০২ মে ২০২৫, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

BREAKING: অনুব্রতর জেল হেফাজতের নির্দেশ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২২, বুধবার
  • / 13

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ গৃহীত হল না অসুস্থতার  যুক্তি!বুধবার সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে আবারও বীরভূম তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের  আবেদন খারিজ হল।বুধবার দুপুরে টানটান শুনানির পর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের  রায় শোনান বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।

 

সিবিআই হেফাজতের পর এবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।আপাতত এই ১৪ দিন জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতাকে। এর আগেও দু’ই বার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে।

 

এদিনে অনুব্রতর আইনজীবী তাঁর মক্কেলের শারীরিক অবস্থার দোহাই দিয়ে জামিনের আবেদন  করেছিলেন।তিনি বিচারকদের জানান, তাঁর মক্কেল গুরুতর অসুস্থ। যে কোনও মুহূর্তে অক্সিজেন এর প্রয়োজন হতে পারে। যেনও বাড়িতে থেকেই তাঁর মক্কেল কে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হয়।এদিন  অনুব্রত মণ্ডলকে ইনহেলার দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারকের।

 

বুধবার অনুব্রতর জামিনের বিরোধিতা জানিয়ে সিবিআই এর আইনজীবী মন্তব্য করেন, অনুব্রত মণ্ডল অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন নেতা।তিনি জামিন পেলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে!শুধু তাই নয়, তদন্তের স্বার্থে তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।ফলস্বরূপ তাঁকে জেল হেফাজতে রাখা হক। তারপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী বলেন, গরু পাচার মামলার  তদন্তে অনেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছেসেই খানে অনুব্রতর নাম বারবার উঠে এসেছে সুতরাং তাকে ছেড়ে দিলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে

 

এই প্রসঙ্গে  অনুব্রতর আইনজীবী পালটা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, প্রভাবশালী কি কথা ? আইনজীবীর কথায়, উনি ওয়েল নোন পার্সন, মুখ্যমন্ত্রীও চেনেন ওনাকে এটাই কি তার দোষ? এদিন তিনি বিচারককে বলেন, সবাইকে প্রভাবশালী বলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে সিবিআই তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার আপাতত কোনও  প্রয়োজন নেই।  

 

অনুব্রতর আইনজীবীর যুক্তি দেখিয়ে বিরোধী আইনজীবী কে জানান, তিনি গরু পাচারে কোনওভাবে জড়িত নন। তাঁকে এক অশুভ শক্তি ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, এদিন তিনি আরও বলেন, পশু হাট থেকে গরু কিনে সীমান্তে গরু পাচার করা হলে অনুব্রতের কী দোষ?

 

সীমান্তে গরুপাচার হলে তার দায় বিএসএফের দায়িত্ব এড়াতে পারে না বিএসএফ এখনও পর্যন্ত শুধু একজন বিএসএফ আধিকারিক গ্রেফতার হয়েছে, বাকীরা সব কথায়? অনুব্রতকে টার্গেট করা হচ্ছে এটা একটা ‘টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন’ শুধু সন্দেহের বশে হেফাজতে চাইছে সিবিআই

 

তিনি বলেন,এমনকি যে এফআইআর করা হয়েছে,এফআইআরে তার নামও নেই,  তাতে তাঁর দেহরক্ষী সায়গাল হুসেন ও এনামুল হকের নাম রয়েছে। তাঁদের নামে একাধিক বেনামী সম্পত্তির  হদিশ পেয়েছে! আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও বেনামী সম্পত্তির হদিশ পাওয়া যায়নি! তাঁর নামে কোনও বেনামী সম্পত্তির হদিশ পেলে আইকর দফতরকে পেনাল্টি দিতেও রাজি আছেন তারা।

 

এই প্রসঙ্গে, সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, অনুব্রতর নামে তাঁরা প্রচুর সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে।শুধু অনুব্রতর নিজের নামে নয়, তাঁর আত্মীয়ের নামে সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছেএমনকি তদন্তে একটুকুও সাহায্য করছেন না অনুব্রত আর হ্যাঁ এটা কোনও টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন নয়এটা যে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে তার একটাও প্রমাণ দিতে পারবেন না।

 

দুপক্ষের সওয়াল জবাব চলে দুপুর ২টো পর্যন্ত। এর পর রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। বেলা ২.৪৫ মিনিট নাগাদ আদালতের তরফে রায় ঘোষণা করে জানানো হয় অনুব্রতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।

 

এরপর অনুব্রত বিচারকের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চান। হাতজোড় করে তিনি বলেন, হুমকি চিঠি কে দিল, তার সিবিআই তদন্ত হোক। তবে এই প্রসঙ্গে বিচারক সাফ জানিয়ে দেন , এই মামলার সঙ্গে হুমকির কোনও সম্পর্ক নেই। তাই কেউ এ বিষয়ে কথা বলবেন না।

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

BREAKING: অনুব্রতর জেল হেফাজতের নির্দেশ

আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২২, বুধবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ গৃহীত হল না অসুস্থতার  যুক্তি!বুধবার সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে আবারও বীরভূম তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের  আবেদন খারিজ হল।বুধবার দুপুরে টানটান শুনানির পর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের  রায় শোনান বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।

 

সিবিআই হেফাজতের পর এবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।আপাতত এই ১৪ দিন জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতাকে। এর আগেও দু’ই বার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে।

 

এদিনে অনুব্রতর আইনজীবী তাঁর মক্কেলের শারীরিক অবস্থার দোহাই দিয়ে জামিনের আবেদন  করেছিলেন।তিনি বিচারকদের জানান, তাঁর মক্কেল গুরুতর অসুস্থ। যে কোনও মুহূর্তে অক্সিজেন এর প্রয়োজন হতে পারে। যেনও বাড়িতে থেকেই তাঁর মক্কেল কে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হয়।এদিন  অনুব্রত মণ্ডলকে ইনহেলার দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারকের।

 

বুধবার অনুব্রতর জামিনের বিরোধিতা জানিয়ে সিবিআই এর আইনজীবী মন্তব্য করেন, অনুব্রত মণ্ডল অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন নেতা।তিনি জামিন পেলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে!শুধু তাই নয়, তদন্তের স্বার্থে তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।ফলস্বরূপ তাঁকে জেল হেফাজতে রাখা হক। তারপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী বলেন, গরু পাচার মামলার  তদন্তে অনেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছেসেই খানে অনুব্রতর নাম বারবার উঠে এসেছে সুতরাং তাকে ছেড়ে দিলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে

 

এই প্রসঙ্গে  অনুব্রতর আইনজীবী পালটা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, প্রভাবশালী কি কথা ? আইনজীবীর কথায়, উনি ওয়েল নোন পার্সন, মুখ্যমন্ত্রীও চেনেন ওনাকে এটাই কি তার দোষ? এদিন তিনি বিচারককে বলেন, সবাইকে প্রভাবশালী বলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে সিবিআই তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার আপাতত কোনও  প্রয়োজন নেই।  

 

অনুব্রতর আইনজীবীর যুক্তি দেখিয়ে বিরোধী আইনজীবী কে জানান, তিনি গরু পাচারে কোনওভাবে জড়িত নন। তাঁকে এক অশুভ শক্তি ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, এদিন তিনি আরও বলেন, পশু হাট থেকে গরু কিনে সীমান্তে গরু পাচার করা হলে অনুব্রতের কী দোষ?

 

সীমান্তে গরুপাচার হলে তার দায় বিএসএফের দায়িত্ব এড়াতে পারে না বিএসএফ এখনও পর্যন্ত শুধু একজন বিএসএফ আধিকারিক গ্রেফতার হয়েছে, বাকীরা সব কথায়? অনুব্রতকে টার্গেট করা হচ্ছে এটা একটা ‘টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন’ শুধু সন্দেহের বশে হেফাজতে চাইছে সিবিআই

 

তিনি বলেন,এমনকি যে এফআইআর করা হয়েছে,এফআইআরে তার নামও নেই,  তাতে তাঁর দেহরক্ষী সায়গাল হুসেন ও এনামুল হকের নাম রয়েছে। তাঁদের নামে একাধিক বেনামী সম্পত্তির  হদিশ পেয়েছে! আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও বেনামী সম্পত্তির হদিশ পাওয়া যায়নি! তাঁর নামে কোনও বেনামী সম্পত্তির হদিশ পেলে আইকর দফতরকে পেনাল্টি দিতেও রাজি আছেন তারা।

 

এই প্রসঙ্গে, সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, অনুব্রতর নামে তাঁরা প্রচুর সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে।শুধু অনুব্রতর নিজের নামে নয়, তাঁর আত্মীয়ের নামে সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছেএমনকি তদন্তে একটুকুও সাহায্য করছেন না অনুব্রত আর হ্যাঁ এটা কোনও টার্গেটেড ইনভেস্টিগেশন নয়এটা যে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে তার একটাও প্রমাণ দিতে পারবেন না।

 

দুপক্ষের সওয়াল জবাব চলে দুপুর ২টো পর্যন্ত। এর পর রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। বেলা ২.৪৫ মিনিট নাগাদ আদালতের তরফে রায় ঘোষণা করে জানানো হয় অনুব্রতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।

 

এরপর অনুব্রত বিচারকের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চান। হাতজোড় করে তিনি বলেন, হুমকি চিঠি কে দিল, তার সিবিআই তদন্ত হোক। তবে এই প্রসঙ্গে বিচারক সাফ জানিয়ে দেন , এই মামলার সঙ্গে হুমকির কোনও সম্পর্ক নেই। তাই কেউ এ বিষয়ে কথা বলবেন না।