মিশরে হচ্ছে নতুন রাজধানী, থাকবে ৬০ লক্ষ মানুষ

- আপডেট : ৯ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 112
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: হাজার বছরের ইতিহাস আর সংস্কৃতির ধারক মিশরের রাজধানী কায়রো;নীল নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই শহর এক সময় ছিল জ্ঞানের কেন্দ্র, ইসলামি সভ্যতার অন্যতম গৌরব, এবং মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার রাজনৈতিক হৃৎপিণ্ড। ফারাও থেকে শুরু করে ইসলামি খিলাফত, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগ থেকে আজকের আধুনিক মিশর;সব যুগের ছাপ লেগে আছে কায়রোর অলিগলিতে, মিনার আর প্রাসাদে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই শহর হয়ে উঠেছে অতিরিক্ত ভিড়, যানজট ও দূষণের ভারে ন্যুব্জ। সেই চাপ সামাল দিতেই মিশর সরকার হাত দিয়েছে এক মহাপরিকল্পনায়;কায়রোর ঠিক পূর্ব দিকে, মরুভূমির বুকে গড়ে উঠছে নতুন প্রশাসনিক রাজধানী।
৭০০ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই শহরে একসময় বাস করবে ৬০ লক্ষের বেশি মানুষ। রাষ্ট্রপতি ভবন, সংসদ, প্রশাসনিক দফতর, বিদেশি দূতাবাস, আবাসিক এলাকা, সবকিছু নিয়ে এটি হয়ে উঠবে মিশরের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
নতুন রাজধানীর কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চলে নির্মিত হচ্ছে আফ্রিকার সর্বোচ্চ ভবন আইকনিক টাওয়ার, যার উচ্চতা প্রায় ৩৮৬ মিটার। আরও থাকছে আধুনিক অফিস ভবন, আবাসিক টাওয়ার, এবং আন্তর্জাতিক মানের হোটেল।
২০২৩ সাল থেকেই অনেক সরকারি দফতর এবং প্রায় ৩০ হাজার কর্মচারী নতুন শহরে কার্যক্রম শুরু করেছেন। বর্তমানে মিশরের সরকারি প্রশাসনের মূল কার্যালয় এই নতুন রাজধানীতেই স্থানান্তরিত হয়েছে। নগর পরিচালনার জন্য মিশরের গৃহনির্মাণ মন্ত্রক একটি নতুন মডেল অনুসরণ করছে;‘কস্ট-প্লাস-মার্জিন’;যার ফলে শহরের পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ এবং নাগরিক সেবা সরকারি নজরদারিতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে।
বিদেশি সহযোগিতার মধ্যে চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত নির্মাণ সংস্থা ‘চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ অংশ নিয়েছে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চলের নির্মাণে ও ভবিষ্যতের ব্যবস্থাপনায়। তবে মূল পরিকল্পনা, নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক অভিমুখ নির্ধারণ করছে মিশর নিজেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শহর শুধু একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র নয়; এটি মিশরের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। একদিকে ঐতিহাসিক কায়রো তার হাজার বছরের ঐশ্বর্য ধরে রাখবে, অন্যদিকে মরুভূমির বুকে গড়ে উঠবে এক আধুনিক, সবুজ ও প্রযুক্তি-নির্ভর রাজধানী;যা মিশরের ভবিষ্যতের প্রতীক হয়ে উঠবে।