১৬ নভেম্বর ২০২৫, রবিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিস্তা প্রোজেক্টে চিনের আগ্রহ, ভারতের অস্বস্তি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৫ মে ২০২৪, বুধবার
  • / 28

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আন্তঃসীমান্ত তিস্তা নদী ড্রেজিং করে এর উন্নয়ন ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ। এই ইস্যুটি এশিয়ার দুই শক্তি চিন ও ভারতের মধ্যে এক প্রতিযোগিতার বিষয় হয়ে উঠেছে। ঢাকার পরিকল্পিত ‘তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিস্টোরেশন’ প্রজেক্টের দিকে কয়েক বছর ধরে দৃষ্টি রয়েছে বেজিংয়ের। এর আনুমানিক খরচ ১০০ কোটি ডলার।

 

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব জমা দিয়েছে বেজিং। ভারতও আন্তঃসীমান্ত নদীর গুরুত্ব বিবেচনায় এই কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। ফলে ভারত ও চিনের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশাল এই প্রকল্পের কাজ কে পাবে অথবা কখন এর কাজ শুরু হবে সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এখনও কাউকে ডাকেনি। ভারত ও চিনের আগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এখনও নয়াদিল্লি থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি ঢাকা।

 

বিস্তারিত না জানিয়ে তিনি বলেন- চীনের প্রস্তাব সম্পর্কে আমি অবহিত। তিস্তা প্রকল্পের কাজ পেলে চিন শিলিগুড়ি করিডোরের কাছে নিজেদের উপস্থিতি নিশ্চিত করবে। শিলিগুড়ি করিডোর ‘চিকেন নেক’ হিসেবে পরিচিত। এটি হল একটি সংকীর্ণ উপত্যকা, যা ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করেছে। এ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়ে বাংলাদেশকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকে চিনা কূটনীতিকদের চাপ দেওয়ার দিকেও ভারতের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে।

 

ভারতের বিদেশসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা সম্প্রতি ঢাকায় গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিদেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করে ওই দিনই ফিরে গেছেন তিনি। বৈঠক শেষে আলোচ্য বিষয় প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেছেন, ‘তিস্তায় আমরা একটি বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি।

 

ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। সহায়তা প্রস্তাব নিয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে, সেটি আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। তাই আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়, এটি ভারতকে বলা হয়েছে।’  বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রোজেক্ট হাতে পেলে চিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার ভূরাজনৈতিক উপস্থিতি আরও মজবুত করবে যা চিন্তার কারণ হতে পারে ভারতের। কারণ এভাবে ভারত মহাসাগরেও চিনের আধিপত্য বাড়তে পারে!

 

Tag :

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

তিস্তা প্রোজেক্টে চিনের আগ্রহ, ভারতের অস্বস্তি

আপডেট : ১৫ মে ২০২৪, বুধবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: আন্তঃসীমান্ত তিস্তা নদী ড্রেজিং করে এর উন্নয়ন ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ। এই ইস্যুটি এশিয়ার দুই শক্তি চিন ও ভারতের মধ্যে এক প্রতিযোগিতার বিষয় হয়ে উঠেছে। ঢাকার পরিকল্পিত ‘তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিস্টোরেশন’ প্রজেক্টের দিকে কয়েক বছর ধরে দৃষ্টি রয়েছে বেজিংয়ের। এর আনুমানিক খরচ ১০০ কোটি ডলার।

 

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব জমা দিয়েছে বেজিং। ভারতও আন্তঃসীমান্ত নদীর গুরুত্ব বিবেচনায় এই কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। ফলে ভারত ও চিনের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশাল এই প্রকল্পের কাজ কে পাবে অথবা কখন এর কাজ শুরু হবে সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এখনও কাউকে ডাকেনি। ভারত ও চিনের আগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এখনও নয়াদিল্লি থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি ঢাকা।

 

বিস্তারিত না জানিয়ে তিনি বলেন- চীনের প্রস্তাব সম্পর্কে আমি অবহিত। তিস্তা প্রকল্পের কাজ পেলে চিন শিলিগুড়ি করিডোরের কাছে নিজেদের উপস্থিতি নিশ্চিত করবে। শিলিগুড়ি করিডোর ‘চিকেন নেক’ হিসেবে পরিচিত। এটি হল একটি সংকীর্ণ উপত্যকা, যা ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করেছে। এ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়ে বাংলাদেশকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকে চিনা কূটনীতিকদের চাপ দেওয়ার দিকেও ভারতের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে।

 

ভারতের বিদেশসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা সম্প্রতি ঢাকায় গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিদেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করে ওই দিনই ফিরে গেছেন তিনি। বৈঠক শেষে আলোচ্য বিষয় প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেছেন, ‘তিস্তায় আমরা একটি বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি।

 

ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। সহায়তা প্রস্তাব নিয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে, সেটি আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। তাই আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়, এটি ভারতকে বলা হয়েছে।’  বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রোজেক্ট হাতে পেলে চিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার ভূরাজনৈতিক উপস্থিতি আরও মজবুত করবে যা চিন্তার কারণ হতে পারে ভারতের। কারণ এভাবে ভারত মহাসাগরেও চিনের আধিপত্য বাড়তে পারে!