দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মহিলাই স্বামী ও তাঁর আত্মীয়দের হাতে নির্যাতিত: রিপোর্ট এনসিআরবির
ইমামা খাতুন
- আপডেট :
২৬ মার্চ ২০২৩, রবিবার
- / 11
বিশেষ প্রতিবেদন: দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মহিলাই শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার। বিশেষ করে, ১৮ থেকে ৪৯ বছরের মহিলাদের মধ্যে ৩২ শতাংশ তাঁদের সঙ্গীর কাছ থেকে শারীরিক, যৌন বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। সঙ্গীর হাতে নির্যাতনের মধ্যে সব চেয়ে বেশি (২৮ শতাংশ) ঘটে শারীরিক হেনস্থার ঘটনা। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা উঠলে যৌন হয়রানি, শোষণ এবং অন্যান্য ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা হলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রে গার্হস্থ্য হিংসাকে উপেক্ষা করা হয়ে থাকে। ফলস্বরূপ ক্রমবর্ধমান বেড়ে চলেছে পারবারিক হিংসার ঘটনা।
ঘটনাপ্রসঙ্গে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তরফ থেকে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬-২০২১ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তাতে অধিকাংশই রয়েছে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা। পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয় ২০২২ সালে মেয়ে ও ছেলেদের অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি একটি তথ্য পেশ করেছে। প্রকাশিত হওয়া রিপোর্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা গেছে যে, উপরিউক্ত সালে বেশিরভাগ মহিলারা শুধু তাঁর স্বামী নয়, তাঁদের আত্মীয়দের হাতেও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, (২০১৬-২০২১) ৬ বছরের ব্যবধানে শুধু ভারতে নারী নির্যাতনের ২২.৮ লক্ষ মামলা দায়ের হয়েছে। তারমধ্যে শুধু ৭ লাখ অর্থাৎ ৩০ শতাংশ ভারতীয় দণ্ডবিধি আইপিসি ৪৯৮-এ ধারার অধীনে রিপোর্ট করা হয়েছে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারায় বিবাহিত কোনও মহিলা শ্বশুরবাড়িতে নিষ্ঠুরতার শিকার হলে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে নিষ্ঠুর আচরণের সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, এমন কোনও আক্রমণাত্মক আচরণ যা ওই বিবাহিত মহিলাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয় অথবা তাঁর দেহে অথবা মনে মারাত্মক আঘাত সৃষ্টি করে।
শুধু তাই নয়, এর মধ্যে বধূ বা তাঁর কোনও আত্মীয়কে পণের জন্য চাপ দেওয়ার মতো ঘটনাও রয়েছে। এই মামলায় দোষী সাব্যস্থ হলে অভিযুক্তের তিন বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানাও হতে পারে।
প্রকাশিত হওয়া রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই ৬ বছরে ৪৯৮-এ অধীনে যে হারে মামলা দায়ের হয়েছে তা মেয়েদের সঙ্গে হওয়া অন্যান্য ঘটনাকে ছাড়িয়ে গেছে।
গার্হস্থ্য হিংসা ছাড়াও মহিলাদের অপহরণ ও বিক্রি করে দেওয়ার মতো অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই কয়েক বছরে প্রায় ৪.১৪ লক্ষের মতো এই মামলা দায়ের হয়েছে। এই ছয় বছরের সময়কালে, ভারতে প্রায় ১.৯৬ লক্ষ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা ২০১৬-২০২১ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে মোট অপরাধের প্রায় ৮.৬ শতাংশ।