০৫ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ মনে প্রশান্তি আনে, সমস্ত খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে রোযা’

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, সোমবার
  • / 102

অধ্যাপক ড. সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়, এক দিকে যেমন বহু ভাষায় পারদর্শী। অন্যদিকে তিনি শিক্ষার উন্নয়নে রাজ্যের অন্যতম কাণ্ডারি। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভারসিটি অব টিচার্স ট্রেনিং এডুকেশন প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর উপাচার্য পদে রয়েছেন। অন্যদিকে তিনি ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বও সামলাচ্ছেন। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে চলতে অভ্যস্ত। তিনি জানালেন, রমযানের রোযা নিয়ে তাঁর অনুভূতির কথা। শুনলেন সেখ কুতুবউদ্দিন

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : রোযার অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। উত্তরে তিনি জানালেন, ছোট বেলা থেকেই পবিত্র রমযান মাসে মুসলিম ভাই-বোন-বন্ধুদের সারাদিন ধরে রোযা রাখতে দেখে আসছি। কত বড় সংযম, কতবড় ত্যাগ স্বীকার। আবার সমানভাবে স্ব-ইচ্ছায় কষ্ট স্বীকারও বলা যেতে পারে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠী বা অন্য বর্ষের মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের দেখেছি গোটা রমযান মাসজুড়ে রোযা রাখতে। সারাদিন না খেয়ে এমনকী এক ফোটা জলও মুখে না নিয়ে কীভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছে, দেখে অবাক হয়েছি। পরবর্তীতে আরও জেনেছি, রমযান শুধুমাত্র আহার-পানীয় বর্জন করে রোযা বা উপবাসে থাকা নয়।

 

আরও পড়ুন: Trump-Putin Alaska Summit: যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে পুতিনের কঠিন পরিণতি হবে: ট্রাম্প

রমযান মাসে রোযা রেখে সৃষ্টিকর্তার স্মরণাপন্ন হলে তাঁর অনুগ্রহ লাভ আরও সহজ হয়ে যায়। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুসলিম ভাই-বোনেরা একমাস ধরে যে কঠোর সংযমের মাধ্যমে রোযা পালন করেন, তা দেখে সত্যিই অবাক হতে হয়। তাঁর কথায়, বাবা সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তাই বিভিন্ন সময় বহু জায়গায় পড়াশোনা করতে হয়েছে। সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে থাকার সময় রোযা সম্পর্কে জেনেছিলাম। এক সঙ্গে ইফতারও করেছি।

আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেল পাচ্ছেন ইমরান খান!

 

আরও পড়ুন: বৈঠকের নির্যাস শূন্য! আরও ১১৬ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠাল ট্রাম্প

কিছু জিনিস রয়েছে, যা আমাদের অনুশাসন এনে দেয়। কোরআন পাঠের মাধ্যমেও মনের প্রশান্তি আসে। সমস্ত রকম খারাপ চিন্তা থেকে মুক্তি আসে, এই বিশ্বাসটা জন্মায়। তাই আমরা আমাদের ধর্মগ্রন্থ পাঠ করি। ধর্মের আচার আচরণ ও নিয়মগুলি মেনে চলি। রোযার মাধ্যমেও মনের প্রশান্তি আসে, সমস্ত খারাপ, অশুভ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

 

প্রতিটি ধর্মগ্রন্থে মূল্যবোধের কথা বলা হয়েছে। ধর্মপালনের মাধ্যমে ভালো-মন্দের তফাৎ বোঝা সহজ হয়ে যায়। খারাপকে দূরে রাখে। আর ভয় পেতে শেখায়। এতে মানুষকে অন্যান্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করে।এর একটা বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে। রোযার মাধ্যমে শরীর-মন ভালো থাকে। পাচনক্রিয়ার শক্তিবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে।

 

এক মাস ধরে এমন মহানব্রত পালন করার মধ্যে বেশ বড় অনুভূতির ছোঁয়া রয়েছে বলেই আমার মনে হয়। এছাড়া আর একটি বিষয় আমাকে আকর্ষণ করে, তা হল, ইফতার। রোযা ভাঙার সময় ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত পেটে খাবার সাজিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে আজানের শব্দ শোনার অপেক্ষা। আর একসঙ্গে অনেকে মিলে ভাগ করে খাবার খেতে দেখলেও মন ভরে যায়। বহু ইফতার মজলিসে গিয়ে দেখেছি, সেখানে, কোনও ধর্মের গণ্ডি থাকে না। চেনা-অচেনা, হিন্দু-মুসলিম- শিখ, খ্রিস্টান সব ধর্মের লোকেদের সঙ্গে ইফতার ভাগ করে খাচ্ছেন মুসলিমরা। সুতরাং রমযানের ইফতার সম্প্রীতিরও বার্তা বয়ে আনে।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘ মনে প্রশান্তি আনে, সমস্ত খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে রোযা’

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : রোযার অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। উত্তরে তিনি জানালেন, ছোট বেলা থেকেই পবিত্র রমযান মাসে মুসলিম ভাই-বোন-বন্ধুদের সারাদিন ধরে রোযা রাখতে দেখে আসছি। কত বড় সংযম, কতবড় ত্যাগ স্বীকার। আবার সমানভাবে স্ব-ইচ্ছায় কষ্ট স্বীকারও বলা যেতে পারে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠী বা অন্য বর্ষের মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের দেখেছি গোটা রমযান মাসজুড়ে রোযা রাখতে। সারাদিন না খেয়ে এমনকী এক ফোটা জলও মুখে না নিয়ে কীভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছে, দেখে অবাক হয়েছি। পরবর্তীতে আরও জেনেছি, রমযান শুধুমাত্র আহার-পানীয় বর্জন করে রোযা বা উপবাসে থাকা নয়।

 

আরও পড়ুন: Trump-Putin Alaska Summit: যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে পুতিনের কঠিন পরিণতি হবে: ট্রাম্প

রমযান মাসে রোযা রেখে সৃষ্টিকর্তার স্মরণাপন্ন হলে তাঁর অনুগ্রহ লাভ আরও সহজ হয়ে যায়। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুসলিম ভাই-বোনেরা একমাস ধরে যে কঠোর সংযমের মাধ্যমে রোযা পালন করেন, তা দেখে সত্যিই অবাক হতে হয়। তাঁর কথায়, বাবা সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তাই বিভিন্ন সময় বহু জায়গায় পড়াশোনা করতে হয়েছে। সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে থাকার সময় রোযা সম্পর্কে জেনেছিলাম। এক সঙ্গে ইফতারও করেছি।

আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেল পাচ্ছেন ইমরান খান!

 

আরও পড়ুন: বৈঠকের নির্যাস শূন্য! আরও ১১৬ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠাল ট্রাম্প

কিছু জিনিস রয়েছে, যা আমাদের অনুশাসন এনে দেয়। কোরআন পাঠের মাধ্যমেও মনের প্রশান্তি আসে। সমস্ত রকম খারাপ চিন্তা থেকে মুক্তি আসে, এই বিশ্বাসটা জন্মায়। তাই আমরা আমাদের ধর্মগ্রন্থ পাঠ করি। ধর্মের আচার আচরণ ও নিয়মগুলি মেনে চলি। রোযার মাধ্যমেও মনের প্রশান্তি আসে, সমস্ত খারাপ, অশুভ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

 

প্রতিটি ধর্মগ্রন্থে মূল্যবোধের কথা বলা হয়েছে। ধর্মপালনের মাধ্যমে ভালো-মন্দের তফাৎ বোঝা সহজ হয়ে যায়। খারাপকে দূরে রাখে। আর ভয় পেতে শেখায়। এতে মানুষকে অন্যান্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করে।এর একটা বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে। রোযার মাধ্যমে শরীর-মন ভালো থাকে। পাচনক্রিয়ার শক্তিবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে।

 

এক মাস ধরে এমন মহানব্রত পালন করার মধ্যে বেশ বড় অনুভূতির ছোঁয়া রয়েছে বলেই আমার মনে হয়। এছাড়া আর একটি বিষয় আমাকে আকর্ষণ করে, তা হল, ইফতার। রোযা ভাঙার সময় ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত পেটে খাবার সাজিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে আজানের শব্দ শোনার অপেক্ষা। আর একসঙ্গে অনেকে মিলে ভাগ করে খাবার খেতে দেখলেও মন ভরে যায়। বহু ইফতার মজলিসে গিয়ে দেখেছি, সেখানে, কোনও ধর্মের গণ্ডি থাকে না। চেনা-অচেনা, হিন্দু-মুসলিম- শিখ, খ্রিস্টান সব ধর্মের লোকেদের সঙ্গে ইফতার ভাগ করে খাচ্ছেন মুসলিমরা। সুতরাং রমযানের ইফতার সম্প্রীতিরও বার্তা বয়ে আনে।