২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মুনির আহমদের দাবী, “গত বছর CRPF সদর দপ্তর থেকে অনুমতি পাওয়ার প্রায় এক মাস পরেই আমি বিয়ে করেছি। আমি এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করব।

অনুমতি নিয়েই পাকিস্তানি নারীর সঙ্গে বিয়ে করেছি দাবি CRPF জওয়ানের

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ৪ মে ২০২৫, রবিবার
  • / 129

পুবের কলম ডেস্ক: সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (CRPF)-এর জওয়ান মুনির আহমদকে বরখাস্ত করা হয়েছে পাকিস্তানি নাগরিক মেনাল খানের সঙ্গে বিয়ে করার তথ্য গোপন করার অভিযোগে। অভিযোগ আরও রয়েছে, মেনালের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও মুনির তাকে অবৈধভাবে ভারতে রেখেছিলেন। তবে মুনির আহমদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, তিনি আইন মেনেই এই বিয়ে করেছেন।

মুনির আহমদ PTI এর সাক্ষাৎকারে জানান, “গত বছর CRPF সদর দপ্তর থেকে অনুমতি পাওয়ার প্রায় এক মাস পরেই আমি বিয়ে করেছি। আমি এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করব। আমার পূর্ণ বিশ্বাস, আমি ন্যায়বিচার পাব।”

আরও পড়ুন: সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত পুনর্বিবেচনার জন্য পাকিস্তানের চিঠি

মুনির আরও বলেন, “আমি প্রথমে গণমাধ্যমে রিপোর্ট দেখে বরখাস্তের খবর জানতে পারি। পরে CRPF থেকে আমাকে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়, যেখানে জানানো হয় যে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি আমার ও আমার পরিবারের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। কারণ, আমি যথাযথভাবে পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে বিয়ে করার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছিলাম এবং সেই অনুমতিও পেয়েছিলাম।”

আরও পড়ুন: Operation Sindoor: অপারেশন সিঁদুরের পর এই প্রথমবার প্রকাশ্যে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

এই ঘটনা এমন এক সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে, যখন জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটন এলাকা পাহেলগাঁও-এ এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ইস্যু করা সব ভিসা বাতিল করেছে এবং সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে ফের ঋণ মঞ্জুর আইএমএফের, জানালেন পাক প্রধানমন্ত্রী

পাহেলগাঁও হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। একদিকে ভারত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান ভারতের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মুনির আহমদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ আরও রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্ব পাচ্ছে।

মুনির আহমদ জানান, তিনি CRPF সদর দপ্তরে যথাযথ নিয়মে তার বিয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং অনুমোদন পাওয়ার পরই তিনি পাকিস্তানি নাগরিক মেনাল খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর দাবি, মেনালের ভিসা সম্পর্কিত বিষয়েও তিনি সময়মতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন।

CRPF এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো না হলেও সূত্র অনুযায়ী, তদন্তে দেখা গেছে যে মুনির মেনালের ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও যথাযথ ব্যবস্থা নেননি, যা নিরাপত্তাজনিত দিক থেকে গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হয়েছে।

মুনির আহমদ বর্তমানে আইনি সহায়তা নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে প্রস্তুত হচ্ছেন। তাঁর আইনজীবী জানান, “আমরা আদালতে যাব এবং দেখাব, মুনির কোনো আইন ভাঙেননি। বরং তিনি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ে করেছেন এবং CRPF এর অনুমতি নিয়েই এটি করেছেন।”

ঘটনাটি কেবল ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক নয়, বরং বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সংবেদনশীল প্রেক্ষাপটে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, আদালত এই মামলায় কী রায় দেয় এবং মুনির আহমদের পেশাগত জীবন পুনরায় কোন পথে এগোয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মুনির আহমদের দাবী, “গত বছর CRPF সদর দপ্তর থেকে অনুমতি পাওয়ার প্রায় এক মাস পরেই আমি বিয়ে করেছি। আমি এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করব।

অনুমতি নিয়েই পাকিস্তানি নারীর সঙ্গে বিয়ে করেছি দাবি CRPF জওয়ানের

আপডেট : ৪ মে ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ডেস্ক: সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (CRPF)-এর জওয়ান মুনির আহমদকে বরখাস্ত করা হয়েছে পাকিস্তানি নাগরিক মেনাল খানের সঙ্গে বিয়ে করার তথ্য গোপন করার অভিযোগে। অভিযোগ আরও রয়েছে, মেনালের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও মুনির তাকে অবৈধভাবে ভারতে রেখেছিলেন। তবে মুনির আহমদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, তিনি আইন মেনেই এই বিয়ে করেছেন।

মুনির আহমদ PTI এর সাক্ষাৎকারে জানান, “গত বছর CRPF সদর দপ্তর থেকে অনুমতি পাওয়ার প্রায় এক মাস পরেই আমি বিয়ে করেছি। আমি এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করব। আমার পূর্ণ বিশ্বাস, আমি ন্যায়বিচার পাব।”

আরও পড়ুন: সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত পুনর্বিবেচনার জন্য পাকিস্তানের চিঠি

মুনির আরও বলেন, “আমি প্রথমে গণমাধ্যমে রিপোর্ট দেখে বরখাস্তের খবর জানতে পারি। পরে CRPF থেকে আমাকে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়, যেখানে জানানো হয় যে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি আমার ও আমার পরিবারের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। কারণ, আমি যথাযথভাবে পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে বিয়ে করার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছিলাম এবং সেই অনুমতিও পেয়েছিলাম।”

আরও পড়ুন: Operation Sindoor: অপারেশন সিঁদুরের পর এই প্রথমবার প্রকাশ্যে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

এই ঘটনা এমন এক সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে, যখন জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটন এলাকা পাহেলগাঁও-এ এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ইস্যু করা সব ভিসা বাতিল করেছে এবং সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে ফের ঋণ মঞ্জুর আইএমএফের, জানালেন পাক প্রধানমন্ত্রী

পাহেলগাঁও হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। একদিকে ভারত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান ভারতের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মুনির আহমদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ আরও রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্ব পাচ্ছে।

মুনির আহমদ জানান, তিনি CRPF সদর দপ্তরে যথাযথ নিয়মে তার বিয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং অনুমোদন পাওয়ার পরই তিনি পাকিস্তানি নাগরিক মেনাল খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর দাবি, মেনালের ভিসা সম্পর্কিত বিষয়েও তিনি সময়মতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন।

CRPF এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো না হলেও সূত্র অনুযায়ী, তদন্তে দেখা গেছে যে মুনির মেনালের ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও যথাযথ ব্যবস্থা নেননি, যা নিরাপত্তাজনিত দিক থেকে গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হয়েছে।

মুনির আহমদ বর্তমানে আইনি সহায়তা নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে প্রস্তুত হচ্ছেন। তাঁর আইনজীবী জানান, “আমরা আদালতে যাব এবং দেখাব, মুনির কোনো আইন ভাঙেননি। বরং তিনি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ে করেছেন এবং CRPF এর অনুমতি নিয়েই এটি করেছেন।”

ঘটনাটি কেবল ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক নয়, বরং বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সংবেদনশীল প্রেক্ষাপটে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, আদালত এই মামলায় কী রায় দেয় এবং মুনির আহমদের পেশাগত জীবন পুনরায় কোন পথে এগোয়।