০৫ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানে রোবট বানালেন ষাটঊর্ধ্ব অতনু

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার
  • / 17

কিবরিয়া আনসারী: প্রশ্ন করা হলে উত্তর দেয়। পড়তে চাইলে শিক্ষকের ভূমিকাতেও দেখা যায়। এ কোনও মানুষ নয়, চারপেয়ে পোষ্যও নয়। যন্ত্রপাতি দিয়ে গড়া একটি আস্ত রোবট। ষাটঊর্ধ্ব হাওড়ার বাসিন্দা অতনু ঘোষ রোবট বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন এলাকায়। পেশায় সরকারি হাসপাতালের কর্মী ছিলেন তিনি। চাকরি থেকে অবস্র নেওয়ার প্র কি করবেন ভাবছিলেন! হঠাৎ মনে হয় রোবট তৈরি করবেন, যা সামাজিক কাজে ভূমিকা রাখবে। দীর্ঘ অধ্যাবসায় ও পরিশ্রমে নিজস্ব প্রযুক্তিতে দুটি রোবট বানিয়েছেন তিনি। তাঁর তৈরি রোবট দুটির নাম রেখেছেন কৃতি ও ব্র্যাভো।

 

জানা গিয়েছে, সচেতনতা ও শিক্ষাদানের কাজে ব্যবহার করতে ব্র্যাভো রোবটটিকে ডিজাইন করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদান, ডেঙ্গুর মতো রোগ সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার মত কাজ অনায়াসে করতে পারে রোবটটি। এমনকি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে একজন ওয়েটার হিসেবেও কাজ করতে পারে ব্র্যাভো। অতনু ঘোষ বলেন, বাবা নৃপেন্দ্রনাথ ঘোষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি বিভাগে গবেষণার সরঞ্জাম ডিজাইনার হিসাবে কাজ করেছিলেন। বাবার কাছেই রোবট ডিজাইন করা শিখেছেন তিনি।

 

১৮ বছর বয়সে ১৯৭৯ সালে প্রথম রিমোট নিয়ন্ত্রিত একটি রোবট বানিয়ে তাক লাগিয়েছিলেন তিনি। প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন অনেক। এমনকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকেও প্রশংসা অর্জন করেছিলেন অতনু ঘোষ। তিনি বলেন, ‘’কৃতি’ আমার পাইলট প্রজেক্ট ছিল। কোভিড মহামারী চলাকালীন চিকিৎসায় সাহায্য করতে রোবটটি তৈরি করি। কোভিডে হাসপাতালে রোগী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে ওষুধ সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। চলতি বছরে চিকিৎসকদের পরামর্শে প্রতিবন্ধী শিশুদের শব্দ, রং এবং আঁকা শেখার জন্য ‘ব্র্যাভো’ নামে আরেকটি রোবট তৈরি করেছি। এটি ডেঙ্গুর মতো রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পারে এবং ওয়েটার হিসাবেও কাজ করতে পারে’।

 

‘রোবট চাই না, চাকর চাই। রোবটমুক্ত বাংলা চাই!’ সম্প্রতি সত্যজিৎ রায়ের কাহিনি অবলম্বনে ‘অনুকূল’ শর্টফিল্মে এমনই সংলাপ শোনা গিয়েছিল। তবে বাংলায় রোবট ভবিষ্যতে দেখা যাবে কি না তা সংশয় ছিল। অতনু বাবুর হাত ধরেই বাংলায় বানিয়ে ফেললেন কৃতি ও ব্র্যাভো রোবট। নিজের খরচেই রোবট দুটি তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের তরফে আর্থিক সহায়তা পেলে জনস্বার্থে এধরনের আরও রোবট তৈরি করতে পারবেন।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানে রোবট বানালেন ষাটঊর্ধ্ব অতনু

আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার

কিবরিয়া আনসারী: প্রশ্ন করা হলে উত্তর দেয়। পড়তে চাইলে শিক্ষকের ভূমিকাতেও দেখা যায়। এ কোনও মানুষ নয়, চারপেয়ে পোষ্যও নয়। যন্ত্রপাতি দিয়ে গড়া একটি আস্ত রোবট। ষাটঊর্ধ্ব হাওড়ার বাসিন্দা অতনু ঘোষ রোবট বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন এলাকায়। পেশায় সরকারি হাসপাতালের কর্মী ছিলেন তিনি। চাকরি থেকে অবস্র নেওয়ার প্র কি করবেন ভাবছিলেন! হঠাৎ মনে হয় রোবট তৈরি করবেন, যা সামাজিক কাজে ভূমিকা রাখবে। দীর্ঘ অধ্যাবসায় ও পরিশ্রমে নিজস্ব প্রযুক্তিতে দুটি রোবট বানিয়েছেন তিনি। তাঁর তৈরি রোবট দুটির নাম রেখেছেন কৃতি ও ব্র্যাভো।

 

জানা গিয়েছে, সচেতনতা ও শিক্ষাদানের কাজে ব্যবহার করতে ব্র্যাভো রোবটটিকে ডিজাইন করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদান, ডেঙ্গুর মতো রোগ সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার মত কাজ অনায়াসে করতে পারে রোবটটি। এমনকি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে একজন ওয়েটার হিসেবেও কাজ করতে পারে ব্র্যাভো। অতনু ঘোষ বলেন, বাবা নৃপেন্দ্রনাথ ঘোষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি বিভাগে গবেষণার সরঞ্জাম ডিজাইনার হিসাবে কাজ করেছিলেন। বাবার কাছেই রোবট ডিজাইন করা শিখেছেন তিনি।

 

১৮ বছর বয়সে ১৯৭৯ সালে প্রথম রিমোট নিয়ন্ত্রিত একটি রোবট বানিয়ে তাক লাগিয়েছিলেন তিনি। প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন অনেক। এমনকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকেও প্রশংসা অর্জন করেছিলেন অতনু ঘোষ। তিনি বলেন, ‘’কৃতি’ আমার পাইলট প্রজেক্ট ছিল। কোভিড মহামারী চলাকালীন চিকিৎসায় সাহায্য করতে রোবটটি তৈরি করি। কোভিডে হাসপাতালে রোগী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে ওষুধ সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। চলতি বছরে চিকিৎসকদের পরামর্শে প্রতিবন্ধী শিশুদের শব্দ, রং এবং আঁকা শেখার জন্য ‘ব্র্যাভো’ নামে আরেকটি রোবট তৈরি করেছি। এটি ডেঙ্গুর মতো রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পারে এবং ওয়েটার হিসাবেও কাজ করতে পারে’।

 

‘রোবট চাই না, চাকর চাই। রোবটমুক্ত বাংলা চাই!’ সম্প্রতি সত্যজিৎ রায়ের কাহিনি অবলম্বনে ‘অনুকূল’ শর্টফিল্মে এমনই সংলাপ শোনা গিয়েছিল। তবে বাংলায় রোবট ভবিষ্যতে দেখা যাবে কি না তা সংশয় ছিল। অতনু বাবুর হাত ধরেই বাংলায় বানিয়ে ফেললেন কৃতি ও ব্র্যাভো রোবট। নিজের খরচেই রোবট দুটি তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের তরফে আর্থিক সহায়তা পেলে জনস্বার্থে এধরনের আরও রোবট তৈরি করতে পারবেন।