পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: সিএএ-র উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে একাধিক পিটিশন দাখিল হল সুপ্রিম কোর্টে। শুক্রবার সেই আবেদনগুলি গ্রহণ করল শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, এই মামলাগুলি গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট। এখন সর্বোচ্চ আদালতেই সিএএ-র বৈধতা নিয়ে শুনানি হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিএএ কার্যকর করার পরই মুসলিম লিগ সহ একাধিক পিটিশনকারী সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল। মুসলিম লিগের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের কাছে মামলাটির দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করেন। আদালতে সিব্বল বলেন, ২০১৯ সালে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হয়েছিল। কিন্তু, সেই সময় আইনের বিধি তৈরি করা হয়নি।
তাই তখন সুপ্রিম কোর্ট সিএএ-র উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। কিন্তু, এখন লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্র সিএএ বিধি লাগু করেছে। এখন নাগরিকত্ব যদি মঞ্জুর হয়ে যায় তাহলে তা আর ফিরিয়ে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন পিটিশনটির দ্রুত শুনানি করা হোক। কেন্দ্রের তরফের আইনজীবী ছিলেন তুষার মেহতা।
দু’তরফের বক্তব্য শোনার পর সুপ্রিম কোর্ট ১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে এই আইনের বিরোধিতায় শতাধিক আবেদন দাখিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদি সরকার। এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপিড়নের শিকার হওয়া অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত।
সিএএ-তে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। আর এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। সেখানে এভাবে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া কেন? এটা সংবিধান লঙ্ঘন।
বিরোধীদের দাবি, সিএএ ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বৈষম্যমূলক’। তাঁদের কথায়, কেন এই আইনে শুধু মাত্র ছয় সম্প্রদায়ের কথা বলা হল? কেন মুসলিম সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে এই আইন বানাল কেন্দ্র সরকার? বিরোধীদের কথায়, ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। সেখানে এ ধরনের আইন মানুষের মধ্যে ‘বৈষম্য’ সৃষ্টি করছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এই আইনের বিরোধিতা করে আসছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘সিএএ-র সঙ্গে এনআরসি-র সম্পর্ক রয়েছে। বর্ণবৈষম্যের সিএএ আমি মানি না।’ যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, সিএএ এবং এনআরসি সম্পূর্ণ আলাদা। দু’টি বিষয়ের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। সিএএ শুধু নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। কোনও ভারতীয়ের নাগরিকত্ব কাড়ার জন্য এই আইন করা হয়নি।