০২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘নার্সদের যৌনদাসী’ বলে মন্তব্য! কাতারের এক কোম্পানি থেকে কাজ খোয়ালেন কেরলের ব্যক্তি

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৭ মে ২০২২, শনিবার
  • / 62

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম জড়িয়ে নার্সদের বিরুদ্ধে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগে কাতারে কর্মরত এক প্রবাসীকে তার চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল। ওই ব্যক্তি ‘নার্স’দের যৌনদাসী বলে মন্তব্য করেন। এই মন্তব্যের কারণেই চাকরি খোয়ালেন ওই ব্যক্তি।

আরও পড়ুন: ২৬ হাজার চাকরি বাতিলঃ শুনানি শেষ, রায় স্থগিত সুপ্রিম কোর্টে

জানা গিয়েছে, ওই অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শিশুপালন দুর্গাদাস। একটি হিন্দু সংগঠন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তার এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত শিশুপালন দুর্গাদাস কাতারে নাগরাজ প্রজেক্টে কর্মরত ছিলেন। তিরুবন্তপুরমে আয়োজিত একটি হিন্দু সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় মুসলিম সম্প্রদায়কে জড়িয়ে নার্সদের নিয়ে কটূক্তি করে বিতর্কের সূত্রপাত করেন শিশুপালন দুর্গাদাস।ওই হিন্দু সম্মেলনে শিশুপালনকে বলতে শোনা যায়, মুসলিমরা উপসাগরীয় অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে এখানে নার্সের কাজের টোপ দিয়ে মহিলাদের কেরল থেকে এখানে নিয়ে আসে। আর ওই অঞ্চলেই সন্ত্রাসীরা তাদের ‘যৌনদাসী’ হিসাবে ব্যবহার করছে।’  এর পরে কাজ হারান অভিযুক্ত শিশুপালন দুর্গাদাস। কাতারের মালয়ালম মিশনের আঞ্চলিক সমন্বয়কের পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয় তাকে। শিশুপালন দুর্গাদাস তিনি যে ফার্মে কাজ করতেন সেটি সৌদি আরব, মিশর, ও দুবাইতে রয়েছে।  ট্যুইটারে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার গোকুলচান বলেন, শিশুপাল দূর্গাদাস একজন একজন সার্টিফায়েড সংঘী। দুর্গাদাস শিশুপালন কাতার ভিত্তিক হিন্দু সম্মেলনে নার্সদের নিয়ে বলেন, কেরল থেকে নার্সদের নিয়ে যাওয়া হয় কাজের টোপ দিয়ে। সেখানে জঙ্গিরা তাদের যৌনদাসীর কাজে লাগায়। নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তার নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

গত ৫ মে মালায়ালম মিশন কাতার রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটরের পদ থেকে দুর্গাদাস শিশুপালনকে বহিষ্কার করা হয়।

এর পরেই দুর্গাদাস এই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক লাইভ করেন শুক্রবার। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি গত ৩০ বছর ধরে স্বয়ং সেবকসংঘে আছি। এর জন্য আমি গর্বিত। আমি একজন এনআরআই। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আমি উপসাগরীয় অঞ্চলে রয়েছি। তিনি আরও বলেন, এতদিন ধরে এখানে কাজ করার জন্য তিনি দেখেছেন ভুয়ো বিমান সংস্থাগুলি এখানে মহিলাদের কাজ দেওয়ার নামে প্রতারণা করে। নার্সিংয়ে কাজের নাম করে তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হয়। দুর্গাদাসের মতে এই ধরনের ভুয়ো এজেন্সিগুলি একাংশ রাজনীতিবিদদের মদদে কাজ করে। দুর্গাদাসের দাবি, ভারতীয় দূতাবাসের সহায়তায় তিনি এই ধরনের প্রতারিত মেয়েদের বাড়ি ফেরার সহায়তা করেছেন। দুর্গাদাস বলেন, তিনি নার্সদের অবস্থা নিয়ে একটি সিনেমা দেখেছেন যেখানে খ্রিস্টান অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যাল অ্যাকশন নেতা কেভিন পিটারকে দেখানো হয়েছে।

দুর্গাদাস জানিয়েছেন, তাকে অনন্তুপুরীতে হিন্দু মহাসম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই ইভেন্টের প্যানেলে ছিলেন কেভিন পিটার। কাজের টোপ দিয়ে নার্সদের এখানে এনে যৌনদাসী করে রাখার বিষয়টি তিনি শুনেছিলেন। সেই ধরনের একটি ভিডিওর ওপর ভিত্তি করে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।

দুর্গাদাস নার্সদের উদ্দেশে বলেন, আমার মন্তব্যের জন্য আমি সকল নার্সদের কাছে ক্ষমা চাইছি। তবে আমি জঙ্গি নিয়োগ সংস্থাগুলির ওপরে আমার কাজ চালিয়ে যাব। দূর্গাদাস আরও জানিয়েছেন, অনেকেই তার ভিডিও দেখে হয়তো বিভ্রান্ত হয়েছেন।

তবে নিজেকে সংঘী বলতে তার কোনও আপত্তি নেই জানিয়েছেন শিশুপালন দুর্গাদাস।

 

 

 

 

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘নার্সদের যৌনদাসী’ বলে মন্তব্য! কাতারের এক কোম্পানি থেকে কাজ খোয়ালেন কেরলের ব্যক্তি

আপডেট : ৭ মে ২০২২, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম জড়িয়ে নার্সদের বিরুদ্ধে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগে কাতারে কর্মরত এক প্রবাসীকে তার চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল। ওই ব্যক্তি ‘নার্স’দের যৌনদাসী বলে মন্তব্য করেন। এই মন্তব্যের কারণেই চাকরি খোয়ালেন ওই ব্যক্তি।

আরও পড়ুন: ২৬ হাজার চাকরি বাতিলঃ শুনানি শেষ, রায় স্থগিত সুপ্রিম কোর্টে

জানা গিয়েছে, ওই অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শিশুপালন দুর্গাদাস। একটি হিন্দু সংগঠন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তার এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত শিশুপালন দুর্গাদাস কাতারে নাগরাজ প্রজেক্টে কর্মরত ছিলেন। তিরুবন্তপুরমে আয়োজিত একটি হিন্দু সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় মুসলিম সম্প্রদায়কে জড়িয়ে নার্সদের নিয়ে কটূক্তি করে বিতর্কের সূত্রপাত করেন শিশুপালন দুর্গাদাস।ওই হিন্দু সম্মেলনে শিশুপালনকে বলতে শোনা যায়, মুসলিমরা উপসাগরীয় অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে এখানে নার্সের কাজের টোপ দিয়ে মহিলাদের কেরল থেকে এখানে নিয়ে আসে। আর ওই অঞ্চলেই সন্ত্রাসীরা তাদের ‘যৌনদাসী’ হিসাবে ব্যবহার করছে।’  এর পরে কাজ হারান অভিযুক্ত শিশুপালন দুর্গাদাস। কাতারের মালয়ালম মিশনের আঞ্চলিক সমন্বয়কের পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয় তাকে। শিশুপালন দুর্গাদাস তিনি যে ফার্মে কাজ করতেন সেটি সৌদি আরব, মিশর, ও দুবাইতে রয়েছে।  ট্যুইটারে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার গোকুলচান বলেন, শিশুপাল দূর্গাদাস একজন একজন সার্টিফায়েড সংঘী। দুর্গাদাস শিশুপালন কাতার ভিত্তিক হিন্দু সম্মেলনে নার্সদের নিয়ে বলেন, কেরল থেকে নার্সদের নিয়ে যাওয়া হয় কাজের টোপ দিয়ে। সেখানে জঙ্গিরা তাদের যৌনদাসীর কাজে লাগায়। নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তার নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

গত ৫ মে মালায়ালম মিশন কাতার রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটরের পদ থেকে দুর্গাদাস শিশুপালনকে বহিষ্কার করা হয়।

এর পরেই দুর্গাদাস এই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক লাইভ করেন শুক্রবার। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি গত ৩০ বছর ধরে স্বয়ং সেবকসংঘে আছি। এর জন্য আমি গর্বিত। আমি একজন এনআরআই। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আমি উপসাগরীয় অঞ্চলে রয়েছি। তিনি আরও বলেন, এতদিন ধরে এখানে কাজ করার জন্য তিনি দেখেছেন ভুয়ো বিমান সংস্থাগুলি এখানে মহিলাদের কাজ দেওয়ার নামে প্রতারণা করে। নার্সিংয়ে কাজের নাম করে তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হয়। দুর্গাদাসের মতে এই ধরনের ভুয়ো এজেন্সিগুলি একাংশ রাজনীতিবিদদের মদদে কাজ করে। দুর্গাদাসের দাবি, ভারতীয় দূতাবাসের সহায়তায় তিনি এই ধরনের প্রতারিত মেয়েদের বাড়ি ফেরার সহায়তা করেছেন। দুর্গাদাস বলেন, তিনি নার্সদের অবস্থা নিয়ে একটি সিনেমা দেখেছেন যেখানে খ্রিস্টান অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যাল অ্যাকশন নেতা কেভিন পিটারকে দেখানো হয়েছে।

দুর্গাদাস জানিয়েছেন, তাকে অনন্তুপুরীতে হিন্দু মহাসম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই ইভেন্টের প্যানেলে ছিলেন কেভিন পিটার। কাজের টোপ দিয়ে নার্সদের এখানে এনে যৌনদাসী করে রাখার বিষয়টি তিনি শুনেছিলেন। সেই ধরনের একটি ভিডিওর ওপর ভিত্তি করে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।

দুর্গাদাস নার্সদের উদ্দেশে বলেন, আমার মন্তব্যের জন্য আমি সকল নার্সদের কাছে ক্ষমা চাইছি। তবে আমি জঙ্গি নিয়োগ সংস্থাগুলির ওপরে আমার কাজ চালিয়ে যাব। দূর্গাদাস আরও জানিয়েছেন, অনেকেই তার ভিডিও দেখে হয়তো বিভ্রান্ত হয়েছেন।

তবে নিজেকে সংঘী বলতে তার কোনও আপত্তি নেই জানিয়েছেন শিশুপালন দুর্গাদাস।