০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ফর্মে উর্দু নয়, মুসলিম ভাষার উল্লেখ

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 352

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উর্দু নয়, ‘ মুসলিম ‘ নাকি এক ভাষা! এই অবদান দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পোর্টাল চালু হয়েছে। সেখানেই ফর্মে মুসলিমকে ভাষা হিসেবে লেখা হয়েছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তথাকথিত আবিষ্কার নিয়ে ইন্টারনেটে রসিকতার ঢল নেমেছে। সকলেরই প্রশ্ন, ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তপশিলের অন্তর্ভুক্ত যে ভাষা লক্ষ লক্ষ লোকের মাতৃভাষা, সেই উর্দু ভাষার কথা জানে না এক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।

আশ্চর্য, ভর্তির আবেদনপত্রে এমন অনেক ‘মণিমাণিক্য’ রয়েছে। যেমন, মাতৃভাষা হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘ বিহারি’, ‘চামার’, ‘মজদুর’, ‘দেহাতি’, ‘মুচি’, ‘কুর্মি’। কারণ ভাষা বোঝাতে পেশা এবং জাতপাতের কথা উল্লেখ করলেই হল। ডেমোক্রেটিক টিচার্স ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আভা দেব হাবিব বলেছেন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তির দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনপত্র ইসলামোফোবিক এর বেশি কিছু হতে পারে না।

তিনি বলেছেন, এটা দুঃখজনক। একে অজ্ঞানতার ফলও বলা যাবে না। একটা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কী করে এমন আবেদনপত্র তৈরি করতে পারে? আবেদনপত্রের নকশা বা চূড়ান্ত কাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞান কোনও পূর্ব শর্ত হতে পারে না। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এটা মনে রাখতে হবে যে, অন্য অনেক জনগোষ্ঠীর মতো মুসলিমরাও মানুষ এবং তাঁদের অনেকেরই মাতৃভাষা উর্দু, যা বহু সমৃদ্ধ সাহিত্যের সৃষ্টি করেছে।

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজিকিউটিভ কাউন্সিলের তরফে মিঠুরাজ ধুসিয়া বলেছেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এক নামকরা প্রতিষ্ঠানে এরকম ঘটনা ঘটবে, ভাবা যায় না। যা হয়েছে তা দুঃখজনক। শিক্ষাবিদ রুদ্রাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, এ হল দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজনকে কোণঠাসা করার এক অদ্ভুত প্রয়াস। একইসঙ্গে নিরপরাধ পড়ুয়াদের মন বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। এই ঘটনা আমাদের সংবিধানের সঙ্গেও উপহাস করার চেষ্টা বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন: PM’s degree: প্রধানমন্ত্রী মোদির স্নাতকের ফল জানাতে বাধ্য নয় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়: Delhi HC

শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুঝেছেন যে, বিষয়টি খুবই নিম্নস্তরের কাজ হয়ে গিয়েছে। তাই আপাতত পোর্টাল বন্ধ করে সংশোধন করা হচ্ছে। তবে কেউ ক্ষমা চাননি বা এর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি কেউ। দায় নেওয়া তো দূরের কথা।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ফর্মে উর্দু নয়, মুসলিম ভাষার উল্লেখ

আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উর্দু নয়, ‘ মুসলিম ‘ নাকি এক ভাষা! এই অবদান দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পোর্টাল চালু হয়েছে। সেখানেই ফর্মে মুসলিমকে ভাষা হিসেবে লেখা হয়েছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তথাকথিত আবিষ্কার নিয়ে ইন্টারনেটে রসিকতার ঢল নেমেছে। সকলেরই প্রশ্ন, ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তপশিলের অন্তর্ভুক্ত যে ভাষা লক্ষ লক্ষ লোকের মাতৃভাষা, সেই উর্দু ভাষার কথা জানে না এক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।

আশ্চর্য, ভর্তির আবেদনপত্রে এমন অনেক ‘মণিমাণিক্য’ রয়েছে। যেমন, মাতৃভাষা হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘ বিহারি’, ‘চামার’, ‘মজদুর’, ‘দেহাতি’, ‘মুচি’, ‘কুর্মি’। কারণ ভাষা বোঝাতে পেশা এবং জাতপাতের কথা উল্লেখ করলেই হল। ডেমোক্রেটিক টিচার্স ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আভা দেব হাবিব বলেছেন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তির দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনপত্র ইসলামোফোবিক এর বেশি কিছু হতে পারে না।

তিনি বলেছেন, এটা দুঃখজনক। একে অজ্ঞানতার ফলও বলা যাবে না। একটা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কী করে এমন আবেদনপত্র তৈরি করতে পারে? আবেদনপত্রের নকশা বা চূড়ান্ত কাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞান কোনও পূর্ব শর্ত হতে পারে না। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এটা মনে রাখতে হবে যে, অন্য অনেক জনগোষ্ঠীর মতো মুসলিমরাও মানুষ এবং তাঁদের অনেকেরই মাতৃভাষা উর্দু, যা বহু সমৃদ্ধ সাহিত্যের সৃষ্টি করেছে।

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজিকিউটিভ কাউন্সিলের তরফে মিঠুরাজ ধুসিয়া বলেছেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এক নামকরা প্রতিষ্ঠানে এরকম ঘটনা ঘটবে, ভাবা যায় না। যা হয়েছে তা দুঃখজনক। শিক্ষাবিদ রুদ্রাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, এ হল দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজনকে কোণঠাসা করার এক অদ্ভুত প্রয়াস। একইসঙ্গে নিরপরাধ পড়ুয়াদের মন বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। এই ঘটনা আমাদের সংবিধানের সঙ্গেও উপহাস করার চেষ্টা বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন: PM’s degree: প্রধানমন্ত্রী মোদির স্নাতকের ফল জানাতে বাধ্য নয় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়: Delhi HC

শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুঝেছেন যে, বিষয়টি খুবই নিম্নস্তরের কাজ হয়ে গিয়েছে। তাই আপাতত পোর্টাল বন্ধ করে সংশোধন করা হচ্ছে। তবে কেউ ক্ষমা চাননি বা এর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি কেউ। দায় নেওয়া তো দূরের কথা।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ