বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন রক্তবাহী রোগে আক্রান্ত রোগী, জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা

- আপডেট : ১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
- / 14
ইন্তেখাব আলম : মানবদেহে প্রবাহিত রক্তের বিভিন্ন জটিল অসুখের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনই সবচেয়ে আধুনিক চিকিৎসা। রক্তের ক্যানসার(লিউকোমিয়া), থ্যালাসেমিয়া, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, লিম্ফোমা কিংবা ইনহেরিটেড বোন ম্যারো ফেলিওরের মতো একাধিক রক্ত সংক্রান্ত রোগ হলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। সেক্ষেত্রে রুটিন চিকিৎসায় সাময়িক স্বস্তি পেলেও শরীরজুড়ে অসুখের ভোগান্তি লেগেই থাকে।
যার ফলে শরীর এবং মনের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় রোগী এবং রোগীর পরিজনদের। কিন্তু রক্তের বিভিন্ন রোগ থেকে সম্পূর্ণ নিরাময়ের জন্য রোগীর বোন ম্যারো ট্র্যান্সপ্ল্যানটেশন করিয়ে নিলে রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে জানান বিশিষ্ট চিকিৎসক তুফানকান্তি দলুই। ওই চিকিৎসা প্রাথমিকভাবে ব্যয় বহুল মনে হলেও একবার খরচ করে অসুখ অনেকাংশেই সারিয়ে তোলা সম্ভব বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার ইস্টার্ন ইন্ডিয়া ব্লাড ম্যারো অ্যান্ড সেল্যুলার থেরাপির তৃতীয় বার্ষিক সম্মেলনে সংগঠনের অরগানাইজিং চেয়ারপার্সন তথা এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ডা. তুফানকান্তি দলুই বলেন, আমাদের রাজ্যে সরকারিভাবে প্রথম বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে এনআরএস হাসপাতালেই।তারপর ২০১১ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চালু হয় এই চিকিৎসা।
এবারের সম্মেলনের আলোচনায় উঠে আসে রক্তের অসুখের চিকিৎসার শুরুতেই বোনম্যারো (ব্লাডম্যারো) প্রতিস্থাপনের সুবিধার বিভিন্ন বিষয়গুলি। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় যেন বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন চিকিতসাকে আনা হয় সে বিষয়েও আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।এ দিন সংগঠনের চেয়ারম্যান ডা. রাজীব দে বলেন, ‘বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনে আসলে রক্ত সঞ্চালনের মতো প্যাকেটে করে রোগীর শরীরে নানান সাবধানতা অবলম্বন করে বোন ম্যারো দেওয়া হয়। হাড়ের মধ্যে থাকা অস্থিমজ্জা বা বোনম্যারো হল রক্ত তৈরির ফ্যাক্টরি। রক্তের নানান গ্রুপের মতো বোনম্যারো থেকে নেওয়া স্টেম সেলেরও বিভিন্ন গ্রুপ থাকে, এর নাম এইচএলএ। ম্যাচ করলে তবেই অটোলোগাস ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট কিংবা অ্যালোজেনিক ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট বোনম্যারো প্রতিস্থাপন সম্ভব’।
দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই কম খরচে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সহ রাজ্যের মোট ৯টি হাসপাতাল সহ পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের ২৩টি কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক গাইডলাইন মেনেই বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা করা হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সম্পাদক ডা. আর কে জেনা, ডা. শর্মীলা চন্দ্র, ডা. অনুপম চক্রপাণি সহ টাটা মেডিক্যাল সেন্টার, ভুবনেশ্বর এইমস, গুটাহাটি মেডিক্যাল কলেজ, অ্যাপোলো হাসপাতাল, রুবি জেনারেল হাসপাতাল সহ কুড়িটিরও বেশি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রতিনিধিরা।