০২ ডিসেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যোশীমঠের আতঙ্কের ছায়া দার্জিলিংয়েও, প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে যেতে পারে এই  শৈলশহর!    

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ জানুয়ারী ২০২৩, শনিবার
  • / 149

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ যোশীমঠের বিপর্যয়ের ঘটনায় উদ্বিগ্ন দেশ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায়  স্থানীয়দের নিরাপদে অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই  ৭০০ এরও বেশি  পরিবারকে সরানো হয়েছে।  প্রতিদিন নতুন করে ফাটল ও ধস নেমে আসছে ঘরবাড়িতে। উত্তরাখণ্ডের ওই এলাকাগুলি বসবাসের উপযোগী নয় বলেও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। এবার কি সেই পথেই এগোচ্ছে বাংলার শৈলশহর দার্জিলিং?

 

অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণই যোশীমঠের বিপর্যয়ের কারণ এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।  একই প্রশ্ন দার্জিলিং, কালিম্পং,  কার্শিয়াং বা সিকিমের  ক্ষেত্রেও উঠতে শুরু করছে।

এই প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভূবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদরা  জানিয়েছেন,  দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পং পাহাড় ভূমিগত ভাবে এখনও গড়ে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এই অঞ্চল অসংখ্য খণ্ডিত শিলার উপর দাঁড়িয়ে, যার ধারণ ক্ষমতা এমনিতেই কম। তা ছাড়া, সেই শিলার সঙ্গে সংযুক্ত মাটি একেবারেই ভঙ্গুর। তাই পর্যটন বা বাণিজ্যিক কারণে পাহাড়ে নির্মাণ করতে হলে সঠিক পরিকল্পনা মাফিক করতে হবে। তবে অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ যদি বন্ধ না হয় তাহলে দার্জিলিং-এ একটা বড় ভূমিকম্প হলে, যোশীমঠের চেয়েও ভয়ঙ্কর বিপর্যয় হবে।

 

আরও পড়ুন: সোমবার ফের দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী

সম্প্রতি দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে একের পর এক ধসের নামার ঘটনা সামনে এসেছে। যোশীমঠের মতোই,  প্রকৃতিকে বুড়ো  আঙুল দেখিয়ে শৈলশহরগুলিতে  গত এক দশকে একের পর এক ‘হাইরাইজ’ তৈরি হয়েছে। একটা সময় পাহাড়ে সাধারণত কাঠের বাড়ি বেশি দেখা যেত। ভূমিকম্প প্রবন দার্জিলিংয়ে এটাই ছিল রীতি। এছাড়াও কিছু বছর আগেও যেখানে দোতলা থেকে বড় জোর তিনতলা বাড়ি দেখা যেত এখন সেখানে বহুতল, শপিং মল থেকে শুরু করে পাহাড়ের ঢালে একের পর এক তৈরি হয়েছে অট্টালিকা।

 

আরও পড়ুন: দার্জিলিঙে ভয়াবহ ধস ও বন্যা, মৃত ১৭, বিচ্ছিন্ন সিকিম-কালিম্পং

সূত্রের খবর অনুসারে, দার্জিলিং শহর এলাকায় ১৩২টি অবৈধ নির্মাণ চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযান পুরসভার পালাবদলের জেরে থমকে গিয়েছে সেই নির্মাণ। তারপরেও লুকিয়ে চুরিয়ে অবৈধ নির্মাণ বন্ধ হচ্ছে না বলেই খবর।

 

আরও পড়ুন: ‘‌আমরা ভারতে স্বাধীন’‌ বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে মন্তব্য দলাই লামার

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে দার্জিলিং শহরের একটি চারতলা ভবন ধসে  গিয়ে সাত জনের মৃত্যু হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের অনুমান, বিল্ডিংটি ধসে যাওয়ার মূল কারণই গোড়া থেকে মাটি সরে যায়। যা যোশীমঠের ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া গেছে। দার্জিলিং-এর ওই বিল্ডিলিংটি ছিল একটি পাহাড়ি ঝর্নার কাছে। কিন্তু সেই ঘটনার পরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। সর্বত্রই নির্মাণকাজ অব্যাহত রয়েছ।বর্ষায় ধস নিত্য সঙ্গী। তারপরও ফিরছে না হুঁশ। আর কোন বিপর্যয় ঘটলে সতর্কতা ফিরবে? বন্ধ হবে অবৈধ নির্মাণ। প্রশ্ন তুলছে দার্জিলিং।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

যোশীমঠের আতঙ্কের ছায়া দার্জিলিংয়েও, প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে যেতে পারে এই  শৈলশহর!    

আপডেট : ১৪ জানুয়ারী ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ যোশীমঠের বিপর্যয়ের ঘটনায় উদ্বিগ্ন দেশ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায়  স্থানীয়দের নিরাপদে অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই  ৭০০ এরও বেশি  পরিবারকে সরানো হয়েছে।  প্রতিদিন নতুন করে ফাটল ও ধস নেমে আসছে ঘরবাড়িতে। উত্তরাখণ্ডের ওই এলাকাগুলি বসবাসের উপযোগী নয় বলেও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। এবার কি সেই পথেই এগোচ্ছে বাংলার শৈলশহর দার্জিলিং?

 

অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণই যোশীমঠের বিপর্যয়ের কারণ এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।  একই প্রশ্ন দার্জিলিং, কালিম্পং,  কার্শিয়াং বা সিকিমের  ক্ষেত্রেও উঠতে শুরু করছে।

এই প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভূবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদরা  জানিয়েছেন,  দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পং পাহাড় ভূমিগত ভাবে এখনও গড়ে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এই অঞ্চল অসংখ্য খণ্ডিত শিলার উপর দাঁড়িয়ে, যার ধারণ ক্ষমতা এমনিতেই কম। তা ছাড়া, সেই শিলার সঙ্গে সংযুক্ত মাটি একেবারেই ভঙ্গুর। তাই পর্যটন বা বাণিজ্যিক কারণে পাহাড়ে নির্মাণ করতে হলে সঠিক পরিকল্পনা মাফিক করতে হবে। তবে অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ যদি বন্ধ না হয় তাহলে দার্জিলিং-এ একটা বড় ভূমিকম্প হলে, যোশীমঠের চেয়েও ভয়ঙ্কর বিপর্যয় হবে।

 

আরও পড়ুন: সোমবার ফের দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী

সম্প্রতি দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে একের পর এক ধসের নামার ঘটনা সামনে এসেছে। যোশীমঠের মতোই,  প্রকৃতিকে বুড়ো  আঙুল দেখিয়ে শৈলশহরগুলিতে  গত এক দশকে একের পর এক ‘হাইরাইজ’ তৈরি হয়েছে। একটা সময় পাহাড়ে সাধারণত কাঠের বাড়ি বেশি দেখা যেত। ভূমিকম্প প্রবন দার্জিলিংয়ে এটাই ছিল রীতি। এছাড়াও কিছু বছর আগেও যেখানে দোতলা থেকে বড় জোর তিনতলা বাড়ি দেখা যেত এখন সেখানে বহুতল, শপিং মল থেকে শুরু করে পাহাড়ের ঢালে একের পর এক তৈরি হয়েছে অট্টালিকা।

 

আরও পড়ুন: দার্জিলিঙে ভয়াবহ ধস ও বন্যা, মৃত ১৭, বিচ্ছিন্ন সিকিম-কালিম্পং

সূত্রের খবর অনুসারে, দার্জিলিং শহর এলাকায় ১৩২টি অবৈধ নির্মাণ চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযান পুরসভার পালাবদলের জেরে থমকে গিয়েছে সেই নির্মাণ। তারপরেও লুকিয়ে চুরিয়ে অবৈধ নির্মাণ বন্ধ হচ্ছে না বলেই খবর।

 

আরও পড়ুন: ‘‌আমরা ভারতে স্বাধীন’‌ বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে মন্তব্য দলাই লামার

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে দার্জিলিং শহরের একটি চারতলা ভবন ধসে  গিয়ে সাত জনের মৃত্যু হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের অনুমান, বিল্ডিংটি ধসে যাওয়ার মূল কারণই গোড়া থেকে মাটি সরে যায়। যা যোশীমঠের ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া গেছে। দার্জিলিং-এর ওই বিল্ডিলিংটি ছিল একটি পাহাড়ি ঝর্নার কাছে। কিন্তু সেই ঘটনার পরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। সর্বত্রই নির্মাণকাজ অব্যাহত রয়েছ।বর্ষায় ধস নিত্য সঙ্গী। তারপরও ফিরছে না হুঁশ। আর কোন বিপর্যয় ঘটলে সতর্কতা ফিরবে? বন্ধ হবে অবৈধ নির্মাণ। প্রশ্ন তুলছে দার্জিলিং।