১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভিবাসন বিল পাস লোকসভায়,  রোহিঙ্গা-বাংলাদেশিদের টার্গেট শাহের

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার
  • / 158

নয়াদিল্লি: লোকসভায় বৃহস্পতিবার অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিলটি উত্থাপন করেন। বিলের উপর তিন ঘন্টাব্যাপী আলোচনার শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, যারা উন্নয়নে সহায়তা করতে এখানে আসেন, তাদের ভারত স্বাগত জানায়। কিন্তু যারা সমস্যা তৈরি করতে আসেন, রোহিঙ্গা হোক বা বাংলাদেশি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এই বিল তাদের চিহ্নিত করতেও সাহায্য করবে, যারা খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসেন।

শতাধীপ্রাচীন অভিবাসন আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে সেটির সরলীকরণ, জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করা ও অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যেই ওই নতুন আইন আনা হচ্ছে বলে দাবি কেন্দ্রের। তবে এই বিল যেদিন পাস হল লোকসভায়, সেদিনই অযাচিতভাবে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ টেনে আনলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশিরা এদেশে এসে সমস্যা তৈরি করে, প্রকারান্তরে সেই ইঙ্গিতই দিলেন অমিত শাহ। এর ফলে বাংলাদেশসহ অন্য দেশ থেকে আসা মুসলিমদের ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। রোহিঙ্গা, বাংলাদেশের মানুষ এ দেশে এসে ভারতের কী ক্ষতি করেছেন, তা অবশ্য জানাননি শাহ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই দাবি করেন, কাউকে ভারতে আসতে বাধা দেওয়ার জন্য তারা এই আইন আনছে না। আরও বেশি লোককে স্বাগত জানানো হবে ভারতে। তবে তাদের অবশ্যই অভিবাসন আইন মানতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আইনের বিধানগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

নিত্যানন্দ রাই আরও বলেন, যেহেতু ভারত অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে, সরকার চায় যাতে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক এখানে আসে। আমরা বিষয়টি নিশ্চিত করতে পর্যটকদের সুবিধা প্রদান করছি। তবে দেশের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়াও সরকারের দায়িত্ব। নতুন পাস হওয়া এই বিল অনুযায়ী, কোনও বিদেশি যদি ভারতের হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়ে জানাতে হবে প্রশাসনকে। এর পাশাপাশি কোনও বিদেশি যদি কারও বাড়িতে থাকেন, তাহলে সেই বাড়ির মালিককে সেই বিষয়ে অভিহিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এই বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর তা লঙ্ঘন করলে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান আছে।

এদিকে নয়া পাস হওয়া বিল অনুযায়ী, কোনও বিদেশি যদি ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেই ভারতে থেকে যান, তাহলে তার তিনবছর পর্যন্ত জেল, তিন লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে। এদিকে দালালদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এদিকে ইমিগ্রেশন অফিসাররা এখন থেকে বিনা পরোয়ানাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবেন। এদিকে অনুপ্রবেশ করলে পাঁচ বছর জেল, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এতে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অভিবাসন বিল পাস লোকসভায়,  রোহিঙ্গা-বাংলাদেশিদের টার্গেট শাহের

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার

নয়াদিল্লি: লোকসভায় বৃহস্পতিবার অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিলটি উত্থাপন করেন। বিলের উপর তিন ঘন্টাব্যাপী আলোচনার শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, যারা উন্নয়নে সহায়তা করতে এখানে আসেন, তাদের ভারত স্বাগত জানায়। কিন্তু যারা সমস্যা তৈরি করতে আসেন, রোহিঙ্গা হোক বা বাংলাদেশি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এই বিল তাদের চিহ্নিত করতেও সাহায্য করবে, যারা খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসেন।

শতাধীপ্রাচীন অভিবাসন আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে সেটির সরলীকরণ, জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করা ও অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যেই ওই নতুন আইন আনা হচ্ছে বলে দাবি কেন্দ্রের। তবে এই বিল যেদিন পাস হল লোকসভায়, সেদিনই অযাচিতভাবে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ টেনে আনলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশিরা এদেশে এসে সমস্যা তৈরি করে, প্রকারান্তরে সেই ইঙ্গিতই দিলেন অমিত শাহ। এর ফলে বাংলাদেশসহ অন্য দেশ থেকে আসা মুসলিমদের ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। রোহিঙ্গা, বাংলাদেশের মানুষ এ দেশে এসে ভারতের কী ক্ষতি করেছেন, তা অবশ্য জানাননি শাহ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই দাবি করেন, কাউকে ভারতে আসতে বাধা দেওয়ার জন্য তারা এই আইন আনছে না। আরও বেশি লোককে স্বাগত জানানো হবে ভারতে। তবে তাদের অবশ্যই অভিবাসন আইন মানতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আইনের বিধানগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

নিত্যানন্দ রাই আরও বলেন, যেহেতু ভারত অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে, সরকার চায় যাতে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক এখানে আসে। আমরা বিষয়টি নিশ্চিত করতে পর্যটকদের সুবিধা প্রদান করছি। তবে দেশের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়াও সরকারের দায়িত্ব। নতুন পাস হওয়া এই বিল অনুযায়ী, কোনও বিদেশি যদি ভারতের হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়ে জানাতে হবে প্রশাসনকে। এর পাশাপাশি কোনও বিদেশি যদি কারও বাড়িতে থাকেন, তাহলে সেই বাড়ির মালিককে সেই বিষয়ে অভিহিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এই বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর তা লঙ্ঘন করলে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান আছে।

এদিকে নয়া পাস হওয়া বিল অনুযায়ী, কোনও বিদেশি যদি ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেই ভারতে থেকে যান, তাহলে তার তিনবছর পর্যন্ত জেল, তিন লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে। এদিকে দালালদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এদিকে ইমিগ্রেশন অফিসাররা এখন থেকে বিনা পরোয়ানাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবেন। এদিকে অনুপ্রবেশ করলে পাঁচ বছর জেল, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এতে।