল প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। যার ফলে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।

উল্লেখ্য, এরপূর্বে ঝাড়খন্ডে স্থাপিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ বন্ধ করার কথা জানিয়েছিল আদানি। কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকার  বকেয়া বিলের বিতর্ক। আদানি পাওয়ার(ঝাড়খন্ড) লিমিটেডের প্রতিনিধি ও যৌথ সমন্বয় কমিটির সভাপতি এম আর কৃষ্ণ রাও এক চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিসি) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭০ দশমিক ০৩ মিলিয়ন ডলারের জন্য প্রয়োজনীয় এলসি দেয়নি এবং ৮৪৬ মিলিয়ন ডলারের(১০ হাজার ০৮৬ কোটি টাকা) বকেয়া পরিমাণও মেটায়নি। এতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে আদানি পাওয়ার(ঝাড়খন্ড) লিমিটেডের। সময় মতো এলসি না দেওয়ায় এবং বকেয়া পরিমাণ পরিশোধ না করার ফলে  পাওয়ার পচেজ এগ্রিমেন্টের আওতায় ‘ মেটিরিয়াল ডিফল্ট’ ঘটেছে, যা আদানি পাওয়ারের সরবরাহ বজায় রাখতে বাধা দিচ্ছে।

একইসঙ্গে চিঠিতে তিনি আরও বলেন, বহু বকেয়া পরিশোধ ও এলসির অভাবে আমরা কয়লা সরবরাহকারী এবং অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কন্ট্রাক্টরদের জন্য কাজের মূলধন নিরাপদে রাখতে পারছি না, আমাদের ঋণদাতারাও সহায়তা প্রত্যাহার করছে।

আদানি গ্রুপের এই চিঠিতে বিপিডিসি-কে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই ডিফল্টগুলি সমাধানের আবেদন জানিয়েছিল। অন্যথায় ৩১ অক্টোবর থেকে সরবরাহ বন্ধ করার ব্যবস্থা নেবে। তবে গত বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এই কারণে আদানি কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎসরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। যদিও দেশে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, বাংলাদেশে রফতানি কমিয়ে দিল আদানি গোষ্ঠী

আপডেট : ১ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ বকেয়া বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ায় আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত বাংলাদেশের দুটি পাওয়ার ইউনিটের একটি বন্ধ করে দিল। এছাড়াও বাংলাদেশের ৮০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট বন্ধ করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে। এই বিদ্যুতকেন্দ্র থেকে এরআগে প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হত।

আদানির এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ মুশকিলে পড়বে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। জানা গেছে, বাংলাদেশের স্থানীয় পাওয়ার প্ল্যান্টগুলির মধ্যে এস আলম সমর্থিত বানসখালী প্ল্যান্ট এবং বাংলাদেশ ভারত যৌথ উদ্যোগের রামপাল প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। যার ফলে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।

উল্লেখ্য, এরপূর্বে ঝাড়খন্ডে স্থাপিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ বন্ধ করার কথা জানিয়েছিল আদানি। কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকার  বকেয়া বিলের বিতর্ক। আদানি পাওয়ার(ঝাড়খন্ড) লিমিটেডের প্রতিনিধি ও যৌথ সমন্বয় কমিটির সভাপতি এম আর কৃষ্ণ রাও এক চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিসি) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭০ দশমিক ০৩ মিলিয়ন ডলারের জন্য প্রয়োজনীয় এলসি দেয়নি এবং ৮৪৬ মিলিয়ন ডলারের(১০ হাজার ০৮৬ কোটি টাকা) বকেয়া পরিমাণও মেটায়নি। এতে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে আদানি পাওয়ার(ঝাড়খন্ড) লিমিটেডের। সময় মতো এলসি না দেওয়ায় এবং বকেয়া পরিমাণ পরিশোধ না করার ফলে  পাওয়ার পচেজ এগ্রিমেন্টের আওতায় ‘ মেটিরিয়াল ডিফল্ট’ ঘটেছে, যা আদানি পাওয়ারের সরবরাহ বজায় রাখতে বাধা দিচ্ছে।

একইসঙ্গে চিঠিতে তিনি আরও বলেন, বহু বকেয়া পরিশোধ ও এলসির অভাবে আমরা কয়লা সরবরাহকারী এবং অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কন্ট্রাক্টরদের জন্য কাজের মূলধন নিরাপদে রাখতে পারছি না, আমাদের ঋণদাতারাও সহায়তা প্রত্যাহার করছে।

আদানি গ্রুপের এই চিঠিতে বিপিডিসি-কে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই ডিফল্টগুলি সমাধানের আবেদন জানিয়েছিল। অন্যথায় ৩১ অক্টোবর থেকে সরবরাহ বন্ধ করার ব্যবস্থা নেবে। তবে গত বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এই কারণে আদানি কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎসরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। যদিও দেশে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট।