পুলওয়ামা কাণ্ড নিয়ে মুখ খুলে মোদি সরকারের রোষানলে কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক! আচমকাই হাজিরা থানায়

- আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার
- / 6
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: পুলওয়ামা কাণ্ডে নিয়ে মুখ খুলে বিপাকে পড়লেন কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। সিবিআইয়ের পর আচমকাই শনিবার দিল্লির থানায় আচমকাই ডেকে পাঠানো হল সত্যপাল। এই নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে যাওয়ার পরই সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে দিল্লি পুলিশের দাবি, গ্রেফতারের জন্য ডাকা হয়নি। একটি ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। শনিবার দুপুরে দিল্লির আর কে পুরম থানায় হাজিরা দেন সত্যপাল মালিক।
দিল্লি পুলিশের দাবি, নিজের ইচ্ছেই দিল্লির আর কে পুরম থানায় এসেছেন। তাঁকে মোটেই গ্রেফতার করা হয়নি। নিজের সমর্থকদের নিয়ে তিনি এদিন থানায় হাজির হন। নিজের ইচ্ছেতেই তাঁকে চলে যাওয়ার কথা বলে দিল্লি পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দিল্লিতে নিজের বাড়ির কাছে একটি পার্কে সভা করতে চেয়েছিলেন সত্যপাল মালিক। কিন্তু, মেলেনি পুলিশি অনুমতি। সেই কারণেই দলবল নিয়ে তিনি অনুমতি চাইতে থানায় হাজির হন। এদিন দুপুর থেকে ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, সত্যপাল মালিক তাঁর দলবল নিয়ে আর কে পুরম থানায় প্রবেশ করছেন। বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলছেন, ‘আমাদের এখন গ্রেফতার করবে না বলছে পুলিশ।” এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই জল্পনা রটে যায় জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সত্যপাল মালিকের টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও সমর্থকদের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে গ্রেফতার কথাটি উল্লেখ করা হয়।
আগামী ২৭ এবং ২৮ এপ্রিল সত্যপাল মালিককে সিবিআই দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স ইস্যুতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। জম্মু–কাশ্মীরে এক বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প নিয়ে সত্যপাল দুর্নীতির যে অভিযোগ এনেছেন, সে বিষয়েই সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। তাঁকে তলব করার খবর প্রাক্তন রাজ্যপাল নিজেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
জম্মু–কাশ্মীর ছাড়া গোয়া ও মেঘালয়ের এই প্রাক্তন রাজ্যপাল ও বিজেপি নেতা সম্প্রতি একাধিক সাক্ষাৎকারে নির্দিষ্ট কয়েকটি অভিযোগ করে বসেন। অভিযোগগুলোর দুটি দুর্নীতিসংক্রান্ত। সেই কথা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্নীতিকে ঘৃণা করেন না। করলে তাঁর দফতর থেকে ফোন করে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা প্রকল্প অনুমোদনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারতেন না। অন্য অভিযোগটি জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত।
সত্যপাল রাজ্যপাল থাকাকালীন ২০১৯ সালে ঘটেছিল পুলওয়ামা–কাণ্ড। সন্ত্রাসবাদীদের বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি সেনা জওয়ানদের কনভয়ে ধাক্কা দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর ফলে ৪০ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনার দায় তিনি সম্পূর্ণ সরকারের ওপর চাপিয়ে বলেছিলেন, জওয়ানদের আসা–যাওয়ার জন্য ৫টি বিমান চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা মঞ্জুর করেনি। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি সে কথা জানালে মোদি তাঁকে চুপ থাকতে বলেছিলেন। পরে ওই ঘটনাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরিচালিত করে ওই বছর বিজেপি নির্বাচনে জিতেছিল।