১২ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছত্তিশগড়ের খ্রিস্টান আদিবাসীরা এখনও ঘরছাড়া

সামিমা এহসানা
  • আপডেট : ৩ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 12

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি ছত্তিশগড়ের খ্রিস্টান আদিবাসীরা। শুধু তাই নয়, সংঘর্ষে মৃত পরিবারের সদস্যদের কবরস্থ করার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। নারায়ণপুর জেলায় ১৮ ডিসেম্বর এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ওই এলাকার খ্রিস্টান আদিবাসীরা কেন তাদের ধর্ম পরিবর্তন করেছেন, সেই অভিযোগে বিজেপির জেলা অধ্যক্ষ রূপসায় সলামের নেতৃত্বে একদল গ্রামবাসী স্থানীয় একটি চার্চে যীশু ও মাদার মেরির মূর্তি ভেঙে দেয়। যথেচ্ছ ভাঙচুর করা হয় গীর্জার ভেতরে। আসবাবপত্র সহ সব মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়। শুধু তাই নয়, খ্রিস্টান আদিবাসিদের মারধর করার পাশাপাশি প্রায় ২০০ জনকে ঘর ছাড়া করা হয়। সংঘর্ষ রুখতে পুলিশ এলে, প্রায় ৬ জন পুলিশ অফিসারকেও মারধর করা হয়। ওই এলাকার এস পি সদানন্দ কুমার চৌটিলের মাথা ফাটিয়ে দেয় দুষ্কৃতিরা ।

নারায়ণপুর জেলার বাসিন্দা ১৭ বছরের মোহন্তি জানিয়েছেন, ‘আমরা চার্চে যাই বলে আমাদেরকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’ গ্রাম থেকে বিতাড়িত আদিবাসী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানু¡জন প্রশাসনের সাহায্য চাইলে তাদেরকে একটি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এখনও প্রায় ৮০ জন ওই স্টেডিয়ামে রয়েছেন। তাদেরকে কোনোমতেই গ্রামে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। বিগত ১ মাস ধরে উত্তেজনা চলছে নারায়ণপুরে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। বিজেপি নেতা রূপসায় সলামের নেতৃত্বাধীন আদিবাসীরা এলাকার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের যথেচ্ছ নির্যাতন করছে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে দেখেও এখনও পর্যন্ত নির্যাতিতদের বাড়ি ফেরানোর বন্দোবস্ত  করেনি প্রশাসন।

ছত্তিশগড় খ্রিস্টান কমিউনিটি ফোরামের অধ্যক্ষ অরুণ পান্নালাল জানিয়েছেন, এই ঘটনা এখানে প্রথমবার ঘটেনি। এর আগেও খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণের ‘অপরাধে’ ঘর ছাড়া করা হয় আরও অনেককে। শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসে ১৪ টি গ্রামের অন্তত ২০০ জন আদিবাসীকে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা চরম আকার ধারণ করেছে ছত্তিশগড়ে, বলে মত অরুণ পান্নালালের। পৌষের হাড়হিম করা ঠান্ডায় কোনোমতে সন্তানদের নিয়ে স্টেডিয়ামে দিন কাটাতে হচ্ছে ছত্তিশগড়ের অসহায় সংখ্যালঘু আদিবাসীদের।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ছত্তিশগড়ের খ্রিস্টান আদিবাসীরা এখনও ঘরছাড়া

আপডেট : ৩ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি ছত্তিশগড়ের খ্রিস্টান আদিবাসীরা। শুধু তাই নয়, সংঘর্ষে মৃত পরিবারের সদস্যদের কবরস্থ করার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। নারায়ণপুর জেলায় ১৮ ডিসেম্বর এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ওই এলাকার খ্রিস্টান আদিবাসীরা কেন তাদের ধর্ম পরিবর্তন করেছেন, সেই অভিযোগে বিজেপির জেলা অধ্যক্ষ রূপসায় সলামের নেতৃত্বে একদল গ্রামবাসী স্থানীয় একটি চার্চে যীশু ও মাদার মেরির মূর্তি ভেঙে দেয়। যথেচ্ছ ভাঙচুর করা হয় গীর্জার ভেতরে। আসবাবপত্র সহ সব মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়। শুধু তাই নয়, খ্রিস্টান আদিবাসিদের মারধর করার পাশাপাশি প্রায় ২০০ জনকে ঘর ছাড়া করা হয়। সংঘর্ষ রুখতে পুলিশ এলে, প্রায় ৬ জন পুলিশ অফিসারকেও মারধর করা হয়। ওই এলাকার এস পি সদানন্দ কুমার চৌটিলের মাথা ফাটিয়ে দেয় দুষ্কৃতিরা ।

নারায়ণপুর জেলার বাসিন্দা ১৭ বছরের মোহন্তি জানিয়েছেন, ‘আমরা চার্চে যাই বলে আমাদেরকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’ গ্রাম থেকে বিতাড়িত আদিবাসী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানু¡জন প্রশাসনের সাহায্য চাইলে তাদেরকে একটি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এখনও প্রায় ৮০ জন ওই স্টেডিয়ামে রয়েছেন। তাদেরকে কোনোমতেই গ্রামে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। বিগত ১ মাস ধরে উত্তেজনা চলছে নারায়ণপুরে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। বিজেপি নেতা রূপসায় সলামের নেতৃত্বাধীন আদিবাসীরা এলাকার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের যথেচ্ছ নির্যাতন করছে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে দেখেও এখনও পর্যন্ত নির্যাতিতদের বাড়ি ফেরানোর বন্দোবস্ত  করেনি প্রশাসন।

ছত্তিশগড় খ্রিস্টান কমিউনিটি ফোরামের অধ্যক্ষ অরুণ পান্নালাল জানিয়েছেন, এই ঘটনা এখানে প্রথমবার ঘটেনি। এর আগেও খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণের ‘অপরাধে’ ঘর ছাড়া করা হয় আরও অনেককে। শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসে ১৪ টি গ্রামের অন্তত ২০০ জন আদিবাসীকে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা চরম আকার ধারণ করেছে ছত্তিশগড়ে, বলে মত অরুণ পান্নালালের। পৌষের হাড়হিম করা ঠান্ডায় কোনোমতে সন্তানদের নিয়ে স্টেডিয়ামে দিন কাটাতে হচ্ছে ছত্তিশগড়ের অসহায় সংখ্যালঘু আদিবাসীদের।