১২ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শহরে ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, খিদিরপুর বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০০ দোকান

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার
  • / 115

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: শহরের বুকে ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। রবিবার (১৫ জুন) গভীর রাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল খিদিরপুর বাজারের শতাধিক দোকান। আনুমানিক রাত ২টো নাগাদ আগুন লাগে বলে জানা গিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাজারে।

ঘিঞ্জি এলাকা ও দাহ্য পদার্থ মজুত থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই একের পর এক দোকান দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। স্থানীয়দের দাবি, প্রায়। কমপক্ষে ১৩০০  দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ২২টি ইঞ্জিন। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। বিভিন্ন জায়গায় এখনও রয়েছে পকেট ফায়ার।

ঘটনার ভয়াবহতায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা দমকল আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ দেরিতে পৌঁছেছে দমকল। আগুন নেভানোর কাজে সমস্যার কথা মেনেও নিয়েছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। তবে, দমকলকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট কিংবা দাহ্য বস্তু থেকেই আগুন লেগেছে।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, রবিবার রাত ২টো ৫ মিনিট নাগাদ বাজারের একাংশ থেকে ধোঁয়া দেখতে পান তাঁরা। পর মুহূর্তেই দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে আগুন। পরিস্থিতি বুঝে সঙ্গে সঙ্গে দমকলে খবর দেন তাঁরা। কিন্তু খুব একটা লাভ হয়নি। দমকল আসতে দেরি করায় আগুন অনেকটা ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। গোটা বাজার কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের দোকান থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করায় সঙ্গে সঙ্গে দমকলে ফোন করি। কিন্তু গাড়ি আসতে বেশ দেরি হয়ে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাজারে।

এখন আর কিছুই নেই। চোখের সামনে জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে গেল।’ অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে দমকল কর্মীদের সঙ্গে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি জানান, ঘিঞ্জি এলাকা, অনেক দোকানই নিয়ম মেনে তৈরি হয়নি। ফলে আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। পকেট ফায়ারের মতো জায়গাগুলি চিহ্নিত করে কুলিংয়ের কাজ চলছে।সকালে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দমকলমন্ত্রী জানান, তাঁকে সকালেই ফোন করেছিলেন ফিরহাদ। আপৎকালীন জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দমকল আধিকারিকরা।

এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। তবে দোকান পুড়ে যাওয়ায় বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অনেকেই বলছেন, ‘বীমা ছিল না। এখন কীভাবে ঘুরে দাঁড়াব, জানি না।’

কলকাতার কোনও বাজারে আগুন লাগার বিষয়টি নতুন নয়। আগেও হয়েছে। বার বার একাধিক নিয়মের কথা বলা হলেও তা কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে সে নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেছে। বাজারের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো কড়াকড়ি হয় মাঝে। কিন্তু খিদিরপুর বাজারের আগুন বলছে, অব্যবস্থা রয়েছেই।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

শহরে ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, খিদিরপুর বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০০ দোকান

আপডেট : ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: শহরের বুকে ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। রবিবার (১৫ জুন) গভীর রাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল খিদিরপুর বাজারের শতাধিক দোকান। আনুমানিক রাত ২টো নাগাদ আগুন লাগে বলে জানা গিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাজারে।

ঘিঞ্জি এলাকা ও দাহ্য পদার্থ মজুত থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই একের পর এক দোকান দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। স্থানীয়দের দাবি, প্রায়। কমপক্ষে ১৩০০  দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ২২টি ইঞ্জিন। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। বিভিন্ন জায়গায় এখনও রয়েছে পকেট ফায়ার।

ঘটনার ভয়াবহতায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা দমকল আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ দেরিতে পৌঁছেছে দমকল। আগুন নেভানোর কাজে সমস্যার কথা মেনেও নিয়েছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। তবে, দমকলকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট কিংবা দাহ্য বস্তু থেকেই আগুন লেগেছে।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, রবিবার রাত ২টো ৫ মিনিট নাগাদ বাজারের একাংশ থেকে ধোঁয়া দেখতে পান তাঁরা। পর মুহূর্তেই দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে আগুন। পরিস্থিতি বুঝে সঙ্গে সঙ্গে দমকলে খবর দেন তাঁরা। কিন্তু খুব একটা লাভ হয়নি। দমকল আসতে দেরি করায় আগুন অনেকটা ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। গোটা বাজার কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের দোকান থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করায় সঙ্গে সঙ্গে দমকলে ফোন করি। কিন্তু গাড়ি আসতে বেশ দেরি হয়ে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাজারে।

এখন আর কিছুই নেই। চোখের সামনে জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে গেল।’ অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে দমকল কর্মীদের সঙ্গে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি জানান, ঘিঞ্জি এলাকা, অনেক দোকানই নিয়ম মেনে তৈরি হয়নি। ফলে আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। পকেট ফায়ারের মতো জায়গাগুলি চিহ্নিত করে কুলিংয়ের কাজ চলছে।সকালে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দমকলমন্ত্রী জানান, তাঁকে সকালেই ফোন করেছিলেন ফিরহাদ। আপৎকালীন জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দমকল আধিকারিকরা।

এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। তবে দোকান পুড়ে যাওয়ায় বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অনেকেই বলছেন, ‘বীমা ছিল না। এখন কীভাবে ঘুরে দাঁড়াব, জানি না।’

কলকাতার কোনও বাজারে আগুন লাগার বিষয়টি নতুন নয়। আগেও হয়েছে। বার বার একাধিক নিয়মের কথা বলা হলেও তা কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে সে নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেছে। বাজারের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো কড়াকড়ি হয় মাঝে। কিন্তু খিদিরপুর বাজারের আগুন বলছে, অব্যবস্থা রয়েছেই।