১৬ নভেম্বর ২০২৫, রবিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ

বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন চালিয়ে যেতে পারবে নির্বাচন কমিশন

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 112

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision – SIR) প্রক্রিয়া স্থগিতের আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন (ECI) এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে। তবে আদালত নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে যে, তালিকা সংশোধনের সময় আধার কার্ড, ভোটার আইডি (EPIC) ও রেশন কার্ডকে প্রমাণপত্র হিসেবে বিবেচনা করা হোক।

 

বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত বলেছে, ভোটার যাচাইয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ১১টি নথির তালিকা সম্পূর্ণ নয়, তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে ওই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নথিকেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করা উচিত। যদিও কমিশন এই তিনটি নথি গ্রহণ করবে কি না, তা তাদের নিজস্ব বিবেচনার ওপর নির্ভর করবে।

 

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, অতিরিক্ত নথির নাম স্পষ্টভাবে আদেশে উল্লেখ করা হলে SIR প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। তবে বিচারপতি ধুলিয়া সাফ জানিয়ে দেন, “আমরা বলছি, এটি আপনার বিবেচনার বিষয়। যদি আপনার গ্রহণ না করার যুক্তিযুক্ত কারণ থাকে, তবে তা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন—কিন্তু সেই কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।”

বিচারপতিরা বলেন, “সংশোধিত তালিকার খসড়া প্রকাশ, আপত্তি গ্রহণ ও চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতির জন্য যে সময় নির্ধারিত হয়েছে, তা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত—যা নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে যথাযথ নয়।”

 

আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মামলাটি আবার শুনানি হবে ২৮ জুলাই। এর আগে নির্বাচন কমিশনকে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে এবং যদি প্রয়োজন হয়, আবেদনকারীরা পাল্টা জবাব ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে দাখিল করতে পারবেন।

 

এই মামলায় আবেদনকারীদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল, এ. এম. সিংভি, গোপাল শংকরনারায়ণন এবং শাদান ফারাসাত অংশ নেন। সিব্বল বলেন, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। সিংভি বলেন, “৮ কোটি ভোটারের মধ্যে ৪ কোটিকে পুনরায় যাচাই করতে বলা হয়েছে।”

 

শংকরনারায়ণন অভিযোগ করেন, “তারা আধার বা ভোটার আইডি কিছুই মানতে চায় না।”অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, আবেদনকারীরা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়েছেন—তাই আদালতের উচিত স্পষ্টভাবে জানানো যে কমিশন প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে।

 

বিচারপতি ধুলিয়া বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছি। আপনি কাজ চালিয়ে যান।”আদালতে আবেদনকারীরা বলেন, যেহেতু ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ হবে ১ আগস্টে, তাই এই মুহূর্তে তারা কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দাবি করছেন না।

Tag :

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ

বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন চালিয়ে যেতে পারবে নির্বাচন কমিশন

আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision – SIR) প্রক্রিয়া স্থগিতের আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন (ECI) এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে। তবে আদালত নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে যে, তালিকা সংশোধনের সময় আধার কার্ড, ভোটার আইডি (EPIC) ও রেশন কার্ডকে প্রমাণপত্র হিসেবে বিবেচনা করা হোক।

 

বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত বলেছে, ভোটার যাচাইয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ১১টি নথির তালিকা সম্পূর্ণ নয়, তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে ওই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নথিকেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করা উচিত। যদিও কমিশন এই তিনটি নথি গ্রহণ করবে কি না, তা তাদের নিজস্ব বিবেচনার ওপর নির্ভর করবে।

 

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, অতিরিক্ত নথির নাম স্পষ্টভাবে আদেশে উল্লেখ করা হলে SIR প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। তবে বিচারপতি ধুলিয়া সাফ জানিয়ে দেন, “আমরা বলছি, এটি আপনার বিবেচনার বিষয়। যদি আপনার গ্রহণ না করার যুক্তিযুক্ত কারণ থাকে, তবে তা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন—কিন্তু সেই কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।”

বিচারপতিরা বলেন, “সংশোধিত তালিকার খসড়া প্রকাশ, আপত্তি গ্রহণ ও চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতির জন্য যে সময় নির্ধারিত হয়েছে, তা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত—যা নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে যথাযথ নয়।”

 

আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মামলাটি আবার শুনানি হবে ২৮ জুলাই। এর আগে নির্বাচন কমিশনকে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে এবং যদি প্রয়োজন হয়, আবেদনকারীরা পাল্টা জবাব ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে দাখিল করতে পারবেন।

 

এই মামলায় আবেদনকারীদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল, এ. এম. সিংভি, গোপাল শংকরনারায়ণন এবং শাদান ফারাসাত অংশ নেন। সিব্বল বলেন, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। সিংভি বলেন, “৮ কোটি ভোটারের মধ্যে ৪ কোটিকে পুনরায় যাচাই করতে বলা হয়েছে।”

 

শংকরনারায়ণন অভিযোগ করেন, “তারা আধার বা ভোটার আইডি কিছুই মানতে চায় না।”অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, আবেদনকারীরা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়েছেন—তাই আদালতের উচিত স্পষ্টভাবে জানানো যে কমিশন প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে।

 

বিচারপতি ধুলিয়া বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছি। আপনি কাজ চালিয়ে যান।”আদালতে আবেদনকারীরা বলেন, যেহেতু ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ হবে ১ আগস্টে, তাই এই মুহূর্তে তারা কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দাবি করছেন না।