০৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাহিদা কমেছে, তবুও তালপাতার পাখায় আজও স্বপ্ন বোনেন শতাধিক শিল্পী

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, রবিবার
  • / 122

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক, মেদিনীপুর: ‘তালপাতায় তৈরি তুমি, নামটি তোমার পাখা। শীতকালের শত্রু তুমি, গরমকালের সখা।’ গ্রীষ্মের দুপুরে এই ছড়াটি তালপাতার হাতপাখার গায়ে লেখা থাকত প্রায় প্রতিটি বাঙালির বাড়িতে। তালপাতার তৈরি সেই পাখাই ছিল শৈশবের শান্তি, ছায়া আর গল্পের সঙ্গী। কিন্তু আজ কালের নিয়মে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই ঐতিহ্যবাহী তালপাতার হাতপাখা। বিদ্যুৎ প্রবাহ পৌঁছে গেছে শহর থেকে গ্রামে, হাতে হাতে পৌঁছে গেছে এসি, কুলার ও বৈদ্যুতিক ফ্যান। ফলে হাত পাখার প্রয়োজন কমেছে, বাজারেও আর চোখে পড়ে না সে আগের মতো। তবু এর মাঝেই পশ্চিম মেদিনীপুরের শিরোমণি গ্রাম রক্ষা করে চলেছে তালপাতার হাতপাখার ঐতিহ্য। শতাধিক পরিবার এখনও এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কেউ সাইকেল করে গ্রাম-শহরে বিক্রি করেন, আবার কেউ বাড়ির কাজের ফাঁকে তৈরি করেন পাখা।

৭০ বছরের প্রবীণ শিল্পী নিমাই ঘোড়ই বলেন, বাপ-ঠাকুরদাদের সময় থেকেই এই কাজ করে আসছি। এখন আর আগের মতো চাহিদা নেই, তবু এই পেশা ছাড়তে পারি না। প্রবীণ আরেক শিল্পী তারিণী ঘোড়ই বলেন, এখন পাতা সংগ্রহ করতে যেতে হয় দূর লালগড়, কেশপুর, বিনপুরে। তারপর পাতার নকশা করে, শুকিয়ে, বাঁশের কাঠিতে বাঁধাই করে বানাই পাখা। একটা পাখা বিক্রি হয় মাত্র ২০,২৫ টাকায়।

শিল্পীরা জানান, সরকার কিছুদিন আগে শিল্পীর পরিচয়পত্র দিলেও আজও মেলেনি শিল্পী ভাতা। বারবার আবেদন করেও শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছু পাননি তাঁরা। চন্দনা ঘোড়ই, রানু ঘোড়ই, অসিত ঘোড়ই-সহ বহু নারী-পুরুষ এখনও এই পেশায় টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিডিও কাহেকাসান পারভিন বলেন, পরিচয়পত্র থাকলে শিল্পী ভাতা পাওয়ার কথা। কেন পাচ্ছেন না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চাহিদা কমেছে, তবুও তালপাতার পাখায় আজও স্বপ্ন বোনেন শতাধিক শিল্পী

আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক, মেদিনীপুর: ‘তালপাতায় তৈরি তুমি, নামটি তোমার পাখা। শীতকালের শত্রু তুমি, গরমকালের সখা।’ গ্রীষ্মের দুপুরে এই ছড়াটি তালপাতার হাতপাখার গায়ে লেখা থাকত প্রায় প্রতিটি বাঙালির বাড়িতে। তালপাতার তৈরি সেই পাখাই ছিল শৈশবের শান্তি, ছায়া আর গল্পের সঙ্গী। কিন্তু আজ কালের নিয়মে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই ঐতিহ্যবাহী তালপাতার হাতপাখা। বিদ্যুৎ প্রবাহ পৌঁছে গেছে শহর থেকে গ্রামে, হাতে হাতে পৌঁছে গেছে এসি, কুলার ও বৈদ্যুতিক ফ্যান। ফলে হাত পাখার প্রয়োজন কমেছে, বাজারেও আর চোখে পড়ে না সে আগের মতো। তবু এর মাঝেই পশ্চিম মেদিনীপুরের শিরোমণি গ্রাম রক্ষা করে চলেছে তালপাতার হাতপাখার ঐতিহ্য। শতাধিক পরিবার এখনও এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কেউ সাইকেল করে গ্রাম-শহরে বিক্রি করেন, আবার কেউ বাড়ির কাজের ফাঁকে তৈরি করেন পাখা।

৭০ বছরের প্রবীণ শিল্পী নিমাই ঘোড়ই বলেন, বাপ-ঠাকুরদাদের সময় থেকেই এই কাজ করে আসছি। এখন আর আগের মতো চাহিদা নেই, তবু এই পেশা ছাড়তে পারি না। প্রবীণ আরেক শিল্পী তারিণী ঘোড়ই বলেন, এখন পাতা সংগ্রহ করতে যেতে হয় দূর লালগড়, কেশপুর, বিনপুরে। তারপর পাতার নকশা করে, শুকিয়ে, বাঁশের কাঠিতে বাঁধাই করে বানাই পাখা। একটা পাখা বিক্রি হয় মাত্র ২০,২৫ টাকায়।

শিল্পীরা জানান, সরকার কিছুদিন আগে শিল্পীর পরিচয়পত্র দিলেও আজও মেলেনি শিল্পী ভাতা। বারবার আবেদন করেও শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছু পাননি তাঁরা। চন্দনা ঘোড়ই, রানু ঘোড়ই, অসিত ঘোড়ই-সহ বহু নারী-পুরুষ এখনও এই পেশায় টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিডিও কাহেকাসান পারভিন বলেন, পরিচয়পত্র থাকলে শিল্পী ভাতা পাওয়ার কথা। কেন পাচ্ছেন না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।