০৩ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৭ অগাস্ট ২০২২, রবিবার
  • / 62

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ১০ মুহাররম বা আশুরা ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৯ অগস্ট পালিত হবে। আল্লাহ তায়লা হিজরি সালের ১২ মাসের মধ্যে ৪টি মাসকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। এই মাসগুলি ‘হারাম’ বা সম্মানিত মাস হিসেবে পরিগণিত। আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সূরা তওবা-য় বলেছেন, ‘এই মাসগুলিতে তোমরা পরস্পরের উপর অত্যাচার কর না।’ এই মাসগুলি হচ্ছে মুহাররম, রজব, যুলকাদাহ, যুলহিজ্জাহ। সেই হিসেবে হিজরির ক্যালেন্ডারে প্রথম মাস মুহাররম খুবই মর্যাদাসম্পন্ন এক মাস। এই মাসে ঝগড়া, বিবাদ, লড়াই, খুন-খারাপি, অশ্লীল কাজ, কারও হক আত্মসাৎ চরমভাবে নিষিদ্ধ। অন্য সাধারণ মাসেও এই কাজগুলি নিষিদ্ধ। কিন্তু মর্যাদাসম্পন্ন নির্দিষ্ট চারমাসে এইসব কাজ করা চরম গুনাহর পর্যায়ে পড়ে।

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস
REPRESENTATIVE IMAGE

মুহাররম মাসে রোযা ও সুন্নাহসম্মত আমল

আরও পড়ুন: গান্ধি পরিবারের নির্দিষ্ট কোনও ধর্ম নেই: বিজেপি মন্ত্রী

মুহাররম মাসে সুন্নতসম্মত আমল সম্পর্কে সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, আশুরার সিয়াম বা রোযা পালন করা খুবই সওয়াবের কাজ। ১০ মুহাররম রাসূল সা. সিয়াম পালন করেছেন। সেই সময় ইহুদি ও খ্রিষ্টানরাও ১০ মুহাররমকে সম্মান করত এবং রোযা রাখত। তাই রাসূল সা. তাঁদের অনুকরণ না করে ৯ ও ১০ মুহাররম অথবা ১০ ও ১১ মুহাররম সিয়াম পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: অমুসলিমদের সঙ্গে সামাজিক সুসম্পর্ক

রাসূলুল্লাহ সা. যখন আশুরার সিয়াম পালন করলেন এবং মুসলিমদের সিয়াম পালনের নির্দেশ দিলেন তখন সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহকে বললেন, হে আল্লাহ রাসূল সা. ইহুদি ও খ্রিষ্টানরাও এইদিন রোযা রাখে এবং দিনটিকে সম্মান করে। তখন আল্লাহ্ রাসূল সা. নির্দেশ দেন, তোমরা আশুরার দিনের সাথে একদিন পূর্বে বা একদিন পরে মিলিয়ে সিয়াম পালন কর। রমযানের ফরয রোযার পরই হচ্ছে আশুরার সিয়াম বা রোযার মর্যাদা। এটা পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহর কাফফারা স্বরূপ।

আরও পড়ুন: রমজানের আগমনী বার্তা দিয়ে যায় পবিত্র শবে বরাত

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস
REPRESENTATIVE IMAGE

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস
আশুরার সিয়াম পালনের উদ্দেশ্য

১০ মুহাররম তারিখে অত্যাচারি ও খোদা বিদ্রোহী ফেরাউন এবং তাঁর অনুসারী কওম আল্লাহর নবী মুসা আ.-কে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কিন্তু ফেরাউন ও তাঁর সৈন্যদের সাগরডুবি হয়ে মৃত্যু হয়। আর আল্লাহর বিশেষ রহমতে অত্যাচারি ফেরাউনের হাত থেকে মুসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সম্প্রদায় বনু ইসরাইল মুক্তি লাভ করে। আর এরই শুকরিয়া হিসেবে নবী মুসা আ. এদিন নফল রোযা রাখেন। মুসা আ.-র তাওহিদী আদর্শের অনুসারী হিসেবে মুহাম্মদ সা. এদিন নফল রোযা পালন করেছেন।

আল্লাহ্ এদিন মুসা আ.-র কওমকে নাজাত দিয়েছিলেন। তাঁর শুকরিয়া হিসেবে মুসা আ. এদিন রোযা পালন করেন। আল্লাহ্ রাসূল সা. মদীনার ইহুদিদের বলেন, তোমাদের চাইতে আমরাই মুসা আ.-র আদর্শের বেশি হকদার ও দাবিদার। অতপর তিনি ১০ মুহাররম রোযা রাখেন এবং এর সঙ্গে মিলিয়ে ৯ অথবা ১১ মুহাররম দু’দিনের রোযা পালন করার জন্য বলেন। আর রাসূল সা. নিজেও তা পালন করেন।

আশুরার দিন অর্থাৎ ১০ মুহাররম নবী মুহাম্মদ সা.-এর দোহিত্র হযরত ইমাম হুসেইন রা. অন্যায়ের সঙ্গে আপোস না করে শাহাদত বরণ করেন। অনেকে তাঁর জন্য এদিন আল্লাহর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস

আপডেট : ৭ অগাস্ট ২০২২, রবিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ১০ মুহাররম বা আশুরা ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৯ অগস্ট পালিত হবে। আল্লাহ তায়লা হিজরি সালের ১২ মাসের মধ্যে ৪টি মাসকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। এই মাসগুলি ‘হারাম’ বা সম্মানিত মাস হিসেবে পরিগণিত। আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সূরা তওবা-য় বলেছেন, ‘এই মাসগুলিতে তোমরা পরস্পরের উপর অত্যাচার কর না।’ এই মাসগুলি হচ্ছে মুহাররম, রজব, যুলকাদাহ, যুলহিজ্জাহ। সেই হিসেবে হিজরির ক্যালেন্ডারে প্রথম মাস মুহাররম খুবই মর্যাদাসম্পন্ন এক মাস। এই মাসে ঝগড়া, বিবাদ, লড়াই, খুন-খারাপি, অশ্লীল কাজ, কারও হক আত্মসাৎ চরমভাবে নিষিদ্ধ। অন্য সাধারণ মাসেও এই কাজগুলি নিষিদ্ধ। কিন্তু মর্যাদাসম্পন্ন নির্দিষ্ট চারমাসে এইসব কাজ করা চরম গুনাহর পর্যায়ে পড়ে।

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস
REPRESENTATIVE IMAGE

মুহাররম মাসে রোযা ও সুন্নাহসম্মত আমল

আরও পড়ুন: গান্ধি পরিবারের নির্দিষ্ট কোনও ধর্ম নেই: বিজেপি মন্ত্রী

মুহাররম মাসে সুন্নতসম্মত আমল সম্পর্কে সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, আশুরার সিয়াম বা রোযা পালন করা খুবই সওয়াবের কাজ। ১০ মুহাররম রাসূল সা. সিয়াম পালন করেছেন। সেই সময় ইহুদি ও খ্রিষ্টানরাও ১০ মুহাররমকে সম্মান করত এবং রোযা রাখত। তাই রাসূল সা. তাঁদের অনুকরণ না করে ৯ ও ১০ মুহাররম অথবা ১০ ও ১১ মুহাররম সিয়াম পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: অমুসলিমদের সঙ্গে সামাজিক সুসম্পর্ক

রাসূলুল্লাহ সা. যখন আশুরার সিয়াম পালন করলেন এবং মুসলিমদের সিয়াম পালনের নির্দেশ দিলেন তখন সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহকে বললেন, হে আল্লাহ রাসূল সা. ইহুদি ও খ্রিষ্টানরাও এইদিন রোযা রাখে এবং দিনটিকে সম্মান করে। তখন আল্লাহ্ রাসূল সা. নির্দেশ দেন, তোমরা আশুরার দিনের সাথে একদিন পূর্বে বা একদিন পরে মিলিয়ে সিয়াম পালন কর। রমযানের ফরয রোযার পরই হচ্ছে আশুরার সিয়াম বা রোযার মর্যাদা। এটা পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহর কাফফারা স্বরূপ।

আরও পড়ুন: রমজানের আগমনী বার্তা দিয়ে যায় পবিত্র শবে বরাত

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস
REPRESENTATIVE IMAGE

আশুরার রোযা ও এর ইতিহাস
আশুরার সিয়াম পালনের উদ্দেশ্য

১০ মুহাররম তারিখে অত্যাচারি ও খোদা বিদ্রোহী ফেরাউন এবং তাঁর অনুসারী কওম আল্লাহর নবী মুসা আ.-কে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কিন্তু ফেরাউন ও তাঁর সৈন্যদের সাগরডুবি হয়ে মৃত্যু হয়। আর আল্লাহর বিশেষ রহমতে অত্যাচারি ফেরাউনের হাত থেকে মুসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সম্প্রদায় বনু ইসরাইল মুক্তি লাভ করে। আর এরই শুকরিয়া হিসেবে নবী মুসা আ. এদিন নফল রোযা রাখেন। মুসা আ.-র তাওহিদী আদর্শের অনুসারী হিসেবে মুহাম্মদ সা. এদিন নফল রোযা পালন করেছেন।

আল্লাহ্ এদিন মুসা আ.-র কওমকে নাজাত দিয়েছিলেন। তাঁর শুকরিয়া হিসেবে মুসা আ. এদিন রোযা পালন করেন। আল্লাহ্ রাসূল সা. মদীনার ইহুদিদের বলেন, তোমাদের চাইতে আমরাই মুসা আ.-র আদর্শের বেশি হকদার ও দাবিদার। অতপর তিনি ১০ মুহাররম রোযা রাখেন এবং এর সঙ্গে মিলিয়ে ৯ অথবা ১১ মুহাররম দু’দিনের রোযা পালন করার জন্য বলেন। আর রাসূল সা. নিজেও তা পালন করেন।

আশুরার দিন অর্থাৎ ১০ মুহাররম নবী মুহাম্মদ সা.-এর দোহিত্র হযরত ইমাম হুসেইন রা. অন্যায়ের সঙ্গে আপোস না করে শাহাদত বরণ করেন। অনেকে তাঁর জন্য এদিন আল্লাহর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করেন।