রোযার সময় পরিবর্তন আসে খাদ্যাভ্যাসে, এই সময় এই খাবার গুলি এড়িয়ে চলাই ভালো

- আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, শনিবার
- / 10
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইফতারে পুষ্টিকর আহারের দিকে সব সময় নজর দিতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। রোযার সময় কি খাওয়া উচিত, কতটা ক্যালোরি প্রয়োজন তা নিয়ে পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রায় দুই হাজার ক্যালোরি সমপরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হয়। সেখানে রোযার সময় একটু পরিবর্তন আসে খাবারের তালিকায়। এই সময় এক থেকে দেড় হাজার ক্যালোরি খাবার গ্রহণ যথেষ্ট। কারণ রোযায় অল্প খাবার গ্রহণ করলেই অটোফ্যাজি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের ক্ষতিকর কোষগুলো পরিষ্কার হয়। তাই অন্যান্য সময় যে পরিমাণ খাবার খাওয়া যায়, রোযায় তার চেয়ে এক তৃতীয়াংশ কম খেতে হবে। রোযা রাখার পর ইফতার একটি গুরুত্বপূর্ণ আহার।
অনেকেরই ধারনা নেই একটি পুষ্টিকর ইফতার কিভাবে তৈরি করতে হয়। সাধারণত যে ইফতারগুলো আমরা গ্রহণ করে থাকি তা খেতে মজাদার হলেও স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর। সুস্থ, স্বাস্থ্যবান রোজাদারের জন্য ইফতারিতে খেজুর বা খোরমা, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত, কচি শসা, পেঁয়াজি, বুট, ফরমালিন অথবা ক্যালসিয়াম কার্বাইডমুক্ত মৌসুমি ফল থাকা ভালো। ফলমূলে ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং সহজে তা হজম হয়।
জেনে নেওয়া যাক ইফতারের খাদ্য সম্পর্কে
প্রথমে খেজুর দিয়ে রোজা ভেঙে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর মূল আহার শুরু করা উচিত। এতে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা যায়। পর্যাপ্ত জল পান করুন। তাড়াহুড়ো না করে আস্তে আস্তে সময় নিয়ে খাবার গ্রহণ করা উচিৎ। খেজুর শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম। খেজুরের মধ্যে শর্করা ছাড়াও প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, চারটি মাঝারি সাইজের (৩৫ গ্রাম) খেজুরের মধ্যে প্রায় ১০০ ক্যালোরি রয়েছে। ইফতারে চার-পাঁচটি খেজুর খাওয়া যেতে পারে।
ইফতারে কলা অন্যতম। একটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালোরি রয়েছে।
ছোলা-বুট খাওয়া যেতে পারে। ৫০ গ্রাম ছোলা-বুটে প্রায় ১৮০ ক্যালোরি রয়েছে। ছোলা-বুট অল্প পরিমাণে খাবেন। ২০-২৫ গ্রামের চেয়ে বেশি না খাওয়াই ভালো।
একটি ডিম খাওয়া যেতে পারে, একটি ডিম থেকে পাওয়া যায় ৮০ ক্যালোরি। তরমুজ, আপেল, কমলা এই ফলগুলিতে জলের পরিমাণ বেশি। তাই এগুলি খাওয়া ভালো। এছাড়াও খাওয়া যেতে পারে, ডাবের জল, ইসবগুলের ভুসি, লেবুর শরবত।
ইফতারে কী খাওয়া উচিৎ নয়:
ইফতারে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। যেমন পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলিপি প্রভৃতি। একসঙ্গে বেশি খাবার খাওয়া ঠিক নয়।
টকজাতীয় ফলের ক্ষেত্রেও সাবধানতা থাকা দরকার। এই ধরনের ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, তারপরও টকজাতীয় ফলে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে। তাই রোযার সময় টক ফল সাবধানতার সঙ্গে খেতে হবে। ভালো হয় রাতের খাবার শেষ করে খেলে। টমেটো প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড ও ম্যালিক এড থাকে যা পাকস্থলিতে ইরিটেশন তৈরি করে। তাই টমেটো বেশি পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। ঝাল-মশলা যুক্ত খাবার, কাঁচা লঙ্কা না খাওয়াই ভালো।
গরম খাবার যেমন- চা, কফি ইত্যাদি পাকস্থলিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই রোযার সময় চা, কফি ইত্যাদি পরিহার করে চলা ভালো।
রোযার মাসে যেহেতু আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও সময়ের পরিবর্তন আসে। এই সময়ে সুস্থ থাকতে এই নিয়মগুলি মেনে চলাই ভালো।