১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্র্যান্ড নেম জাল ওষুধে রয়েছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, সিডিএসসিও’র গুণমান যাচাই-পরীক্ষায় ফেল করল ১৯৮টি ট্যাবলেট

পুবের কলম
  • আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার
  • / 55

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ওষুধের ব্র্যান্ড নেম জাল, রয়েছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া। পরীক্ষাগারে ফেল করল ১৯৮টি ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও ইঞ্জেকশন। মোট ১৯৮টি ওষুধে গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ফেল করেছে বলে তালিকা প্রকাশ করে জানাল সেন্টাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)।

কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবে গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ফেল করেছে ৩৩টি ওষুধ। গত মাসে বাজার থেকে বেশকিছু ওষুধ পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সিডিএসসিও-এর রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, একাধিক ইঞ্জেকশনের ভায়ালে মিলেছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া। পরিশোধিত জল দিয়ে তৈরি হয়নি বেশ কিছু ওষুধ। নামি সংস্থার ব্র্যান্ড নেম জাল করে তৈরি করা হয়েছে অনেক ওষুধ বলে অভিযোগ।

দেশজুড়ে এই যে ওষুধের গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষা হয় প্রতিমাসে। গত এপ্রিল মাসজুড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাব। রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ অধীন ল্যাবে যে সকল ওষুধের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, সেই পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সারা দেশজুড়ে ১৯৮টি ওষুধ পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। এই ১৯৮টি ওষুধের মধ্যে কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের ল্যাবে বিভিন্ন রাজ্য থেকেও নমুনা আসে, সেগুলির পরীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কলকাতার যে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাব, সেখানেও গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ৩৩ টি ওষুধ ফেল করেছে !

এর মধ্যে অনেক ওষুধ অন্য নামি সংস্থার ব্র্যান্ড নেম জাল করে বানানো হয়েছে। জাল ওষুধের অভিযোগ ওঠা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, এটা আমাদের তৈরি ওষুধ নয়। নাম ও ব্র্যান্ড নেম জাল করে বানানো ওষুধ। কোনও কোনও ওষুধের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ক্ষতিকারণ ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এমনকী দূষিত তরল দিয়ে বানানো হয়েছে। কিছু কিছু ট্যাবলেট বা ক্যাপস্যুল খাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, সেটা শরীরে গিয়ে দ্রবীভূত হচ্ছে না।

এরকম নানাবিধি কারণের জন্য ১৯৮টি ওষুধকে ‘ নট স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি’ (এনএসটি) বলে ঘোষণা করেছে, কেন্দ্রের সেন্টাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন ( সিডিএসসিও)।
এই বিষয়ে সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সজল বিশ্বাস জানান, ‘যেসব ওষুধ গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে তার মধ্যে সেফিউরক্সিম, অ্যাজিথ্রমাইসিনের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক, টেলমাসার্টানের মতো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ রয়েছে।

এ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির তৈরি রিঙ্গার্স ল্যাক্টেড স্যালাইন এবং ইনজেকশন সিপ্রোফ্লক্সাসিন-এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামও রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে এই কোম্পানির রিঙ্গার্স ল্যাক্টেটের ব্যবহারের ফলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ওষুধের বিষক্রিয়ায় দু’জন প্রসূতির মৃত্যু ঘটে। এবং আরও কয়েকজন এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

ফোরামের দাবি, অবিলম্বে ওই কোম্পানি বন্ধ করে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সমস্ত ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হোক। গুণমান পরীক্ষায় ফেল করা অন্যান্য ওষুধ কোম্পানিগুলির উপরেও নজরদারি বাড়ানো হোক। সমস্ত ওষুধ ব্যবহারের আগে গুণমান পরীক্ষা নিশ্চিত করা হোক।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ব্র্যান্ড নেম জাল ওষুধে রয়েছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, সিডিএসসিও’র গুণমান যাচাই-পরীক্ষায় ফেল করল ১৯৮টি ট্যাবলেট

আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ওষুধের ব্র্যান্ড নেম জাল, রয়েছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া। পরীক্ষাগারে ফেল করল ১৯৮টি ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও ইঞ্জেকশন। মোট ১৯৮টি ওষুধে গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ফেল করেছে বলে তালিকা প্রকাশ করে জানাল সেন্টাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)।

কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবে গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ফেল করেছে ৩৩টি ওষুধ। গত মাসে বাজার থেকে বেশকিছু ওষুধ পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সিডিএসসিও-এর রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, একাধিক ইঞ্জেকশনের ভায়ালে মিলেছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া। পরিশোধিত জল দিয়ে তৈরি হয়নি বেশ কিছু ওষুধ। নামি সংস্থার ব্র্যান্ড নেম জাল করে তৈরি করা হয়েছে অনেক ওষুধ বলে অভিযোগ।

দেশজুড়ে এই যে ওষুধের গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষা হয় প্রতিমাসে। গত এপ্রিল মাসজুড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাব। রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ অধীন ল্যাবে যে সকল ওষুধের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, সেই পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সারা দেশজুড়ে ১৯৮টি ওষুধ পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। এই ১৯৮টি ওষুধের মধ্যে কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের ল্যাবে বিভিন্ন রাজ্য থেকেও নমুনা আসে, সেগুলির পরীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কলকাতার যে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাব, সেখানেও গুণমান যাচাইয়ের পরীক্ষায় ৩৩ টি ওষুধ ফেল করেছে !

এর মধ্যে অনেক ওষুধ অন্য নামি সংস্থার ব্র্যান্ড নেম জাল করে বানানো হয়েছে। জাল ওষুধের অভিযোগ ওঠা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, এটা আমাদের তৈরি ওষুধ নয়। নাম ও ব্র্যান্ড নেম জাল করে বানানো ওষুধ। কোনও কোনও ওষুধের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ক্ষতিকারণ ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এমনকী দূষিত তরল দিয়ে বানানো হয়েছে। কিছু কিছু ট্যাবলেট বা ক্যাপস্যুল খাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, সেটা শরীরে গিয়ে দ্রবীভূত হচ্ছে না।

এরকম নানাবিধি কারণের জন্য ১৯৮টি ওষুধকে ‘ নট স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি’ (এনএসটি) বলে ঘোষণা করেছে, কেন্দ্রের সেন্টাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন ( সিডিএসসিও)।
এই বিষয়ে সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সজল বিশ্বাস জানান, ‘যেসব ওষুধ গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে তার মধ্যে সেফিউরক্সিম, অ্যাজিথ্রমাইসিনের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক, টেলমাসার্টানের মতো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ রয়েছে।

এ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির তৈরি রিঙ্গার্স ল্যাক্টেড স্যালাইন এবং ইনজেকশন সিপ্রোফ্লক্সাসিন-এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামও রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে এই কোম্পানির রিঙ্গার্স ল্যাক্টেটের ব্যবহারের ফলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ওষুধের বিষক্রিয়ায় দু’জন প্রসূতির মৃত্যু ঘটে। এবং আরও কয়েকজন এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

ফোরামের দাবি, অবিলম্বে ওই কোম্পানি বন্ধ করে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সমস্ত ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হোক। গুণমান পরীক্ষায় ফেল করা অন্যান্য ওষুধ কোম্পানিগুলির উপরেও নজরদারি বাড়ানো হোক। সমস্ত ওষুধ ব্যবহারের আগে গুণমান পরীক্ষা নিশ্চিত করা হোক।