০৩ মে ২০২৫, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়াকে থামাতে ইউরোপ দেরি করে ফেলেছে­ জেলেনস্কি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২২, শনিবার
  • / 6

পুবের কলম প্রতিবেদক: ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা দিলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সম্মেলনে ভিডিওলিংকের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।ভাষণে জেলেনস্কি ইউক্রেইনে রুশ বাহিনীর তাণ্ডব ও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরেন এবং ইউক্রেইনের পাশে দাঁড়ানোয় ইউরোপকে ধন্যবাদ দেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

 

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট পরে তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে স্পষ্ট ভাষায় ইউরোপের নেতাদের বলেন, রাশিয়াকে থামাতে আপনারা দেরি করে ফেলেছেন।’আপনারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, আমরা কৃতজ্ঞ। এগুলো খুবই শক্তিশালী পদক্ষেপ। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে, একটা সুযোগ ছিল, বলেন জেলেনস্কি। তার ধারণা, রাশিয়ার ওপর আগেই ‘প্রতিরোধমূলক নিষেধাজ্ঞা’ দিয়ে রাখলে মস্কো হয়তো যুদ্ধে নামত না। তিনি নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনের প্রসঙ্গও তোলেন, বলেন, এই পাইপলাইন যদি আগেই আটকে দেওয়া যেত, তাহলে রাশিয়া ‘গ্যাস সংকট তৈরি করতে পারতো না’। অনুরোধ করছি, দেরি করবেন না, বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

 

বিবিসি লিখেছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে জেলেনস্কিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ভাষণ দিতে দেখা যাচ্ছে, এসব ভাষণে তিনি ইউক্রেনকে পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে তার দৃষ্টিতে পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যর্থতার সমালোচনা করতেও পিছপা হচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সদস্য দেশগুলোর সমর্থনের মাত্রাও একে একে তুলে ধরেন। তিনি পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, চেক রিপাবলিক ও ইতালির মতো বেশিরভাগ দেশেরই ভূয়সী প্রশংসা করেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের নাম উল্লেখ করে বলেন, ইমানুয়েল আমি সত্যিই বিশ্বাস করি যে আপনি আমাদের পাশেই আছেন। সুইডেনের ক্ষেত্রে পতাকার রঙে থাকা সাদৃশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, হলুদ ও নীলের সবসময় একসঙ্গে থাকা উচিত।

 

জার্মানি, পর্তুগাল ও আয়ারল্যান্ডের মতো ইউরোপের কিছু দেশের তুলনামূলক দেরিতে সমর্থন কিংবা অনিচ্ছারও কড়া সমালোচনা করেছেন ইউক্রেইনীয় প্রেসিডেন্ট। হাঙ্গেরির ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থান নিয়ে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়াও জানান তিনি। ’আমি এখানে থামতে চাই, সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই। আপনাদের নিজেদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনারা কার সঙ্গে থাকবেন,’ বলেন তিনি।

 

হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবান দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র হিসেবে পরিচিত। জেলেনস্কি হাঙ্গেরির প্রতি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেইনকে অস্ত্র দিতে ইতস্তত না করতে অনুরোধ জানান। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্যাসিস্ট, নাৎসিপন্থি বাহিনীগুলোর হত্যাযজ্ঞের স্মৃতিসৌধ বুদাপেস্টের দানিউব ব্যাংকে থাকা বিখ্যাত জুতাগুলোর কথা উল্লেখ করেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘ওই জুতাগুলোর দিকে তাকান। আপনি দেখতে পাবেন এখনকার দুনিয়ায় কিভাবে ফের গণহত্যা হচ্ছে, রাশিয়া আজ তাই করছে,’ বলেন জেলেনস্কি।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাশিয়াকে থামাতে ইউরোপ দেরি করে ফেলেছে­ জেলেনস্কি

আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২২, শনিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা দিলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সম্মেলনে ভিডিওলিংকের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।ভাষণে জেলেনস্কি ইউক্রেইনে রুশ বাহিনীর তাণ্ডব ও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরেন এবং ইউক্রেইনের পাশে দাঁড়ানোয় ইউরোপকে ধন্যবাদ দেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

 

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট পরে তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে স্পষ্ট ভাষায় ইউরোপের নেতাদের বলেন, রাশিয়াকে থামাতে আপনারা দেরি করে ফেলেছেন।’আপনারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, আমরা কৃতজ্ঞ। এগুলো খুবই শক্তিশালী পদক্ষেপ। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে, একটা সুযোগ ছিল, বলেন জেলেনস্কি। তার ধারণা, রাশিয়ার ওপর আগেই ‘প্রতিরোধমূলক নিষেধাজ্ঞা’ দিয়ে রাখলে মস্কো হয়তো যুদ্ধে নামত না। তিনি নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনের প্রসঙ্গও তোলেন, বলেন, এই পাইপলাইন যদি আগেই আটকে দেওয়া যেত, তাহলে রাশিয়া ‘গ্যাস সংকট তৈরি করতে পারতো না’। অনুরোধ করছি, দেরি করবেন না, বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

 

বিবিসি লিখেছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে জেলেনস্কিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ভাষণ দিতে দেখা যাচ্ছে, এসব ভাষণে তিনি ইউক্রেনকে পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে তার দৃষ্টিতে পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যর্থতার সমালোচনা করতেও পিছপা হচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সদস্য দেশগুলোর সমর্থনের মাত্রাও একে একে তুলে ধরেন। তিনি পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, চেক রিপাবলিক ও ইতালির মতো বেশিরভাগ দেশেরই ভূয়সী প্রশংসা করেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের নাম উল্লেখ করে বলেন, ইমানুয়েল আমি সত্যিই বিশ্বাস করি যে আপনি আমাদের পাশেই আছেন। সুইডেনের ক্ষেত্রে পতাকার রঙে থাকা সাদৃশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, হলুদ ও নীলের সবসময় একসঙ্গে থাকা উচিত।

 

জার্মানি, পর্তুগাল ও আয়ারল্যান্ডের মতো ইউরোপের কিছু দেশের তুলনামূলক দেরিতে সমর্থন কিংবা অনিচ্ছারও কড়া সমালোচনা করেছেন ইউক্রেইনীয় প্রেসিডেন্ট। হাঙ্গেরির ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থান নিয়ে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়াও জানান তিনি। ’আমি এখানে থামতে চাই, সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই। আপনাদের নিজেদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনারা কার সঙ্গে থাকবেন,’ বলেন তিনি।

 

হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবান দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র হিসেবে পরিচিত। জেলেনস্কি হাঙ্গেরির প্রতি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেইনকে অস্ত্র দিতে ইতস্তত না করতে অনুরোধ জানান। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্যাসিস্ট, নাৎসিপন্থি বাহিনীগুলোর হত্যাযজ্ঞের স্মৃতিসৌধ বুদাপেস্টের দানিউব ব্যাংকে থাকা বিখ্যাত জুতাগুলোর কথা উল্লেখ করেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘ওই জুতাগুলোর দিকে তাকান। আপনি দেখতে পাবেন এখনকার দুনিয়ায় কিভাবে ফের গণহত্যা হচ্ছে, রাশিয়া আজ তাই করছে,’ বলেন জেলেনস্কি।