২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়: সংখ্যার বিচারে উচ্চ শিক্ষায় এসসি, এসটি, ওবিসিদেরও পিছনে মুসলিম পড়ুয়ারা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, সোমবার
  • / 14

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা থাকবে কি না তা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা একাধিক যুক্তি দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সংখ্যালঘু তকমা থাকা উচিত নয়। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা করে কেন্দ্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে বর্তমানে এটি দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে কেবল সংখ্যালঘু মর্যাদায় বেঁধে রাখা ঠিক নয়।

 

অনেকেই মনে করেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো মুসলিম পড়ুয়ারাই পড়াশোনা করেন। কিন্তু সে ধারণা সত্য নয়। সেন্টার ফর স্টাডিয়ান রিসার্চ (সিএসআর) অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে এখানে একটি সমীক্ষা চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল উচ্চ শিক্ষায় এই বিশ্ববিদ্যালয় মুসলিম পড়ুয়াদের প্রতিনিধিত্ব কতখানি।

 

তাতে যে রিপোর্ট সামনে এসেছে তা বিস্ময়কর। দেখা গেছে নাম মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হলেও উচ্চ শিক্ষায় এখানে হিন্দু পড়ুয়ারা এখানে মুসলিম পড়ুয়াদের থেকে সংখ্যার বিচারে এগিয়ে। এমনও দেখা গিয়েছে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তপশীলি জাতি ও উপজাতি এবং ওবিসি পড়ুয়ারা মুসলিম পড়ুয়াদের থেকে সংখ্যায় বেশি। গত ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে উচ্চ শিক্ষায় পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়েছে ১৮.১ শতাংশ। তাতে দেখা গেছে উচ্চ শিক্ষায় এসসি পড়ুয়াদের হার বেড়েছে ২৫.৪৩ শতাংশ। এসটি পড়ুয়া বেড়েছে ৪১.৬ শতাংশ এবং ওবিসি পড়ুয়া বেড়েছে ২৭.৩ শতাংশ। যেখানে মুসলিম পড়ুয়ার সংখ্যা ১৮.১ শতাংশ। মুসলিম ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষায় প্রতিনিধিত্ব এসসিএসটি ও ওবিসিদের তুলনায় সংখ্যায় কমেছে।

 

উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে মুসলিম পড়ুয়ারা যে প্রবল প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে তা ফের আর একবার সামনে এল। যখন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা থাকা নিয়ে মামলার শুনানি হচ্ছে তখন এমন রিপোর্ট নিঃসন্দেহে  উদ্বেগজনক।

 

মুসলিম পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলির গুণগত মান নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। দেশজুড়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের জন্য বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাদের গুণগত মান সন্তোষজনক নয়। সেখানে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নিজের গৌরবজনক গুণগতমান প্রমাণ করেছে। অথচ এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিন দিন উচ্চ শিক্ষায় কমছে মুসলিম পড়ুয়াদের সংখ্যা। যাকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বহু শিক্ষাবিদ।

Tag :

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়: সংখ্যার বিচারে উচ্চ শিক্ষায় এসসি, এসটি, ওবিসিদেরও পিছনে মুসলিম পড়ুয়ারা

আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, সোমবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা থাকবে কি না তা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা একাধিক যুক্তি দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সংখ্যালঘু তকমা থাকা উচিত নয়। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা করে কেন্দ্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে বর্তমানে এটি দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে কেবল সংখ্যালঘু মর্যাদায় বেঁধে রাখা ঠিক নয়।

 

অনেকেই মনে করেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো মুসলিম পড়ুয়ারাই পড়াশোনা করেন। কিন্তু সে ধারণা সত্য নয়। সেন্টার ফর স্টাডিয়ান রিসার্চ (সিএসআর) অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে এখানে একটি সমীক্ষা চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল উচ্চ শিক্ষায় এই বিশ্ববিদ্যালয় মুসলিম পড়ুয়াদের প্রতিনিধিত্ব কতখানি।

 

তাতে যে রিপোর্ট সামনে এসেছে তা বিস্ময়কর। দেখা গেছে নাম মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হলেও উচ্চ শিক্ষায় এখানে হিন্দু পড়ুয়ারা এখানে মুসলিম পড়ুয়াদের থেকে সংখ্যার বিচারে এগিয়ে। এমনও দেখা গিয়েছে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তপশীলি জাতি ও উপজাতি এবং ওবিসি পড়ুয়ারা মুসলিম পড়ুয়াদের থেকে সংখ্যায় বেশি। গত ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে উচ্চ শিক্ষায় পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়েছে ১৮.১ শতাংশ। তাতে দেখা গেছে উচ্চ শিক্ষায় এসসি পড়ুয়াদের হার বেড়েছে ২৫.৪৩ শতাংশ। এসটি পড়ুয়া বেড়েছে ৪১.৬ শতাংশ এবং ওবিসি পড়ুয়া বেড়েছে ২৭.৩ শতাংশ। যেখানে মুসলিম পড়ুয়ার সংখ্যা ১৮.১ শতাংশ। মুসলিম ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষায় প্রতিনিধিত্ব এসসিএসটি ও ওবিসিদের তুলনায় সংখ্যায় কমেছে।

 

উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে মুসলিম পড়ুয়ারা যে প্রবল প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে তা ফের আর একবার সামনে এল। যখন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা থাকা নিয়ে মামলার শুনানি হচ্ছে তখন এমন রিপোর্ট নিঃসন্দেহে  উদ্বেগজনক।

 

মুসলিম পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলির গুণগত মান নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। দেশজুড়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের জন্য বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাদের গুণগত মান সন্তোষজনক নয়। সেখানে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নিজের গৌরবজনক গুণগতমান প্রমাণ করেছে। অথচ এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিন দিন উচ্চ শিক্ষায় কমছে মুসলিম পড়ুয়াদের সংখ্যা। যাকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বহু শিক্ষাবিদ।