১৭ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২০০৬ মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলা: প্রমাণের অভাবে ১২ অভিযুক্ত বেকসুর খালাস, রায় বম্বে হাইকোর্টের

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার
  • / 75

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ২০০৬ মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় প্রমাণের অভাবে ১২ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিল বম্বে হাইকোর্ট। সোমবার আদালত বলেছে, “অভিযুক্তদের অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করার মতো কোনও শক্ত প্রমাণ নেই। তাদের দোষী সাব্যস্ত করার রায় বাতিল করা হল।”

২০১৫ সালে বিশেষ আদালত যে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল, তা খারিজ করে হাইকোর্ট তাদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেয়।

আদালত বলেছে, সাক্ষ্যপ্রমাণ, সাক্ষীর বিবৃতি এবং অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বস্তুগুলোর কোনও প্রমাণমূল্য নেই। প্রসিকিউশন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের জেরা করেনি। বিস্ফোরকে ব্যবহৃত সার্কিট বক্স এবং অন্যান্য উদ্ধারকৃত সামগ্রী ঠিকমতো সিল ও সংরক্ষণ করা হয়নি। “কি ধরনের বোমা ব্যবহৃত হয়েছিল তাও আদালতের রেকর্ডে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রসিকিউশন।”

অভিযুক্তদের জোরপূর্বক নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে বোম্বে হাইকোর্টের এই রায়ের পর সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি পুলিশ ও মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমাজ মাধ্যমে লিখলেন, “এই অভিযুক্তদের জীবনের সেরা সময় কেটে গেছে কারাগারে, তারা ১৯ বছর বন্দি ছিলেন। জনমতের চাপে এমন মামলাগুলিতে পুলিশ প্রথমে অভিযুক্তদের অপরাধী ধরে নেয় এবং সেই দৃষ্টিভঙ্গিতেই এগোয়।”

মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “পুলিশ কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করে এবং মিডিয়া যেভাবে মামলা কভার করে, তাতে অভিযুক্তদের অপরাধী হিসেবে ধরা হয়। বহু সন্ত্রাস মামলায় তদন্তকারী সংস্থাগুলি আমাদের ব্যর্থ করেছে।”

২০০৬ সালে মুম্বাই বিস্ফোরণের সময় মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল বলে কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেন ওয়াইসি। তিনি বলেন, “তৎকালীন শাসক দলগুলিও নির্যাতনের অভিযোগ উপেক্ষা করেছে।”

তিনি আরও জানান, অভিযুক্তদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য দণ্ডপ্রাপ্ত অবস্থাতেই মারা গেছেন। ওয়াইসির প্রশ্ন তোলেন, “এখন মহারাষ্ট্র সরকার কীভাবে বেকসুর খালাসপ্রাপ্তদের ও বিস্ফোরণের শিকার পরিবারকে ন্যায় দেবে?”

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

২০০৬ মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলা: প্রমাণের অভাবে ১২ অভিযুক্ত বেকসুর খালাস, রায় বম্বে হাইকোর্টের

আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ২০০৬ মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় প্রমাণের অভাবে ১২ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিল বম্বে হাইকোর্ট। সোমবার আদালত বলেছে, “অভিযুক্তদের অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করার মতো কোনও শক্ত প্রমাণ নেই। তাদের দোষী সাব্যস্ত করার রায় বাতিল করা হল।”

২০১৫ সালে বিশেষ আদালত যে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল, তা খারিজ করে হাইকোর্ট তাদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেয়।

আদালত বলেছে, সাক্ষ্যপ্রমাণ, সাক্ষীর বিবৃতি এবং অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বস্তুগুলোর কোনও প্রমাণমূল্য নেই। প্রসিকিউশন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের জেরা করেনি। বিস্ফোরকে ব্যবহৃত সার্কিট বক্স এবং অন্যান্য উদ্ধারকৃত সামগ্রী ঠিকমতো সিল ও সংরক্ষণ করা হয়নি। “কি ধরনের বোমা ব্যবহৃত হয়েছিল তাও আদালতের রেকর্ডে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রসিকিউশন।”

অভিযুক্তদের জোরপূর্বক নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে বোম্বে হাইকোর্টের এই রায়ের পর সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি পুলিশ ও মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমাজ মাধ্যমে লিখলেন, “এই অভিযুক্তদের জীবনের সেরা সময় কেটে গেছে কারাগারে, তারা ১৯ বছর বন্দি ছিলেন। জনমতের চাপে এমন মামলাগুলিতে পুলিশ প্রথমে অভিযুক্তদের অপরাধী ধরে নেয় এবং সেই দৃষ্টিভঙ্গিতেই এগোয়।”

মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “পুলিশ কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করে এবং মিডিয়া যেভাবে মামলা কভার করে, তাতে অভিযুক্তদের অপরাধী হিসেবে ধরা হয়। বহু সন্ত্রাস মামলায় তদন্তকারী সংস্থাগুলি আমাদের ব্যর্থ করেছে।”

২০০৬ সালে মুম্বাই বিস্ফোরণের সময় মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল বলে কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেন ওয়াইসি। তিনি বলেন, “তৎকালীন শাসক দলগুলিও নির্যাতনের অভিযোগ উপেক্ষা করেছে।”

তিনি আরও জানান, অভিযুক্তদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য দণ্ডপ্রাপ্ত অবস্থাতেই মারা গেছেন। ওয়াইসির প্রশ্ন তোলেন, “এখন মহারাষ্ট্র সরকার কীভাবে বেকসুর খালাসপ্রাপ্তদের ও বিস্ফোরণের শিকার পরিবারকে ন্যায় দেবে?”