গাজা সংঘর্ষবিরতি: ট্রাম্পের আশ্বাস, ইসরাইলের হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা বাড়ছে

- আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার
- / 284
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গাজায় শীঘ্রই সংঘর্ষবিরতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গাজা যুদ্ধবিরতির এই বার্তা সত্ত্বেও গাজা ভূখণ্ডের বাস্তব পরিস্থিতিতে এখনও তেমন কোনও ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। ইসরাইলি বাহিনী একতরফাভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে গাজায়। ইসরাইলের হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৮১ জন প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৪২২ জন — এমনটাই জানিয়েছে গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে ‘আল জাজিরা’।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই গাজা সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে শনিবারও গাজার দক্ষিণ প্রান্তের খান ইউনিস শহরে ইসরাইলি বোমাবর্ষণ হয়েছে। প্যালেস্টাইনি সাংবাদিক ইব্রাহিম কান্নান সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, খান ইউনিসের আবাসিক এলাকায় বোমা পড়ার পর আকাশ জুড়ে ঘন কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা এখনও স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার ডট কম।
‘আল জাজিরা’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবারের ইসরাইলি হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ১১ জন তুফা এলাকার বাসিন্দা। নিহতদের মধ্যে ‘ডাউন সিনড্রোমে’ আক্রান্ত এক কিশোরীও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন ট্রাম্প। তবে গাজায় যেভাবে হামলা চলছে, তাতে শীঘ্রই সংঘর্ষবিরতির সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এখনো পর্যন্ত ইসরাইলের পক্ষ থেকে গাজা সংঘর্ষবিরতি নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হয়নি।
তবে ওয়াকিবহাল সূত্র সংবাদ সংস্থা ‘এপি’কে জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে ইসরাইলের মন্ত্রী রন ডার্মা ওয়াশিংটনে যেতে পারেন। সেখানে গাজা সংঘর্ষবিরতি, ইরান পরিস্থিতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তিনি আমেরিকার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে ইসরাইল সংঘর্ষবিরতি ভেঙে দেওয়ার পর থেকে হামাসের সঙ্গে তাদের আলোচনা পুরোপুরি বন্ধ। সেই থেকে গাজা ভূখণ্ডে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রতিদিনই সাধারণ গাজাবাসী প্রাণ হারাচ্ছেন।
দীর্ঘ অবরোধের কারণে গাজাবাসীর অর্থনৈতিক দুরবস্থা চরমে। অধিকাংশই কর্মহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দু’বেলা খাবার জোগাড় করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের জন্য। গাজায় চলছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবির, যার ব্যবস্থা করেছে জিএইচএফ-সহ একাধিক সংস্থা। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের অভিযোগ, এই ত্রাণ শিবিরগুলোও এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে। যখন-তখন ত্রাণ শিবিরেও বোমাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হচ্ছে, ফলে গাজাবাসীরা সেখানেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
শুক্রবারও গাজায় গোলাবর্ষণে আরও অন্তত ৭২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ক্রমাগত এই পরিস্থিতি নতুন করে গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে।