০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্মতলায় আইএসএফ কর্মী-পুলিশের ধুন্ধুমার কাণ্ড, আটক নওসাদ-বিশ্বজিতরা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২১ জানুয়ারী ২০২৩, শনিবার
  • / 69

পুবের কলম প্রতিবেদক: শনিবার কলকাতার রানী রাসমনি রোডে ছিল আইএসএফ অর্থাৎ- ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সমাবেশ। সেই সমাবেশ ও আইএসএফ কর্মীদের অবস্থান-বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বিকালে পুলিশের সঙ্গে ধুন্ধুমার কাণ্ড  দেখা দেয়। বলা চলে এ দিন ধর্মতলা চত্বর কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ইন্ডিয়ান  সেকুলার ফ্রন্টের জমায়েতে আসার পথে সকালেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে আইএসএফ ও তৃণমূল কর্মীদের  একপ্রস্থ সংঘর্ষ হয়। বিকেলে তার রেশ এসে পড়ে কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায়। জানা গিয়েছে, পুলিশ আটক করে  আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী, বিশ্বজিৎ মাইতি-সহ বেশ কয়েকজন।

 

আরও পড়ুন: গ্রেফতার Sonam Wangchuk! ‘তৈরিই ছিলাম’ বললেন লাদাখের ‘র‍্যাঞ্চো’

এ দিন কলকাতার সমাবেশ থেকে ভাঙড়ের তৃণমূলের কয়েকজন নেতার নাম করে তাদের গ্রেফতারের দাবি তোলেন  নওসাদ সিদ্দিকী। এক সময় আইএসএফ কর্মীরা ধর্মতলায় অবরোধ শুরু করেন। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে  আইএসএফ কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে মানুষকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পালটা পুলিশকে লক্ষ্য  করে জুতো ছোঁড়ার অভিযোগও ওঠে। পুলিশ লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাসের শেল পর্যন্ত ব্যবহার করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হন বেশ কয়েকজন আইএসএফ কর্মী। পুলিশের লাঠির আঘাতে নওসাদ সিদ্দিকি আহত হন বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের ইটের ঘায়ে ডিসি সাউথ আকাশ মেঘারিয়া আহত হয়েছেন বলে পালটা অভিযোগ।

আরও পড়ুন: ডায়মন্ডহারবারে গ্রেফতার ভুয়ো ৫ সরকারি আধিকারিক

 

আরও পড়ুন: বারুইপুরে ধৃত বাংলাদেশি মহিলা

এ দিন সকালে আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তাল হয় ভাঙড়। দুই দলের সংঘর্ষ, বোমাবাজি থেকে ইটবৃষ্টিতে  রণক্ষেত্র ভাঙড়ের হাতিশালা। তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন লাগিয়ে দেওয়ার  অভিযোগ আইসএফ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর গাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

 

জানা গিয়েছে, দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কলকাতার সভায় ভাঙড় থেকে যাওয়ার পথে হাতিশালায় অশান্তি বাঁধে।  দুই দলের কর্মীদের মধ্যে বচসা থেকে ইটবৃষ্টি, এমনকী বোমার শব্দ শোনা যায় বলে খবর। পর পর তিনটি তৃণমূল   কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি দলনেত্রীর ছবি থেকে দলীয়   ফ্ল্যাগ ছিঁড়ে দেওয়া ও তৃণমূল নেতা জুলফিকার মোল্লাকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগও ওঠে।

 

অগ্নিগর্ভ হাতিশালায় ছুটে যান বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। সেই সময় তাঁর উপরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।   কলকাতা পুলিশের বিশাল পুলিশ বাহিনী বিধায়কের গাড়ি ব্যারিকেড করে বার করে দিচ্ছিলেন। যদিও রাস্তার অপর দিক  থেকে এক দল তৃণমূল কর্মী নওসাদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট, লাঠি ছুঁড়তে থাকেন। তাতে বিধায়কের গাড়ির কাঁচ ভেঙে  যায়। আহত হন খোদ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।

 

অপরদিকে, ঘটনার পর নওসাদ সিদ্দিকীর গ্রেফতারির দাবি তুলে হাতিশালা সিক্স লেন অবরোধ করেন তৃণমূল নেতা   আরাবুল ইসলাম, আবদুর রহিমারা। আরাবুলের বক্তব্য, ‘ভাঙড়ে নওসাদ সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। অবিলম্বে নওসাদকে   গ্রেফতার করতে হবে।’ পালটা নওসাদ সিদ্দিকী আইএসএফ কর্মীদের উপরে হামলার ঘটনায় আরাবুল ইসলাম-সহ   তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন। নওসাদ সিদ্দিকী জানান, ‘তৃণমূল নেতা জুলফিকার মোল্লা আইএসএফ   কর্মীদের উপরে প্রথমে হামলা চালায়, মারধর করে। তার পর দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। আমি পরিস্থিতি সামল   দিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশের সামনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমার গাড়িতে হামলা চালায়।’

 

এ নিয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদ হাসান জানান, ‘ওই কাণ্ডে দু’পক্ষের তরফেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ওই কাণ্ডে আটক করা হয়েছে দু’পক্ষের কয়েকজন সমর্থককে।’

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ধর্মতলায় আইএসএফ কর্মী-পুলিশের ধুন্ধুমার কাণ্ড, আটক নওসাদ-বিশ্বজিতরা

আপডেট : ২১ জানুয়ারী ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: শনিবার কলকাতার রানী রাসমনি রোডে ছিল আইএসএফ অর্থাৎ- ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সমাবেশ। সেই সমাবেশ ও আইএসএফ কর্মীদের অবস্থান-বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বিকালে পুলিশের সঙ্গে ধুন্ধুমার কাণ্ড  দেখা দেয়। বলা চলে এ দিন ধর্মতলা চত্বর কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ইন্ডিয়ান  সেকুলার ফ্রন্টের জমায়েতে আসার পথে সকালেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে আইএসএফ ও তৃণমূল কর্মীদের  একপ্রস্থ সংঘর্ষ হয়। বিকেলে তার রেশ এসে পড়ে কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায়। জানা গিয়েছে, পুলিশ আটক করে  আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী, বিশ্বজিৎ মাইতি-সহ বেশ কয়েকজন।

 

আরও পড়ুন: গ্রেফতার Sonam Wangchuk! ‘তৈরিই ছিলাম’ বললেন লাদাখের ‘র‍্যাঞ্চো’

এ দিন কলকাতার সমাবেশ থেকে ভাঙড়ের তৃণমূলের কয়েকজন নেতার নাম করে তাদের গ্রেফতারের দাবি তোলেন  নওসাদ সিদ্দিকী। এক সময় আইএসএফ কর্মীরা ধর্মতলায় অবরোধ শুরু করেন। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে  আইএসএফ কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে মানুষকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পালটা পুলিশকে লক্ষ্য  করে জুতো ছোঁড়ার অভিযোগও ওঠে। পুলিশ লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাসের শেল পর্যন্ত ব্যবহার করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হন বেশ কয়েকজন আইএসএফ কর্মী। পুলিশের লাঠির আঘাতে নওসাদ সিদ্দিকি আহত হন বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের ইটের ঘায়ে ডিসি সাউথ আকাশ মেঘারিয়া আহত হয়েছেন বলে পালটা অভিযোগ।

আরও পড়ুন: ডায়মন্ডহারবারে গ্রেফতার ভুয়ো ৫ সরকারি আধিকারিক

 

আরও পড়ুন: বারুইপুরে ধৃত বাংলাদেশি মহিলা

এ দিন সকালে আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তাল হয় ভাঙড়। দুই দলের সংঘর্ষ, বোমাবাজি থেকে ইটবৃষ্টিতে  রণক্ষেত্র ভাঙড়ের হাতিশালা। তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন লাগিয়ে দেওয়ার  অভিযোগ আইসএফ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর গাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

 

জানা গিয়েছে, দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কলকাতার সভায় ভাঙড় থেকে যাওয়ার পথে হাতিশালায় অশান্তি বাঁধে।  দুই দলের কর্মীদের মধ্যে বচসা থেকে ইটবৃষ্টি, এমনকী বোমার শব্দ শোনা যায় বলে খবর। পর পর তিনটি তৃণমূল   কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি দলনেত্রীর ছবি থেকে দলীয়   ফ্ল্যাগ ছিঁড়ে দেওয়া ও তৃণমূল নেতা জুলফিকার মোল্লাকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগও ওঠে।

 

অগ্নিগর্ভ হাতিশালায় ছুটে যান বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। সেই সময় তাঁর উপরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।   কলকাতা পুলিশের বিশাল পুলিশ বাহিনী বিধায়কের গাড়ি ব্যারিকেড করে বার করে দিচ্ছিলেন। যদিও রাস্তার অপর দিক  থেকে এক দল তৃণমূল কর্মী নওসাদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট, লাঠি ছুঁড়তে থাকেন। তাতে বিধায়কের গাড়ির কাঁচ ভেঙে  যায়। আহত হন খোদ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।

 

অপরদিকে, ঘটনার পর নওসাদ সিদ্দিকীর গ্রেফতারির দাবি তুলে হাতিশালা সিক্স লেন অবরোধ করেন তৃণমূল নেতা   আরাবুল ইসলাম, আবদুর রহিমারা। আরাবুলের বক্তব্য, ‘ভাঙড়ে নওসাদ সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। অবিলম্বে নওসাদকে   গ্রেফতার করতে হবে।’ পালটা নওসাদ সিদ্দিকী আইএসএফ কর্মীদের উপরে হামলার ঘটনায় আরাবুল ইসলাম-সহ   তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন। নওসাদ সিদ্দিকী জানান, ‘তৃণমূল নেতা জুলফিকার মোল্লা আইএসএফ   কর্মীদের উপরে প্রথমে হামলা চালায়, মারধর করে। তার পর দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। আমি পরিস্থিতি সামল   দিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশের সামনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমার গাড়িতে হামলা চালায়।’

 

এ নিয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদ হাসান জানান, ‘ওই কাণ্ডে দু’পক্ষের তরফেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ওই কাণ্ডে আটক করা হয়েছে দু’পক্ষের কয়েকজন সমর্থককে।’