সিডনি উপকূলে বিপদগ্রস্থ তিমির উদ্ধারকার্য ঘিরে তৎপরতা
- আপডেট : ৯ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 73
পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ অস্ট্রেলিয়ার সিডনি উপকূলে দড়িতে জড়িয়ে বিপদে পড়েছে একটি কুঁজওয়ালা তিমি। তিমিটি এখনো সাঁতার কাটতে পারলেও তা তার জন্য ক্লান্তিকর ও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে তিমিটিকে মুক্ত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বন্যপ্রাণী উদ্ধারকর্মীরা।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে সিডনি হারবারের দক্ষিণে দড়িতে জড়িয়ে পড়ে একটি কুঁজওয়ালা তিমি। দড়ি গায়ে পেঁচিয়ে থাকা অবস্থায়ও তিমিটি সাঁতার কেটে চলছে, কিন্তু সেটি তার স্বাভাবিক চলাফেরায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যপ্রাণী সংগঠন ওআরআরসিএ জানিয়েছে, এটি একটি তরুণ তিমি এবং এই অবস্থায় তার পক্ষে সাঁতার কাটা ও ডুব দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, যা তার জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।
ঘটনাস্থল থেকে ধারণ করা একটি আকাশপথের ভিডিয়োতে দেখা যায়, তিমিটি সিডনি হারবারের দক্ষিণ দিক দিয়ে সাঁতরে চলেছে এবং একটি ভাসমান বয়ার সঙ্গে আটকানো দড়ি তার শরীরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।
ওআরআরসিএ নামের তিমি উদ্ধারকাজে নিয়োজিত সংস্থার মুখপাত্র পিপ জ্যাকবস জানিয়েছেন, তিমিটির দৈর্ঘ্য আনুমানিক ২৫ ফুট, যা ইঙ্গিত দেয় এটি একটি যুবক তিমি। তার ভাষায়, “তিমিটির বাঁ পাশের পাখনায় দড়িটি জড়িয়ে রয়েছে, যার ফলে তার চলাফেরায় অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে।”
জ্যাকবস আরও বলেন, “সাধারণত এই সময়ে তিমিদের উত্তর দিকে যাওয়ার কথা, কারণ এখন তাদের অভিবাসনের মৌসুম। কিন্তু এই তিমিটি দক্ষিণে যাচ্ছে, যা অস্বাভাবিক। সম্ভবত ক্লান্তি বা বিভ্রান্তির কারণে এমনটি ঘটছে।” তিনি জানান, উদ্ধারকারী দল এবং স্বেচ্ছাসেবীরা উপকূলজুড়ে তিমিটির অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন। তবে খারাপ আবহাওয়া, উঁচু ঢেউ এবং বাতাস উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জ্যাকবস বলেন, “আমরা যদি আবহাওয়ার সাহায্য পাই এবং তিমিটিকে নির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করতে পারি, তাহলে প্রথম কাজ হবে তার শরীর থেকে দড়িটি খুলে দেওয়া।” তার মতে, এই দড়িটি তিমিটির শরীরের ভারসাম্য ও সাঁতার কাটার ক্ষমতা ব্যাহত করছে। আর দীর্ঘ সময় এমনভাবে আটকে থাকলে, তিমিটি না খেতে পেরে দুর্বল হয়ে যেতে পারে, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি হতে পারে।
বিশাল সামুদ্রিক প্রাণীদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি ও তাৎক্ষণিক সহায়তা আরও একবার প্রমাণ করছে যে, প্রাকৃতিক প্রাণীজগতের সঙ্গে সহাবস্থান এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। সিডনির এই উদ্ধার তৎপরতা হয়তো অনেকের চোখ খুলে দেবে, বিশেষ করে সমুদ্রে ফেলা দড়ি ও আবর্জনার মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে।