১৫ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা: তদন্তে নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আধিকারিকরা

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, বুধবার
  • / 147

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গুজরাতের আহমেদাবাদে সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত জোরকদমে চলছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এখন বিমান সংস্থার কর্মীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন। বিমানবন্দরে কর্তব্যরত গ্রাউন্ড স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে নাশকতার সম্ভাবনাও তাঁরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

তদন্তকারী সূত্রের দাবি, দুর্ঘটনার শিকার হওয়া এআই-১৭১ বিমানটি উড্ডয়নের আগে যাঁরা তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। যাঁরা উড্ডয়নের সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তকারীরা ওই মোবাইলগুলি পরীক্ষা করে দেখতে চান, এমনটাই উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।

গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী ওই বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনই মারা যান। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীও, যিনি সেই বিমানে যাত্রী হিসেবে ছিলেন।

আরও পড়ুন: অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ এখনও আতঙ্কে

বিভিন্ন সংস্থা দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে একযোগে কাজ করছে। ‘এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ (এএআইবি) মূল তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে। তাদের সহায়তা করছে গুজরাত পুলিশ, ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (এএআই), এবং ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)। যেহেতু এই ড্রিমলাইনার বিমানটি আমেরিকায় নির্মিত, তাই আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুযায়ী তদন্ত চালাচ্ছে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড’ (এনটিএসবি)-ও। ইন্টারপোলের নিয়ম মেনেই বোয়িং সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে পৃথকভাবে তদন্তে নেমেছে তারা।

আরও পড়ুন: জ্বালানির সুইচে ত্রুটি: সাত বছর আগেই সতর্ক করেছিল এফএএ, মানেনি এয়ার ইন্ডিয়া

তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত এক সূত্র ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-কে জানিয়েছে, “যাঁরা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন, তাঁদের কয়েক জনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সেগুলি ভালোভাবে পরীক্ষা করা হবে।” একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ফলে, তদন্তকারী সংস্থাগুলি আপাতত নাশকতার সম্ভাবনা একেবারে খারিজ করছে না।

আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় শনাক্ত ৮৭ জন, পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল ৪৭ দেহ

এদিকে, ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (DFDR) ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR) উদ্ধার করা হয়েছে। বিমান দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে এই দুটি যন্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ককপিটে কী ধরনের শব্দ হয়েছিল, পাইলট কী বলেছিলেন, কোনও সতর্কতা সিগন্যাল বাজছিল কি না, সুইচ চাপার শব্দ কিংবা ইঞ্জিনের আওয়াজ—সবই রেকর্ড হয় CVR-এ। অন্যদিকে, বিমানের গতি, উচ্চতা ও অন্যান্য কারিগরি পরিসংখ্যান থাকে DFDR-এ। তদন্তকারীরা আশা করছেন, এই তথ্যগুলো থেকে দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা: তদন্তে নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আধিকারিকরা

আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গুজরাতের আহমেদাবাদে সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত জোরকদমে চলছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এখন বিমান সংস্থার কর্মীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন। বিমানবন্দরে কর্তব্যরত গ্রাউন্ড স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে নাশকতার সম্ভাবনাও তাঁরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

তদন্তকারী সূত্রের দাবি, দুর্ঘটনার শিকার হওয়া এআই-১৭১ বিমানটি উড্ডয়নের আগে যাঁরা তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। যাঁরা উড্ডয়নের সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তকারীরা ওই মোবাইলগুলি পরীক্ষা করে দেখতে চান, এমনটাই উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।

গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী ওই বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনই মারা যান। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীও, যিনি সেই বিমানে যাত্রী হিসেবে ছিলেন।

আরও পড়ুন: অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার একমাত্র জীবিত যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ এখনও আতঙ্কে

বিভিন্ন সংস্থা দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে একযোগে কাজ করছে। ‘এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ (এএআইবি) মূল তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে। তাদের সহায়তা করছে গুজরাত পুলিশ, ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (এএআই), এবং ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)। যেহেতু এই ড্রিমলাইনার বিমানটি আমেরিকায় নির্মিত, তাই আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুযায়ী তদন্ত চালাচ্ছে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড’ (এনটিএসবি)-ও। ইন্টারপোলের নিয়ম মেনেই বোয়িং সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে পৃথকভাবে তদন্তে নেমেছে তারা।

আরও পড়ুন: জ্বালানির সুইচে ত্রুটি: সাত বছর আগেই সতর্ক করেছিল এফএএ, মানেনি এয়ার ইন্ডিয়া

তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত এক সূত্র ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-কে জানিয়েছে, “যাঁরা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন, তাঁদের কয়েক জনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সেগুলি ভালোভাবে পরীক্ষা করা হবে।” একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ফলে, তদন্তকারী সংস্থাগুলি আপাতত নাশকতার সম্ভাবনা একেবারে খারিজ করছে না।

আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় শনাক্ত ৮৭ জন, পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল ৪৭ দেহ

এদিকে, ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (DFDR) ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR) উদ্ধার করা হয়েছে। বিমান দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে এই দুটি যন্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ককপিটে কী ধরনের শব্দ হয়েছিল, পাইলট কী বলেছিলেন, কোনও সতর্কতা সিগন্যাল বাজছিল কি না, সুইচ চাপার শব্দ কিংবা ইঞ্জিনের আওয়াজ—সবই রেকর্ড হয় CVR-এ। অন্যদিকে, বিমানের গতি, উচ্চতা ও অন্যান্য কারিগরি পরিসংখ্যান থাকে DFDR-এ। তদন্তকারীরা আশা করছেন, এই তথ্যগুলো থেকে দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হবে।