১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাগত জানাতে অনুপস্থিত কেন মুখ্যসচিব-ডিজি ও সিপি, ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি গাভাই

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, রবিবার
  • / 54

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রবিবার মহারাষ্ট্রে এসে তাঁর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন রাজ্য সরকারের তিন বড় অফিসারের অনুপস্থিতি দেখে। এইভাবে প্রোটোকল ভাঙবার ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গাভাই জানালেন, গণতন্ত্রের তিনটি স্তম্ভই সমান এবং একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই একে অপরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে হয়। তিনি বলেন, রাজ্যের মুখ্যসচিব, পুলিশের ডাইরেক্টর জেনারেল ও মুম্বই পুলিশ কমিশনার তিনজনই যদি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এই সফরের সময় আসতে না চান তাহলে তাঁরাই ভেবে দেখুন এটা ঠিক কাজ হয়েছে নাকি ভুল। তাও প্রধান বিচারপতি মহারাষ্ট্রের মানুষ এবং প্রথমবার মুম্বইয়ে এলেন।

বিচার বিভাগ, আইনসভা ও প্রশাসন এই তিনটিই গণতন্ত্রে প্রধান স্তম্ভ, মনে করিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, যখন বিচার বিভাগের প্রধান প্রথমবারের জন্য এই রাজ্যে এলেন তখন তাঁর সাথে যে ব্যবহার করা হল সেটা নিয়ে তাঁরা নিজেরাই ভাবুন। এটা শুধু প্রোটোকল মেনে চলার বিষয় নয়, এটা জুডিসিয়ারিকে সম্মান দেখানোর বিষয়।

বিচারপতি গাভাই ১৪ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। রবিবার এসেছেন মুম্বইয়ে। মহারাষ্ট্র ও গোয়ার বার কাউন্সিল প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজ্যের তিন দায়িত্বশীল অফিসারদের অনুপস্থিতি দেখার পর বিচারপতি গাভাই মন্তব্য করেন, আজ যদি আমার বদলে অন্য কেউ হতেন তাহলে হয়তো তিনি ১৪২ ধারা প্রয়োগ নিয়ে বিবেচনা করতেন। যাইহোক, এই ছোট বিষয় নিয়ে তিনি কিছু মনে করছেন না। তবে মনে করিয়ে দিলেন পারস্পরিক সম্মান বোধ থাকা দরকার দায়িত্বশীলদের।

ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ ধারা সুপ্রিম কোর্টকে ক্ষমতা দিয়েছে ইনসাফের জন্য যেকোনও পরিস্তিতিতে ডিক্রি জারি করার। কাউকে হাজির থাকার জন্য নির্দেশ জারি করতে পারে কোর্ট। বিচারপতি গাভাই বলেন, যদি কোনও বিচারক প্রোটোকল নিয়ম না মানেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই চিৎকার শুরু হয়ে যেত। জোরালো বিতর্ক চলতে থাকত ১৪২ ধারা নিয়ে। এটা ছোট বিষয় হলেও সবাইকে জানানো দরকার। অবশ্য প্রধান বিচারপতি গাভাই যখন ডা. বি আর আম্বেদকরের স্মরণে তৈরি চৈতা ভূমিতে আসেন, সেখানে ওই তিন অনুপস্থিত দায়িত্বশীল অফিসার হাজির হয়েছিলেন। মুখ্যসচিব সুজাতা সৌনিক, ডিজিপি রাশ্মি শুক্লা এবং মুম্বই সিপি দেবেন ভারতীকে সেখানে দেখা গিয়েছে।

প্রধান বিচারপতির মন্তব্য শোনার পরেই তারা সেখানে ছুটে আসেন। বিচারপতি গাভাইকে পরে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি এই প্রোটোকল নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। তবে বিষয়টা জানালাম শুধু। উল্লেখ্য, বিচারপতি গাভাইয়ের আজ ১৪২ ধারা মন্তব্য নিয়ে অনেকে স্মরণ করছেন, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল নিয়ে সাম্প্রতিক সুপ্রিম কোর্টের রায়। রাজ্যপাল ১০টি বিল বহু সময় আটকে রেখেছিলেন, কিন্তু সুুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে এই বিল রাজ্যপাল বেশিদিন আটকে রাখতে পারেন না। আর এই রায় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্বয়ং রাষ্ট্রপতিও জানতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে। বিচারপতি গাভাইয়ের আজকের মন্তব্যে সেই বিতর্কের বিষয়টি সামনে এসে গেল বলে অনেকে মনে করছেন।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

স্বাগত জানাতে অনুপস্থিত কেন মুখ্যসচিব-ডিজি ও সিপি, ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি গাভাই

আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রবিবার মহারাষ্ট্রে এসে তাঁর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন রাজ্য সরকারের তিন বড় অফিসারের অনুপস্থিতি দেখে। এইভাবে প্রোটোকল ভাঙবার ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গাভাই জানালেন, গণতন্ত্রের তিনটি স্তম্ভই সমান এবং একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই একে অপরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে হয়। তিনি বলেন, রাজ্যের মুখ্যসচিব, পুলিশের ডাইরেক্টর জেনারেল ও মুম্বই পুলিশ কমিশনার তিনজনই যদি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এই সফরের সময় আসতে না চান তাহলে তাঁরাই ভেবে দেখুন এটা ঠিক কাজ হয়েছে নাকি ভুল। তাও প্রধান বিচারপতি মহারাষ্ট্রের মানুষ এবং প্রথমবার মুম্বইয়ে এলেন।

বিচার বিভাগ, আইনসভা ও প্রশাসন এই তিনটিই গণতন্ত্রে প্রধান স্তম্ভ, মনে করিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, যখন বিচার বিভাগের প্রধান প্রথমবারের জন্য এই রাজ্যে এলেন তখন তাঁর সাথে যে ব্যবহার করা হল সেটা নিয়ে তাঁরা নিজেরাই ভাবুন। এটা শুধু প্রোটোকল মেনে চলার বিষয় নয়, এটা জুডিসিয়ারিকে সম্মান দেখানোর বিষয়।

বিচারপতি গাভাই ১৪ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। রবিবার এসেছেন মুম্বইয়ে। মহারাষ্ট্র ও গোয়ার বার কাউন্সিল প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজ্যের তিন দায়িত্বশীল অফিসারদের অনুপস্থিতি দেখার পর বিচারপতি গাভাই মন্তব্য করেন, আজ যদি আমার বদলে অন্য কেউ হতেন তাহলে হয়তো তিনি ১৪২ ধারা প্রয়োগ নিয়ে বিবেচনা করতেন। যাইহোক, এই ছোট বিষয় নিয়ে তিনি কিছু মনে করছেন না। তবে মনে করিয়ে দিলেন পারস্পরিক সম্মান বোধ থাকা দরকার দায়িত্বশীলদের।

ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ ধারা সুপ্রিম কোর্টকে ক্ষমতা দিয়েছে ইনসাফের জন্য যেকোনও পরিস্তিতিতে ডিক্রি জারি করার। কাউকে হাজির থাকার জন্য নির্দেশ জারি করতে পারে কোর্ট। বিচারপতি গাভাই বলেন, যদি কোনও বিচারক প্রোটোকল নিয়ম না মানেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই চিৎকার শুরু হয়ে যেত। জোরালো বিতর্ক চলতে থাকত ১৪২ ধারা নিয়ে। এটা ছোট বিষয় হলেও সবাইকে জানানো দরকার। অবশ্য প্রধান বিচারপতি গাভাই যখন ডা. বি আর আম্বেদকরের স্মরণে তৈরি চৈতা ভূমিতে আসেন, সেখানে ওই তিন অনুপস্থিত দায়িত্বশীল অফিসার হাজির হয়েছিলেন। মুখ্যসচিব সুজাতা সৌনিক, ডিজিপি রাশ্মি শুক্লা এবং মুম্বই সিপি দেবেন ভারতীকে সেখানে দেখা গিয়েছে।

প্রধান বিচারপতির মন্তব্য শোনার পরেই তারা সেখানে ছুটে আসেন। বিচারপতি গাভাইকে পরে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি এই প্রোটোকল নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। তবে বিষয়টা জানালাম শুধু। উল্লেখ্য, বিচারপতি গাভাইয়ের আজ ১৪২ ধারা মন্তব্য নিয়ে অনেকে স্মরণ করছেন, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল নিয়ে সাম্প্রতিক সুপ্রিম কোর্টের রায়। রাজ্যপাল ১০টি বিল বহু সময় আটকে রেখেছিলেন, কিন্তু সুুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে এই বিল রাজ্যপাল বেশিদিন আটকে রাখতে পারেন না। আর এই রায় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্বয়ং রাষ্ট্রপতিও জানতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে। বিচারপতি গাভাইয়ের আজকের মন্তব্যে সেই বিতর্কের বিষয়টি সামনে এসে গেল বলে অনেকে মনে করছেন।