১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিএনএন-এর রিপোর্ট: কেন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হল ভারত-পাকিস্তান?

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১২ মে ২০২৫, সোমবার
  • / 123

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: দুই পড়শির মধ্যে সংঘর্ষ মোড় নিচ্ছিল ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে। কিন্তু ট্রাম্পের ট্যুইট বদলে দিল সমীকরণ। সংঘর্ষ বিরতির বার্তা গেল দু’দেশে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য পান আমেরিকার শীর্ষ কর্মকর্তারা। এরপরই ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে উৎসাহিত করেন।

এ খবর দিয়ে অনলাইন সিএনএন বলছে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্র্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি উইলিস-সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা শুক্রবার সকালে যখন ভারত-পাকিস্তানের তীব্র উত্তেজনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন, তখন আমেরিকার হাতে যায় উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ কথা বলেছেন সিএনএন-কে। কী জাতীয় তথ্য পেয়েছিলেন মার্কিন কর্মকর্তারা, স্পর্শকাতরতার কারণে তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান ওই কর্মকর্তারা। তবে তারা বলেছেন, তিনজন কর্মকর্তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্ষেত্রে সম্পৃক্ততা বাড়ানো উচিত। ফলে নিজে থেকেই নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন জেডি ভ্যান্স।

এ পরিকল্পনা নিয়ে প্রথমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অবহিত করেন জেডি ভ্যান্স। তারপর শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে মোদিকে ফোন করে তিনি কথা বলেন। তিনি মোদিকে বলেন, হোয়াইট হাউস মনে করছে যে উত্তেজনা উচ্চ মাত্রায় নাটকীয় মোড় নিতে যাচ্ছে। ফলে মোদিকে সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য উৎসাহিত করেন জেডি ভ্যান্স।

 

একইসঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনের পথ বেছে নিতে বলেন। আমেরিকা মনে করে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী এই দুই দেশের মধ্যে কোনও আলোচনা হচ্ছে না। তাদেরকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা দরকার।

 

এ অবস্থায় মোদিকে পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার ওপর জোর দেন জেডি ভ্যান্স। বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও-সহ তার মন্ত্রকের কর্মকর্তারা রাতভর ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে আলোচনা চালিয়ে যান। মঙ্গলবার থেকে একটি যুদ্ধ বিরতিতে পৌঁছার সাধারণ ধারণা দিয়ে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছিলেন মার্কো রুবিও। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন এ বিষয়টি কীভাবে করা হবে সে বিষয় ছেড়ে দিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের ওপর।

মার্কো রুবিও ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে যখন ফোনে কথা বলেছেন তখন সে-সম্পর্কে যেসব কর্মকর্তা ভালোভাবে জানেন তাদের একজন বলেছেন, এ সপ্তাহে উত্তেজনা কমিয়ে আনার যথেষ্ট প্রচেষ্টা ছিল। বিশেষ করে এক সময় দেখা যায় উভয় পক্ষ আর আলোচনা করছে না। এ সপ্তাহে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় তাতে ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনাকে উৎসাহিত করা হয়। যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা হ্রাসের একটি পথ বের করতে বলা হয়।

এমন অবস্থায় জটিল এক মুহূর্তে মোদিকে ফোন করেন জেডি ভ্যান্স। তিনি এর আগে গত মাসে ভারত সফর করেছেন এবং মোদির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে। এর ফলে ট্রাম্পের কর্মকর্তারা মনে করেন মোদির সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণে তার ফোন কাজে দেবে। ফলে কয়েকদিন আগে যে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে বলেছিলেন এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু করার নেই, তিনিই শেষ পর্যন্ত মোদিকে ফোন করেন। এর ফলে শনিবার তীব্র লড়াইয়ের পর উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সিএনএন-এর রিপোর্ট: কেন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হল ভারত-পাকিস্তান?

আপডেট : ১২ মে ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: দুই পড়শির মধ্যে সংঘর্ষ মোড় নিচ্ছিল ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে। কিন্তু ট্রাম্পের ট্যুইট বদলে দিল সমীকরণ। সংঘর্ষ বিরতির বার্তা গেল দু’দেশে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য পান আমেরিকার শীর্ষ কর্মকর্তারা। এরপরই ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে উৎসাহিত করেন।

এ খবর দিয়ে অনলাইন সিএনএন বলছে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্র্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি উইলিস-সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা শুক্রবার সকালে যখন ভারত-পাকিস্তানের তীব্র উত্তেজনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন, তখন আমেরিকার হাতে যায় উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ কথা বলেছেন সিএনএন-কে। কী জাতীয় তথ্য পেয়েছিলেন মার্কিন কর্মকর্তারা, স্পর্শকাতরতার কারণে তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান ওই কর্মকর্তারা। তবে তারা বলেছেন, তিনজন কর্মকর্তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্ষেত্রে সম্পৃক্ততা বাড়ানো উচিত। ফলে নিজে থেকেই নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন জেডি ভ্যান্স।

এ পরিকল্পনা নিয়ে প্রথমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অবহিত করেন জেডি ভ্যান্স। তারপর শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে মোদিকে ফোন করে তিনি কথা বলেন। তিনি মোদিকে বলেন, হোয়াইট হাউস মনে করছে যে উত্তেজনা উচ্চ মাত্রায় নাটকীয় মোড় নিতে যাচ্ছে। ফলে মোদিকে সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য উৎসাহিত করেন জেডি ভ্যান্স।

 

একইসঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনের পথ বেছে নিতে বলেন। আমেরিকা মনে করে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী এই দুই দেশের মধ্যে কোনও আলোচনা হচ্ছে না। তাদেরকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা দরকার।

 

এ অবস্থায় মোদিকে পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার ওপর জোর দেন জেডি ভ্যান্স। বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও-সহ তার মন্ত্রকের কর্মকর্তারা রাতভর ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে আলোচনা চালিয়ে যান। মঙ্গলবার থেকে একটি যুদ্ধ বিরতিতে পৌঁছার সাধারণ ধারণা দিয়ে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছিলেন মার্কো রুবিও। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন এ বিষয়টি কীভাবে করা হবে সে বিষয় ছেড়ে দিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের ওপর।

মার্কো রুবিও ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে যখন ফোনে কথা বলেছেন তখন সে-সম্পর্কে যেসব কর্মকর্তা ভালোভাবে জানেন তাদের একজন বলেছেন, এ সপ্তাহে উত্তেজনা কমিয়ে আনার যথেষ্ট প্রচেষ্টা ছিল। বিশেষ করে এক সময় দেখা যায় উভয় পক্ষ আর আলোচনা করছে না। এ সপ্তাহে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় তাতে ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনাকে উৎসাহিত করা হয়। যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা হ্রাসের একটি পথ বের করতে বলা হয়।

এমন অবস্থায় জটিল এক মুহূর্তে মোদিকে ফোন করেন জেডি ভ্যান্স। তিনি এর আগে গত মাসে ভারত সফর করেছেন এবং মোদির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে। এর ফলে ট্রাম্পের কর্মকর্তারা মনে করেন মোদির সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণে তার ফোন কাজে দেবে। ফলে কয়েকদিন আগে যে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে বলেছিলেন এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু করার নেই, তিনিই শেষ পর্যন্ত মোদিকে ফোন করেন। এর ফলে শনিবার তীব্র লড়াইয়ের পর উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।