২৯ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
'ন্যায়বিচারের লড়াই' বলে পূর্ণ সমর্থন মুসলিম সংগঠনের

এনআরসি আতঙ্কে পানিহাটিতে বৃদ্ধের আত্মহত্যা

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 74

আবদুল ওদুদ: এসআইআর আবহে এনআরসি-র আতঙ্ক। আর এই আতঙ্কে আত্মহত্যা করলেন প্রদীপ কর নামে এক বৃদ্ধ। আর এই ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ এলাকার পানিহাটি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বৃদ্ধর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এনআরসি-র আতঙ্কেই পানিহাটির মহাজাতি নগরের বাসিন্দা ৫৭ বছর বয়সী প্রদীপ কর নামে ওই ব্যক্তি নিজের আবাসনেই আত্মহত্যা করেছেন। দাবি এমনটাই। সূত্রের খবর, মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ডায়েরি। তাতেই এনআরসি সম্পর্কিত নানা বিষয় লেখা। ডায়েরির খাতার একদম নিচে লেখা, ‘এনআরসি আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী’।

প্রদীপ করের মৃত্যুর ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, অবিলম্বে এই নির্মম খেলাটি বন্ধ করুক কেন্দ্র। ঘটনার কথা উল্লেখ করে পোস্টে লিখছেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে এই নির্মম খেলাটি চিরতরে বন্ধ হোক। বাংলা কখনও এনআরসি অনুমোদন করবে না। কাউকে আমাদের জনগণের মর্যাদা কেড়ে নিতে দেব না।’ পোস্টে বিজেপিকে তুলোধনা করে মমতা আরও লিখছেন, ‘বছরের পর বছর ধরে বিজেপি এনআরসির হুমকি দিয়ে, মিথ্যা প্রচার করে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কীভাবে ভোটের জন্য নিরাপত্তাহীনতার অস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে তা কল্পনা করলে আমার হৃদয় কেঁপে ওঠে।’

আরও পড়ুন: ফের কোটায় আত্মঘাতী নিট পড়ুয়া, ‘ছেলে আত্মহত্যা করতেই পারে না’ দাবি মৃতের বাবার

মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে আরো লিখেছেন, ‘বিজেপির ভয় ও বিভাজনের রাজনীতির এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে? বছরের পর বছর ধরে বিজেপি কীভাবে এনআরসির হুমকি দিয়ে নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, মিথ্যা ছড়িয়েছে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং ভোটের জন্য নিরাপত্তাহীনতার অস্ত্র ব্যবহার করেছে তা কল্পনা করতে আমার মন ভেঙে যায়।’ বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার আরও অভিযোগ, ‘তারা সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে একটি কঠোর আইন-শাসনে পরিণত করেছে, যেখানে মানুষকে তাদের অস্তিত্বের অধিকার নিয়ে সন্দেহ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই মর্মান্তিক মৃত্যু বিজেপির বিষাক্ত প্রচারণার প্রত্যক্ষ পরিণতি। যারা দিল্লিতে বসে জাতীয়তাবাদ প্রচার করে তারা সাধারণ ভারতীয়দের এমন হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছে যে তারা তাদের নিজের দেশেই মারা যাচ্ছে, এই ভয়ে যে তাদের ‘বিদেশী’ ঘোষণা করা হবে।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেন, ‘আমি দাবি করছি কেন্দ্রীয় সরকার এই নির্মম খেলা চিরতরে বন্ধ করুক। বাংলা কখনই এনআরসিকে অনুমতি দেবে না, এবং কাউকে আমাদের জনগণের মর্যাদা বা স্বত্ব কেড়ে নিতে দেবে না। আমাদের মাটি মা, মাটি, মানুষের, ঘৃণার উপর ভর করে এমন লোকদের নয়। দিল্লির জমিদারদের এই কথাটি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই — বাংলা প্রতিরোধ করবে, বাংলা রক্ষা করবে এবং বাংলা জয়ী হবে।’

আরও পড়ুন: ফের হরিয়ানায় আত্মঘাতী পুলিশকর্তা, ১০ দিনে তিন পুলিশকর্তা আত্মহত্যা

আরও পড়ুন: দাম্পত্য কলহে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা দম্পতির

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

'ন্যায়বিচারের লড়াই' বলে পূর্ণ সমর্থন মুসলিম সংগঠনের

এনআরসি আতঙ্কে পানিহাটিতে বৃদ্ধের আত্মহত্যা

আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার

আবদুল ওদুদ: এসআইআর আবহে এনআরসি-র আতঙ্ক। আর এই আতঙ্কে আত্মহত্যা করলেন প্রদীপ কর নামে এক বৃদ্ধ। আর এই ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ এলাকার পানিহাটি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বৃদ্ধর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এনআরসি-র আতঙ্কেই পানিহাটির মহাজাতি নগরের বাসিন্দা ৫৭ বছর বয়সী প্রদীপ কর নামে ওই ব্যক্তি নিজের আবাসনেই আত্মহত্যা করেছেন। দাবি এমনটাই। সূত্রের খবর, মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ডায়েরি। তাতেই এনআরসি সম্পর্কিত নানা বিষয় লেখা। ডায়েরির খাতার একদম নিচে লেখা, ‘এনআরসি আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী’।

প্রদীপ করের মৃত্যুর ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, অবিলম্বে এই নির্মম খেলাটি বন্ধ করুক কেন্দ্র। ঘটনার কথা উল্লেখ করে পোস্টে লিখছেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে এই নির্মম খেলাটি চিরতরে বন্ধ হোক। বাংলা কখনও এনআরসি অনুমোদন করবে না। কাউকে আমাদের জনগণের মর্যাদা কেড়ে নিতে দেব না।’ পোস্টে বিজেপিকে তুলোধনা করে মমতা আরও লিখছেন, ‘বছরের পর বছর ধরে বিজেপি এনআরসির হুমকি দিয়ে, মিথ্যা প্রচার করে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কীভাবে ভোটের জন্য নিরাপত্তাহীনতার অস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে তা কল্পনা করলে আমার হৃদয় কেঁপে ওঠে।’

আরও পড়ুন: ফের কোটায় আত্মঘাতী নিট পড়ুয়া, ‘ছেলে আত্মহত্যা করতেই পারে না’ দাবি মৃতের বাবার

মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে আরো লিখেছেন, ‘বিজেপির ভয় ও বিভাজনের রাজনীতির এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে? বছরের পর বছর ধরে বিজেপি কীভাবে এনআরসির হুমকি দিয়ে নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, মিথ্যা ছড়িয়েছে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং ভোটের জন্য নিরাপত্তাহীনতার অস্ত্র ব্যবহার করেছে তা কল্পনা করতে আমার মন ভেঙে যায়।’ বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার আরও অভিযোগ, ‘তারা সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে একটি কঠোর আইন-শাসনে পরিণত করেছে, যেখানে মানুষকে তাদের অস্তিত্বের অধিকার নিয়ে সন্দেহ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই মর্মান্তিক মৃত্যু বিজেপির বিষাক্ত প্রচারণার প্রত্যক্ষ পরিণতি। যারা দিল্লিতে বসে জাতীয়তাবাদ প্রচার করে তারা সাধারণ ভারতীয়দের এমন হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছে যে তারা তাদের নিজের দেশেই মারা যাচ্ছে, এই ভয়ে যে তাদের ‘বিদেশী’ ঘোষণা করা হবে।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেন, ‘আমি দাবি করছি কেন্দ্রীয় সরকার এই নির্মম খেলা চিরতরে বন্ধ করুক। বাংলা কখনই এনআরসিকে অনুমতি দেবে না, এবং কাউকে আমাদের জনগণের মর্যাদা বা স্বত্ব কেড়ে নিতে দেবে না। আমাদের মাটি মা, মাটি, মানুষের, ঘৃণার উপর ভর করে এমন লোকদের নয়। দিল্লির জমিদারদের এই কথাটি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই — বাংলা প্রতিরোধ করবে, বাংলা রক্ষা করবে এবং বাংলা জয়ী হবে।’

আরও পড়ুন: ফের হরিয়ানায় আত্মঘাতী পুলিশকর্তা, ১০ দিনে তিন পুলিশকর্তা আত্মহত্যা

আরও পড়ুন: দাম্পত্য কলহে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা দম্পতির