মোল্লা জসিমউদ্দিন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠে মোবাইল চুরি সংক্রান্ত এক মামলা।এদিন আদালতের পূর্বতন নির্দেশ না মানায় কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে তীব্র ভর্ত্সনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না? কলকাতার পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশে তা জানতে চাইলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। এই মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, -‘ আদালতের নির্দেশ কি খেলার জিনিস? হাইকোর্টের অর্ডার না মানলেও চলবে? পুলিশ কি এটাই মনে করছে?’ কলকাতা পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি এদিন এজলাসে এও বলেন, “ভুলে যাবেন না, হাইকোর্টের ক্ষমতা।” এরপরই মামলার পরবর্তী শুনানিতে এজলাসে হাজির হয়ে পুলিশ কমিশনারকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।মোবাইল চুরি সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারী এক ব্যক্তি ।
ওই মামলায় আলিপুর পুলিশ কোর্ট থেকে হাজরা ক্রসিং এবং কালীঘাট ফায়ার স্টেশন পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ কমিশনারকে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।
আদালত সূত্রে প্রকাশ , এই নির্দেশের পরেও কাজ হয়নি। উল্টে পুলিশ কমিশনারের হয়ে কালীঘাট থানার ওসি রিপোর্ট দেয় আদালতকে। যা দেখে এদিন বেজায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। পুলিশের উদ্দেশে বলেন, “ভুলে যাবেন না, হাইকোর্টের ক্ষমতা।” আগামী ২২ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি। ওইদিন সিপিকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।মামলাকারীর নাম পঙ্কজ কুমার দুগার। তাঁর মোবাইল চুরি যাওয়ার পর মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। গত ২০২২ সালের ওই মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আদালতে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ কমিশনার নিজে সেই রিপোর্ট না দেওয়ায় অবমাননার অভিযোগ ওঠে। দাখিল মামলার আবেদনে জানানো হয়েছিল, ১৮ জুন, ২০২২ তারিখে তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন কোথায়? তা জানাতে হবে মোবাইল সংস্থাকে। এর পাশাপাশি ওই দিন আলিপুর পুলিশ কোর্ট থেকে হাজরা ক্রসিং ও কালীঘাট ফায়ার স্টেশন পর্যন্ত পুরো এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছিল।
আদালত পুলিশ কমিশনারকে যাবতীয় ফুটেজ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেয়। ওই মোবাইল সংস্থা থেকে তথ্য নিয়ে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশের পরেও কাজ হয়নি বলে মামলাকারীর অভিযোগ। এদিন কলকাতা পুলিশ কমিশনারের হয়ে কালীঘাট থানার ওসি রিপোর্ট দেয় আদালতকে।
এই মামলার শুনানি পর্বে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানায় -‘ পুলিশ আদালতের নির্দেশ নিয়ে উপহাস করেছে।’ বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এদিন পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, “ভুলে যাবেন না, হাইকোর্টের ক্ষমতা কত।” কমিশনারের উদ্দেশে বিচারপতি আরও বলেন, “আদালতের নির্দেশ কি খেলার জিনিস? হাইকোর্টের অর্ডার না মানলেও চলবে বলে কি পুলিশ মনে করছে? কেন আদালত অবমাননার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেব না?”আগামী ২২ মার্চ ওই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।