১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩১ জুলাই পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, মুর্শিদাবাদ নিয়ে নির্দেশ হাইকোর্টের

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার
  • / 150

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি। বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্থানীয়দের একাংশের দাবি মেনে বিএসএফ স্থায়ী ক্যাম্পের বিষয়টি বিবেচনা করতে রাজ্য ও কেন্দ্রকে দেখতে বলল আদালত। আগামী ৩১ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

ওয়াকফ ইস্যুতে ১২ এপ্রিল হিংসা ছড়িয়েছিল মুর্শিদাবাদের একটা এলাকায়। ঘরবাড়ি লুট এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। ওই মামলায় আদালতের নির্দেশ মেনে এ দিন রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য পুলিশ। এরপরই কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েনের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এলাকার মানুষের সুরক্ষার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনার সম্পর্কে রাজ্যের গোয়েন্দাদের কাছে আগাম কেন কোনও খবর ছিল না, সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। আদালত চত্বরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন মামলাকারীর আইনজীবী বিল্লদল ভট্টাচার্য ও রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণের উদ্দেশ্যে মামলাকারী আইনজীবী বলেন, আপনার জায়গা এখানে নয়, বালুচিস্তানে! পালটা কল্যাণ বলেন, আপনার জায়গা কলকাতায় নয়, উত্তরপ্রদেশে!

আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসসি, এসটি ও ওবিসি কোটায় স্থগিতাদেশ বোম্বে হাইকোর্টের

বিচারপতি সৌমেন সেন রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, সময় এসেছে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী নিয়োগ করার। প্রতি জেলায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম। যদি পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশকর্মী থাকত, তাহলে হয়তো অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হত। কল্যাণের পালটা সওয়াল, গোটা দেশেই বাহিনী কম আছে। পর্যাপ্ত বাহিনী থাকলে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা ঘটত না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও আদালতকে জানান কল্যাণ।

আরও পড়ুন: মহেশতলা কাণ্ডে NIA তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু

এ দিন কেন্দ্র একটি রিপোর্ট পেশ করেছে হাইকোর্টে। তাতে উল্লেখ, রাজ্যের কমপক্ষে ১৫ টি জায়গায় অশান্তি হতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তির উপর আক্রমণ করা হতে পারে। আদালত অনুমতি দিলে এনআইএ তদন্ত করতে প্রস্তুত বলেও জানায় কেন্দ্র। যদিও বিচারপতি সেন মন্তব্য করেন, এখনও পর্যন্ত আদালতের সামনে যা রিপোর্ট এসেছে, সেটা দেখে মনে হচ্ছে যে প্রশাসন ভালো কাজ করেছে।

আরও পড়ুন: বাতিল হচ্ছে না ১৫ বছরের পুরোনো বাস, জানাল কলকাতা হাইকোর্ট

অন্যদিকে পুলিশ বেশি সক্রিয় হয়ে মানুষকে হয়রান করছে বলে অভিযোগ করা হয়। সেই সংক্রান্ত এক মামলা খারিজ করেছে আদালত। আদালতে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, পুলিশ এক পরিবারের বাবা ও ছেলেকে তাড়া করেছে, যারা খুন হন। আদালত জানিয়েছে, পুলিশের নিষ্ক্রীয়তা বা অতিসক্রিয়তার বিষয়ে মামলা শোনার জন্য নির্দিষ্ট বেঞ্চ আছে।

বিষয়টি শুনানির জন্য একটি নতুন বেঞ্চে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে ফেরত পাঠানো হবে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কথিত পদক্ষেপে আক্রান্ত হয়ে হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের বিধবা স্ত্রীরা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। হরগোবিন্দ দাস এবং তাঁর পুত্র চন্দনকে ১২ এপ্রিল জেলার সামশেরগঞ্জে দাঙ্গাকারীরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও পুলিশ পরে জানিয়েছে, ওয়াকফ আ¨োলন নয়, জমি বিবাদে খুন হয়েছে পিতা-পুত্র।

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চের সামনে বলা হয়েছিল যে তাদের পরিবারের সদস্যরা সল্টলেকে এসেছিলেন এবং উচ্চ আদালতের সামনে আবেদন করার উদ্দেশ্যে সেখানে একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন। আইনজীবী আদালতে বলেন, বাড়ির দরজা ভেঙেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদে মৃত পিতা ও ছেলের পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ করা হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৩১ জুলাই পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, মুর্শিদাবাদ নিয়ে নির্দেশ হাইকোর্টের

আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি। বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্থানীয়দের একাংশের দাবি মেনে বিএসএফ স্থায়ী ক্যাম্পের বিষয়টি বিবেচনা করতে রাজ্য ও কেন্দ্রকে দেখতে বলল আদালত। আগামী ৩১ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

ওয়াকফ ইস্যুতে ১২ এপ্রিল হিংসা ছড়িয়েছিল মুর্শিদাবাদের একটা এলাকায়। ঘরবাড়ি লুট এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। ওই মামলায় আদালতের নির্দেশ মেনে এ দিন রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য পুলিশ। এরপরই কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েনের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এলাকার মানুষের সুরক্ষার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনার সম্পর্কে রাজ্যের গোয়েন্দাদের কাছে আগাম কেন কোনও খবর ছিল না, সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। আদালত চত্বরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন মামলাকারীর আইনজীবী বিল্লদল ভট্টাচার্য ও রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণের উদ্দেশ্যে মামলাকারী আইনজীবী বলেন, আপনার জায়গা এখানে নয়, বালুচিস্তানে! পালটা কল্যাণ বলেন, আপনার জায়গা কলকাতায় নয়, উত্তরপ্রদেশে!

আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসসি, এসটি ও ওবিসি কোটায় স্থগিতাদেশ বোম্বে হাইকোর্টের

বিচারপতি সৌমেন সেন রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, সময় এসেছে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী নিয়োগ করার। প্রতি জেলায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম। যদি পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশকর্মী থাকত, তাহলে হয়তো অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হত। কল্যাণের পালটা সওয়াল, গোটা দেশেই বাহিনী কম আছে। পর্যাপ্ত বাহিনী থাকলে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা ঘটত না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও আদালতকে জানান কল্যাণ।

আরও পড়ুন: মহেশতলা কাণ্ডে NIA তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু

এ দিন কেন্দ্র একটি রিপোর্ট পেশ করেছে হাইকোর্টে। তাতে উল্লেখ, রাজ্যের কমপক্ষে ১৫ টি জায়গায় অশান্তি হতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তির উপর আক্রমণ করা হতে পারে। আদালত অনুমতি দিলে এনআইএ তদন্ত করতে প্রস্তুত বলেও জানায় কেন্দ্র। যদিও বিচারপতি সেন মন্তব্য করেন, এখনও পর্যন্ত আদালতের সামনে যা রিপোর্ট এসেছে, সেটা দেখে মনে হচ্ছে যে প্রশাসন ভালো কাজ করেছে।

আরও পড়ুন: বাতিল হচ্ছে না ১৫ বছরের পুরোনো বাস, জানাল কলকাতা হাইকোর্ট

অন্যদিকে পুলিশ বেশি সক্রিয় হয়ে মানুষকে হয়রান করছে বলে অভিযোগ করা হয়। সেই সংক্রান্ত এক মামলা খারিজ করেছে আদালত। আদালতে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, পুলিশ এক পরিবারের বাবা ও ছেলেকে তাড়া করেছে, যারা খুন হন। আদালত জানিয়েছে, পুলিশের নিষ্ক্রীয়তা বা অতিসক্রিয়তার বিষয়ে মামলা শোনার জন্য নির্দিষ্ট বেঞ্চ আছে।

বিষয়টি শুনানির জন্য একটি নতুন বেঞ্চে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে ফেরত পাঠানো হবে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কথিত পদক্ষেপে আক্রান্ত হয়ে হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের বিধবা স্ত্রীরা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। হরগোবিন্দ দাস এবং তাঁর পুত্র চন্দনকে ১২ এপ্রিল জেলার সামশেরগঞ্জে দাঙ্গাকারীরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও পুলিশ পরে জানিয়েছে, ওয়াকফ আ¨োলন নয়, জমি বিবাদে খুন হয়েছে পিতা-পুত্র।

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চের সামনে বলা হয়েছিল যে তাদের পরিবারের সদস্যরা সল্টলেকে এসেছিলেন এবং উচ্চ আদালতের সামনে আবেদন করার উদ্দেশ্যে সেখানে একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন। আইনজীবী আদালতে বলেন, বাড়ির দরজা ভেঙেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদে মৃত পিতা ও ছেলের পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ করা হয়।