০১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান’, ঈদ-উল আযহার দিন মসজিদ পরিষ্কার করে মায়ের সুস্থতায় মুসলিম ভাইদের শ্রদ্ধা হিন্দু যুবকের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১১ জুলাই ২০২২, সোমবার
  • / 20

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দেশের চতুর্দিকে যখন ধর্মীয় ভাবধারায় আঘাত করে মন্তব্য পেশ, পরস্পরকে কটু কথা আক্রমণ, ঠিক তখনই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির নজির দেখা গেল মুর্শিদাবাদে। মায়ের সুস্থতায় মানত করেছিলেন ছেলে। আর সেই ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে মুর্শিদাবাদ থানার ইচ্ছাগঞ্জে রবিবার ঈদ-উল আযহার-এর নামাযের পর মসজিদে গিয়ে পবিত্র স্থান ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করলেন ছেলে। মুর্শিদাবাদের ইচ্ছাগঞ্জের বাসিন্দা দেবপ্রিয় মজুমদারের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ।

দেবপ্রিয় মজুমদারের মা দেবীরানী মজুমদার ২০২০ সাল নাগাদ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। মুম্বইতে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সেখানে তাঁর শরীরে রক্তের প্রয়োজন হয়। তখন মুসলিম ভাইয়েরা দেবীরানীদেবীকে রক্ত দেন। এর পর নতুন জীবন ফিরে পান তিনি। মুসলিম ভাইদের সেই কথা ভোলেননি দেবপ্রিয়। তাঁদের সেই রক্তঋণ শোধ করতে এই বছর রমজান মাসে মুর্শিদাবাদ পুর এলাকার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাড়ি এবং মসজিদ ঘুরে ইফতারের সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন দেবপ্রিয়।

আরও পড়ুন: হাজারও মুসল্লির ঢল, উৎসবের আবহে ঈদ-উল-আযহা’র নামায সম্পন্ন লোহরপুর ঈদগাহ ময়দানে

রবিবার ছিল ইদ উল আযহা। নামায শেষ হওয়ার পর, মুসলিম ভাইদের পায়ের ধুলোকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মসজিদ নিজ হাতে পরিষ্কার করলেন দেবপ্রিয়।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে কোহিতুর, নবাবপাসন্দ, রানিপাসন্দ আমে মাতবে ১ মাসব্যাপী আম উৎসব

দেবপ্রিয় জানান, মা ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। তাই মানত ছিল মা সুস্থ হয়ে উঠলে আমি মসজিদ ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করে দেব। আজ পবিত্র ঈদ উল আযহার। এই বিশেষ দিনে আমার মুসলিম ভাইয়েরা আল্লাহর উদ্দেশে কুরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাই আমি আমি মুসলিম ভাইদের শ্রদ্ধা জানাতে এই বিশেষ দিনকে বেছে নিয়েছি। এই পবিত্র দিনে আমি আমার কর্তব্য পালন করলাম।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে সমবায় নির্বাচন ঘিরে ধুন্ধুমার, দফায় দফায় সংঘর্ষ-হাতাহাতি

 

রবিবার ভোরে উঠে স্নান করে দেবপ্রিয় বাট্টালি মসজিদে পৌঁছে প্রথমে গোটা মসজিদ চত্বর ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করেন।

তারপর ৪০ মিনিট ধরে ধুয়ে দেন ফাঁকা মসজিদের বিভিন্ন কোণাগুলি ধুয়ে মুছে সাফ করেন।

দেবপ্রিয়কে এই কাজ করতে দেখে মুসলিম সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরা স্বাগত জানিয়েছেন। সকলেই দেবপ্রিয়কে দুহাতে আশীর্বাদ জানিয়ে বলেছেন, বর্তমানে দেবপ্রিয়’র মতো মানুষ আরও প্রয়োজন। তাহলেই তাঁরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে দিশা দেখাতে পারবে। কমবে রক্তারক্তি থেকে হানাহানি। একমাত্র ভালোবাসা, শ্রদ্ধাই পারে মানুষের বিভেদ কমিয়ে সকলকে কাছে টেনে নিতে। আর দেবপ্রিয় মজুমদার সেই কাজ করে দেখিয়েছেন।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান’, ঈদ-উল আযহার দিন মসজিদ পরিষ্কার করে মায়ের সুস্থতায় মুসলিম ভাইদের শ্রদ্ধা হিন্দু যুবকের

আপডেট : ১১ জুলাই ২০২২, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দেশের চতুর্দিকে যখন ধর্মীয় ভাবধারায় আঘাত করে মন্তব্য পেশ, পরস্পরকে কটু কথা আক্রমণ, ঠিক তখনই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির নজির দেখা গেল মুর্শিদাবাদে। মায়ের সুস্থতায় মানত করেছিলেন ছেলে। আর সেই ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে মুর্শিদাবাদ থানার ইচ্ছাগঞ্জে রবিবার ঈদ-উল আযহার-এর নামাযের পর মসজিদে গিয়ে পবিত্র স্থান ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করলেন ছেলে। মুর্শিদাবাদের ইচ্ছাগঞ্জের বাসিন্দা দেবপ্রিয় মজুমদারের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ।

দেবপ্রিয় মজুমদারের মা দেবীরানী মজুমদার ২০২০ সাল নাগাদ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। মুম্বইতে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সেখানে তাঁর শরীরে রক্তের প্রয়োজন হয়। তখন মুসলিম ভাইয়েরা দেবীরানীদেবীকে রক্ত দেন। এর পর নতুন জীবন ফিরে পান তিনি। মুসলিম ভাইদের সেই কথা ভোলেননি দেবপ্রিয়। তাঁদের সেই রক্তঋণ শোধ করতে এই বছর রমজান মাসে মুর্শিদাবাদ পুর এলাকার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাড়ি এবং মসজিদ ঘুরে ইফতারের সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন দেবপ্রিয়।

আরও পড়ুন: হাজারও মুসল্লির ঢল, উৎসবের আবহে ঈদ-উল-আযহা’র নামায সম্পন্ন লোহরপুর ঈদগাহ ময়দানে

রবিবার ছিল ইদ উল আযহা। নামায শেষ হওয়ার পর, মুসলিম ভাইদের পায়ের ধুলোকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মসজিদ নিজ হাতে পরিষ্কার করলেন দেবপ্রিয়।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে কোহিতুর, নবাবপাসন্দ, রানিপাসন্দ আমে মাতবে ১ মাসব্যাপী আম উৎসব

দেবপ্রিয় জানান, মা ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। তাই মানত ছিল মা সুস্থ হয়ে উঠলে আমি মসজিদ ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করে দেব। আজ পবিত্র ঈদ উল আযহার। এই বিশেষ দিনে আমার মুসলিম ভাইয়েরা আল্লাহর উদ্দেশে কুরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাই আমি আমি মুসলিম ভাইদের শ্রদ্ধা জানাতে এই বিশেষ দিনকে বেছে নিয়েছি। এই পবিত্র দিনে আমি আমার কর্তব্য পালন করলাম।

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে সমবায় নির্বাচন ঘিরে ধুন্ধুমার, দফায় দফায় সংঘর্ষ-হাতাহাতি

 

রবিবার ভোরে উঠে স্নান করে দেবপ্রিয় বাট্টালি মসজিদে পৌঁছে প্রথমে গোটা মসজিদ চত্বর ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করেন।

তারপর ৪০ মিনিট ধরে ধুয়ে দেন ফাঁকা মসজিদের বিভিন্ন কোণাগুলি ধুয়ে মুছে সাফ করেন।

দেবপ্রিয়কে এই কাজ করতে দেখে মুসলিম সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরা স্বাগত জানিয়েছেন। সকলেই দেবপ্রিয়কে দুহাতে আশীর্বাদ জানিয়ে বলেছেন, বর্তমানে দেবপ্রিয়’র মতো মানুষ আরও প্রয়োজন। তাহলেই তাঁরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে দিশা দেখাতে পারবে। কমবে রক্তারক্তি থেকে হানাহানি। একমাত্র ভালোবাসা, শ্রদ্ধাই পারে মানুষের বিভেদ কমিয়ে সকলকে কাছে টেনে নিতে। আর দেবপ্রিয় মজুমদার সেই কাজ করে দেখিয়েছেন।