০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি কর্মচারীদের ইফতার মজলিশে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩, রবিবার
  • / 153

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট উইদোদো নোটিশ জারি করে সরকারি কর্মচারীদের ইফতার মজলিশ আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা  দিয়েছেন। তিনি একে জরুরি উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, দেশ এখনও করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমান অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো রমযান মাসে সরকারি কর্মচারীদের ইফতার মাহফিলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটিতে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন। শনিবার ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম জাকার্তা পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তারা বিতর্কিত এ সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: world football: ২০২৬  ফুটবল বিশ্বকাপে ইসরাইলকে নিষিদ্ধের উদ্যোগ ঠেকাবে আমেরিকা  

মন্ত্রিসভা সচিব প্রামোনো আগুং এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে জানান, এটি জনসাধারণের জন্য প্রযোজ্য নয়। এটি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সরকারি সংস্থার প্রধানদের জন্য প্রযোজ্য। প্রামোনো সরকারের এ নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে যে, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধ পন্থায় উপার্জিত সম্পদের প্রদর্শনী করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণে কর্মকর্তাদের প্রেসিডেন্ট অনুরোধ করেছেন যেন তারা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দাওয়াত না দিয়ে সীমিত আকারে ইফতারের আয়োজন করেন।’

আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় বাড়ছে বিক্ষোভ, রাজধানীতে সেনা মোতায়েন

গত ফেব্রুয়ারি থেকে কর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চলছে। একজন মধ্যম পর্যায়ের কর কর্মকর্তার ছেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও বিত্ত প্রদর্শন করলে নতুন করে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। দেশের শীর্ষ কর কর্মকর্তাদের আয়ের উৎস নিয়ে সর্বস্তরে জনরোষ দেখা দেয়।

আরও পড়ুন: Trinamool protest stage: গান্ধিমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের মঞ্চ খুলছিল সেনা, খবর পেয়েই পৌঁছলেন মমতা

অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আয়কর রিটার্ন জমা না দেওয়ার আহ্বান জানান। ইফতার নিয়ে এই নির্দেশনার সমালোচনা করেছে দেশটির ইসলামি দলগুলো। তারা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দেশের মুসলিমদের স্বার্থবিরোধী কাজের অভিযোগ এনেছে। দলগুলো উল্লেখ করেছে, মহামারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক বড় বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে, যেগুলোয় অসংখ্য মানুষ এক জায়গায় জমায়েত হয়েছেন।

ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় মুসলিম সংস্থা নাহদলাতুল উলামার (এনইউ) সভাপতি ইয়াহিয়া চোলিল স্তাকুফ এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, মুসলমানদের রোযা ভাঙার জন্য বড় উৎসব আয়োজনের প্রয়োজন নেই। দরিদ্র মানুষ অথবা যারা যানজটে আটকে আছেন, তাদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমন কিছু করার প্রয়োজন নেই যা দেখে মনে হতে পারে আমরা ইফতার নয়, বরং বড় আকারের নৈশভোজে যোগ দিতে যাচ্ছি।’

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি কর্মচারীদের ইফতার মজলিশে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক

আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩, রবিবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট উইদোদো নোটিশ জারি করে সরকারি কর্মচারীদের ইফতার মজলিশ আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা  দিয়েছেন। তিনি একে জরুরি উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, দেশ এখনও করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমান অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো রমযান মাসে সরকারি কর্মচারীদের ইফতার মাহফিলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটিতে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন। শনিবার ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম জাকার্তা পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তারা বিতর্কিত এ সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: world football: ২০২৬  ফুটবল বিশ্বকাপে ইসরাইলকে নিষিদ্ধের উদ্যোগ ঠেকাবে আমেরিকা  

মন্ত্রিসভা সচিব প্রামোনো আগুং এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে জানান, এটি জনসাধারণের জন্য প্রযোজ্য নয়। এটি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সরকারি সংস্থার প্রধানদের জন্য প্রযোজ্য। প্রামোনো সরকারের এ নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে যে, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধ পন্থায় উপার্জিত সম্পদের প্রদর্শনী করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণে কর্মকর্তাদের প্রেসিডেন্ট অনুরোধ করেছেন যেন তারা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দাওয়াত না দিয়ে সীমিত আকারে ইফতারের আয়োজন করেন।’

আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় বাড়ছে বিক্ষোভ, রাজধানীতে সেনা মোতায়েন

গত ফেব্রুয়ারি থেকে কর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চলছে। একজন মধ্যম পর্যায়ের কর কর্মকর্তার ছেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও বিত্ত প্রদর্শন করলে নতুন করে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। দেশের শীর্ষ কর কর্মকর্তাদের আয়ের উৎস নিয়ে সর্বস্তরে জনরোষ দেখা দেয়।

আরও পড়ুন: Trinamool protest stage: গান্ধিমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের মঞ্চ খুলছিল সেনা, খবর পেয়েই পৌঁছলেন মমতা

অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আয়কর রিটার্ন জমা না দেওয়ার আহ্বান জানান। ইফতার নিয়ে এই নির্দেশনার সমালোচনা করেছে দেশটির ইসলামি দলগুলো। তারা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দেশের মুসলিমদের স্বার্থবিরোধী কাজের অভিযোগ এনেছে। দলগুলো উল্লেখ করেছে, মহামারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক বড় বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে, যেগুলোয় অসংখ্য মানুষ এক জায়গায় জমায়েত হয়েছেন।

ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় মুসলিম সংস্থা নাহদলাতুল উলামার (এনইউ) সভাপতি ইয়াহিয়া চোলিল স্তাকুফ এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, মুসলমানদের রোযা ভাঙার জন্য বড় উৎসব আয়োজনের প্রয়োজন নেই। দরিদ্র মানুষ অথবা যারা যানজটে আটকে আছেন, তাদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমন কিছু করার প্রয়োজন নেই যা দেখে মনে হতে পারে আমরা ইফতার নয়, বরং বড় আকারের নৈশভোজে যোগ দিতে যাচ্ছি।’