২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিশনকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার মডেল আল-আমীন মিশন

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৩ মে ২০২৪, সোমবার
  • / 38

বক্তব্য রাখছেন আহমদ হাসান ইমরান। রয়েছেন মুহাম্মদ শাহ আলম, এনাউর রহমান, এম নুরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর মল্লিক প্রমুখ (ছবি-সন্দীপ সাহা)

পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের সংখ্যালঘুদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে আল-আমীন মিশন। প্রায় চার দশক ধরে এই মিশনের উদ্যোগে বহু ছাত্র-ছাত্রী ডাক্তারির পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল সার্ভিস বা শিক্ষকতার পেশায় সফলতার ছাপ রেখেছেন। এইসব কৃতিদের নানাভাবে সম্মানিত করে থাকে মিশন কর্তৃপক্ষ। তেমনই একটি অনুষ্ঠান ছিল রবিবার। এ দিন বিকালে আল-আমীন মিশনের নিউ টাউন-এর অফিসে একটি বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালে ডাক্তারিতে ভর্তির পরীক্ষা নিট’ (ইউজি) সফলভাবে উত্তীর্ণদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

মিশনের বিভিন্ন শাখার প্রায় ৮৫জন পড়ুয়াকে সংবর্ধিত করা হয়। এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম-এর সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। তিনি ছাড়াও ছিলেন সমাজসেবী মুহাম্মদ শাহ আলম, সরকারি আমলা মোদাসের  মোল্লা, জাহাঙ্গীর মল্লিক, লেখক আবু সালেহ মুহাম্মদ রেজওয়ানুল করিম, মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম, ডা. হাম্মাদুর রহমান, মিশনের সহ-সভাপতি হাসিব আলম, মিশনের হাফিজুর রহমান, দিলদার হোসেন, জাহির আব্বাস, সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিক শাকিল আহমেদ, কাজী আধুল বাশির, মারুফ আজম, ডা. মইনুদ্দিন, সংখ্যালঘু কমিশনের সেক্রেটারি এনাউর রহমান, মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।

অন্যদিকে প্রধান অতিথি আহমদ হাসান ইমরান বলেন, আল-আমীন মিশন সংখ্যালঘু সমাজের কাছে একটি মডেল হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পেরেছে। এই মিশনের বদৌলতে সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে। ইমরানের কথায়, আল-আমীনের পর একই ধরনের বহু মিশন রাজ্যে তৈরি হয়েছে। তিনি মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলামের পথচলা এবং দীর্ঘদিনের ঘাত-প্রতিঘাতের কথাও সংক্ষেপে তুলে ধরেন।

ইমরান বলেন, নুরুল সাহেবের সংগ্রামকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। তিনি বহু কষ্ট করে মিশনকে বর্তমানের এই রূপ দিয়েছেন। তিনি আশা ব্যক্ত করেন, আল-আমীন মিশন মেয়েদের শিক্ষার দিকে আরও বেশি জোর দেবে। বর্তমানে ৪০ শতাংশ মেয়ে পড়াশোনা করছে এই সংখ্যাটা যাতে বৃদ্ধি পায় সেদিকে জোর দেওয়ার কথা বলেন ইমরান। একইসঙ্গে তিনি ইসলামে নারীর মর্যাদার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, পবিত্র হজের সময় শাফা ও  মারওয়া পাহাড়ে সাতপাক ঘোরা হচ্ছে একজন নারীর সুন্নাত। এভাবে ইসলামে তিনি মা হাজেরা রা.খাদিজা রা.-এর গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন।

এ দিন ২০২৩ সালের নিট-ইউজি উত্তীর্ণদের সংবর্ধিত করা হয়। আগামীতে বিসিএস বা ভেটনারির সফলদের সংবর্ধনার ব্যবস্থা করবে মিশন বলে জানান এম নুরুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, নিউটাউন ক্যাম্পাসে নিট-ইউজি ও পিজির পাশাপাশি ইউপিএসসি, বিসিএস ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিং দেওয়া হবে। এখানে হস্টেল, প্রেয়ার হল ও অন্যান্য অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকবে বলেও জানান তিনি।

এ দিনের অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ শাহ আলম মিশনকে নারী শিক্ষার উপর আরও জোর দেওয়ার কথা বলেন। তিনি ইসলামে নারীর মর্যাদা প্রসঙ্গেও কুরআন ও হাদিস থেকে বিভিন্ন বিষয় উদ্ধৃত করেন। একজন মুসলিম হিসাবে কিভাবে আগামীতে চলতে হবে সে দিকেও আলোকপাত করেন মুহাম্মদ শাহ আলম। ডাক্তার হাম্মাদুর রহমান ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু এমবিবিএস পাস করলেই হবে না, উচ্চতর শিক্ষা  গ্রহণ করতে হবে। স্পেশালাইজেশনে দিকে এগোতে হবে। সামাজিক অবক্ষয় রুখতে সবাইকে আল্লাহ্র  উপর বিশ্বাস ও ইসলামের উপর অটল থাকার পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর কথায়, নানা প্রলোভন সামনে আসবে সেই ফাঁদে পা দিলে চলবে না। সবাইকে  ঈমান-আমলের দিকে নজর দিতে হবে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মিশনকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার মডেল আল-আমীন মিশন

আপডেট : ১৩ মে ২০২৪, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের সংখ্যালঘুদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে আল-আমীন মিশন। প্রায় চার দশক ধরে এই মিশনের উদ্যোগে বহু ছাত্র-ছাত্রী ডাক্তারির পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল সার্ভিস বা শিক্ষকতার পেশায় সফলতার ছাপ রেখেছেন। এইসব কৃতিদের নানাভাবে সম্মানিত করে থাকে মিশন কর্তৃপক্ষ। তেমনই একটি অনুষ্ঠান ছিল রবিবার। এ দিন বিকালে আল-আমীন মিশনের নিউ টাউন-এর অফিসে একটি বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালে ডাক্তারিতে ভর্তির পরীক্ষা নিট’ (ইউজি) সফলভাবে উত্তীর্ণদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

মিশনের বিভিন্ন শাখার প্রায় ৮৫জন পড়ুয়াকে সংবর্ধিত করা হয়। এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম-এর সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। তিনি ছাড়াও ছিলেন সমাজসেবী মুহাম্মদ শাহ আলম, সরকারি আমলা মোদাসের  মোল্লা, জাহাঙ্গীর মল্লিক, লেখক আবু সালেহ মুহাম্মদ রেজওয়ানুল করিম, মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম, ডা. হাম্মাদুর রহমান, মিশনের সহ-সভাপতি হাসিব আলম, মিশনের হাফিজুর রহমান, দিলদার হোসেন, জাহির আব্বাস, সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিক শাকিল আহমেদ, কাজী আধুল বাশির, মারুফ আজম, ডা. মইনুদ্দিন, সংখ্যালঘু কমিশনের সেক্রেটারি এনাউর রহমান, মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।

অন্যদিকে প্রধান অতিথি আহমদ হাসান ইমরান বলেন, আল-আমীন মিশন সংখ্যালঘু সমাজের কাছে একটি মডেল হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পেরেছে। এই মিশনের বদৌলতে সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে। ইমরানের কথায়, আল-আমীনের পর একই ধরনের বহু মিশন রাজ্যে তৈরি হয়েছে। তিনি মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলামের পথচলা এবং দীর্ঘদিনের ঘাত-প্রতিঘাতের কথাও সংক্ষেপে তুলে ধরেন।

ইমরান বলেন, নুরুল সাহেবের সংগ্রামকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। তিনি বহু কষ্ট করে মিশনকে বর্তমানের এই রূপ দিয়েছেন। তিনি আশা ব্যক্ত করেন, আল-আমীন মিশন মেয়েদের শিক্ষার দিকে আরও বেশি জোর দেবে। বর্তমানে ৪০ শতাংশ মেয়ে পড়াশোনা করছে এই সংখ্যাটা যাতে বৃদ্ধি পায় সেদিকে জোর দেওয়ার কথা বলেন ইমরান। একইসঙ্গে তিনি ইসলামে নারীর মর্যাদার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, পবিত্র হজের সময় শাফা ও  মারওয়া পাহাড়ে সাতপাক ঘোরা হচ্ছে একজন নারীর সুন্নাত। এভাবে ইসলামে তিনি মা হাজেরা রা.খাদিজা রা.-এর গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন।

এ দিন ২০২৩ সালের নিট-ইউজি উত্তীর্ণদের সংবর্ধিত করা হয়। আগামীতে বিসিএস বা ভেটনারির সফলদের সংবর্ধনার ব্যবস্থা করবে মিশন বলে জানান এম নুরুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, নিউটাউন ক্যাম্পাসে নিট-ইউজি ও পিজির পাশাপাশি ইউপিএসসি, বিসিএস ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিং দেওয়া হবে। এখানে হস্টেল, প্রেয়ার হল ও অন্যান্য অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকবে বলেও জানান তিনি।

এ দিনের অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ শাহ আলম মিশনকে নারী শিক্ষার উপর আরও জোর দেওয়ার কথা বলেন। তিনি ইসলামে নারীর মর্যাদা প্রসঙ্গেও কুরআন ও হাদিস থেকে বিভিন্ন বিষয় উদ্ধৃত করেন। একজন মুসলিম হিসাবে কিভাবে আগামীতে চলতে হবে সে দিকেও আলোকপাত করেন মুহাম্মদ শাহ আলম। ডাক্তার হাম্মাদুর রহমান ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু এমবিবিএস পাস করলেই হবে না, উচ্চতর শিক্ষা  গ্রহণ করতে হবে। স্পেশালাইজেশনে দিকে এগোতে হবে। সামাজিক অবক্ষয় রুখতে সবাইকে আল্লাহ্র  উপর বিশ্বাস ও ইসলামের উপর অটল থাকার পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর কথায়, নানা প্রলোভন সামনে আসবে সেই ফাঁদে পা দিলে চলবে না। সবাইকে  ঈমান-আমলের দিকে নজর দিতে হবে।