২৯ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জম্মু-কাশ্মীরে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত চেয়ে সরব বুদ্ধিজীবীরা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 19

নয়াদিল্লি : তিনটি সমাজ সংগঠন এবং ১২৪-র বেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি সংসদের কাছে জম্মু-কাশ্মীরে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করলেন। এঁরা যে চিঠি লিখেছেন তাতে বলা হয়েছে, আমরা ব্যথিত চিত্তে লক্ষ্য করছি যে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদে আলোচনার অনুমতি দেওয়া হল।

পহেলগাঁও এর সন্ত্রাসী হামলা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। তাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং যথাযথ প্রশ্ন উঠে এসেছে জনসমাজে। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা, বাহিনীর কৌশল, পুলিশি ব্যবস্থা, প্রশাসন এবং জম্মু-কাশ্মীর এর সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান গ্রহণে ব্যর্থতার প্রশ্ন জড়িত। পহেলগাঁও, সন্ত্রাসবাদের হাতছানি এবং গভীর সঙ্কটাপন্ন উপত্যকার গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক দ্বিদলীয় সমঝোতার লক্ষ্যে সংসদে এই সব অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আমরা আশা করি।

আরও পড়ুন: দাচিগামে ‘অপারেশন মহাদেব’: নিহত ৩ জঙ্গির সঙ্গে পহেলগাঁও হামলার প্রমাণ

কিন্তু মনে রাখতে হবে, উপত্যকার বড় অংশের মানুষ এইসব সমস্যার পাকে পড়ে সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন, তাঁরা মনে করেন, তাঁদের সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। বিরোধী সাংসদেরা একদিন আগে সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন পহেলগাঁও হানার পর এতদিন কেটে গেল, এখনও কেন অপরাধীরা ধরা পড়ল না? তাঁরা এই প্রশ্নে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে দায় নিতে বলেছিলেন।

আরও পড়ুন: পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদীরা ভারতে ঢুকল কীভাবে? কেন্দ্রকে কড়া প্রশ্ন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈয়ের

এই প্রসঙ্গেই আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলতে চাই। তা হল, এই আলোচনার বৃত্তে জম্মু-কাশ্মীর এর পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতি হানি এবং রাজ্যটিকে ভেঙে দুটুকরো করার প্রশ্ন কেন এল না? ২৭ জুলাই লেখা এই চিঠিতে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর এর পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। এই চিঠিতে প্রাক্তন আমলারা, প্রাক্তন সেনাকর্মী, সাংবাদিক, লেখক, শিক্ষাবিদ, মহিলা সমাজকর্মী এবং আইনজীবীরা স্বাক্ষর করেছেন।

আরও পড়ুন: বিরোধীদের লাগাতার চাপ, অবশেষে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে রাজি কেন্দ্রীয় সরকার

চিঠিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু কথা দিয়েছে যে, পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং সংবিধানের ফেডারেল কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রাখতে এটা জরুরি। আমাদের প্রজাতন্ত্রের সব রাজ্যই যাতে কেন্দ্রীয় এবং স্বৈরাচারী প্রভাবমুক্ত হতে পারে তার জন্যও এটা জরুরি। আমরা প্রস্তাব করছি সংবিধানের ১ বা ৩ অনুচ্ছেদে একটি ধারা যোগ করা দরকার, যাতে বলা থাকবে যে, কোনও রাজ্যকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা যাবে না।

৬ বছর ধরে অসাংবিধানিক ভাবে রাজ্যের মর্যাদাহানির প্রশ্নটি ঝুলে রয়েছে। সংবিধানের ফেডারেল কাঠামো ভেস্তে দিতে এরকম আর যেন না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই চিঠিতে যাঁরা স্বাক্ষর করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মণিশঙ্কর আইয়ার, সঞ্জয় বারু, অমিত ভাদুড়ি, জয়তী ঘোষ, আম্মু আব্রাহাম, তনবীর এইজাজ, হিলাল আহমেদ, অধ্যাপক অপূর্বানন্দ, প্রাক্তন কয়লা সচিব জি বালাকৃষ্ণন, ক্যাবিনেট সচিবের প্রাক্তন সহায়ক রানা ব্যানার্জি, অধ্যাপক প্রজিত বসু, লেখক মধু ভান্ডারি, নিলোফার ভগত, রাজা মুজ্জাফার ভাট, জাফর চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল কমল দেওয়ার, অধ্যাপকধ্যাপক সতীশ দেশপাণ্ডে, ওয়াজাত হাবিবুল্লাহ, রামচন্দ্র গুহ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোপাল পিল্লাই, রাম পুনিয়ানি, জুলিও রিবেরিও, মীরা সংঘমিত্রা, অধ্যাপক তনিকা সরকার, নন্দিনী সুন্দর প্রমুখ এবং রাজস্থানের মজদুর কিষাণ শক্তি সংগঠন, সতর্ক নাগরিক সংগঠন এবং ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস ইন জম্মু-কাশ্মীর।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জম্মু-কাশ্মীরে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত চেয়ে সরব বুদ্ধিজীবীরা

আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

নয়াদিল্লি : তিনটি সমাজ সংগঠন এবং ১২৪-র বেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি সংসদের কাছে জম্মু-কাশ্মীরে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করলেন। এঁরা যে চিঠি লিখেছেন তাতে বলা হয়েছে, আমরা ব্যথিত চিত্তে লক্ষ্য করছি যে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদে আলোচনার অনুমতি দেওয়া হল।

পহেলগাঁও এর সন্ত্রাসী হামলা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। তাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং যথাযথ প্রশ্ন উঠে এসেছে জনসমাজে। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা, বাহিনীর কৌশল, পুলিশি ব্যবস্থা, প্রশাসন এবং জম্মু-কাশ্মীর এর সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান গ্রহণে ব্যর্থতার প্রশ্ন জড়িত। পহেলগাঁও, সন্ত্রাসবাদের হাতছানি এবং গভীর সঙ্কটাপন্ন উপত্যকার গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক দ্বিদলীয় সমঝোতার লক্ষ্যে সংসদে এই সব অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আমরা আশা করি।

আরও পড়ুন: দাচিগামে ‘অপারেশন মহাদেব’: নিহত ৩ জঙ্গির সঙ্গে পহেলগাঁও হামলার প্রমাণ

কিন্তু মনে রাখতে হবে, উপত্যকার বড় অংশের মানুষ এইসব সমস্যার পাকে পড়ে সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন, তাঁরা মনে করেন, তাঁদের সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। বিরোধী সাংসদেরা একদিন আগে সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন পহেলগাঁও হানার পর এতদিন কেটে গেল, এখনও কেন অপরাধীরা ধরা পড়ল না? তাঁরা এই প্রশ্নে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে দায় নিতে বলেছিলেন।

আরও পড়ুন: পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদীরা ভারতে ঢুকল কীভাবে? কেন্দ্রকে কড়া প্রশ্ন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈয়ের

এই প্রসঙ্গেই আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলতে চাই। তা হল, এই আলোচনার বৃত্তে জম্মু-কাশ্মীর এর পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতি হানি এবং রাজ্যটিকে ভেঙে দুটুকরো করার প্রশ্ন কেন এল না? ২৭ জুলাই লেখা এই চিঠিতে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর এর পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। এই চিঠিতে প্রাক্তন আমলারা, প্রাক্তন সেনাকর্মী, সাংবাদিক, লেখক, শিক্ষাবিদ, মহিলা সমাজকর্মী এবং আইনজীবীরা স্বাক্ষর করেছেন।

আরও পড়ুন: বিরোধীদের লাগাতার চাপ, অবশেষে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে রাজি কেন্দ্রীয় সরকার

চিঠিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু কথা দিয়েছে যে, পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং সংবিধানের ফেডারেল কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রাখতে এটা জরুরি। আমাদের প্রজাতন্ত্রের সব রাজ্যই যাতে কেন্দ্রীয় এবং স্বৈরাচারী প্রভাবমুক্ত হতে পারে তার জন্যও এটা জরুরি। আমরা প্রস্তাব করছি সংবিধানের ১ বা ৩ অনুচ্ছেদে একটি ধারা যোগ করা দরকার, যাতে বলা থাকবে যে, কোনও রাজ্যকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা যাবে না।

৬ বছর ধরে অসাংবিধানিক ভাবে রাজ্যের মর্যাদাহানির প্রশ্নটি ঝুলে রয়েছে। সংবিধানের ফেডারেল কাঠামো ভেস্তে দিতে এরকম আর যেন না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই চিঠিতে যাঁরা স্বাক্ষর করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মণিশঙ্কর আইয়ার, সঞ্জয় বারু, অমিত ভাদুড়ি, জয়তী ঘোষ, আম্মু আব্রাহাম, তনবীর এইজাজ, হিলাল আহমেদ, অধ্যাপক অপূর্বানন্দ, প্রাক্তন কয়লা সচিব জি বালাকৃষ্ণন, ক্যাবিনেট সচিবের প্রাক্তন সহায়ক রানা ব্যানার্জি, অধ্যাপক প্রজিত বসু, লেখক মধু ভান্ডারি, নিলোফার ভগত, রাজা মুজ্জাফার ভাট, জাফর চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল কমল দেওয়ার, অধ্যাপকধ্যাপক সতীশ দেশপাণ্ডে, ওয়াজাত হাবিবুল্লাহ, রামচন্দ্র গুহ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোপাল পিল্লাই, রাম পুনিয়ানি, জুলিও রিবেরিও, মীরা সংঘমিত্রা, অধ্যাপক তনিকা সরকার, নন্দিনী সুন্দর প্রমুখ এবং রাজস্থানের মজদুর কিষাণ শক্তি সংগঠন, সতর্ক নাগরিক সংগঠন এবং ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস ইন জম্মু-কাশ্মীর।