সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতই থাকবে, পুনর্বহালের কোনও প্রশ্ন নেই: অমিত শাহের কড়া বার্তা পাকিস্তানকে

- আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, শনিবার
- / 27
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ন্যাড়া বেল তলায় একবারই যায়—এই পুরনো বাংলা প্রবাদটি আবার উঠে এল সামনে, কিন্তু এবার তা উঠে এল ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য ঘিরে। পহেলগাঁও হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট—সিন্ধু জলচুক্তি আর কখনওই পুনর্বহাল করা হবে না। এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অমিত শাহ বলেন, “সিন্ধু জলচুক্তি এখন স্থগিত, এবং তা ভবিষ্যতেও স্থগিতই থাকবে। একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিলের অধিকার আমাদের রয়েছে।” তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, “চুক্তির প্রস্তাবনায় উল্লেখ রয়েছে যে এটি দুই দেশের শান্তি এবং উন্নতির জন্য তৈরি। কিন্তু পাকিস্তান যদি সেই শান্তি লঙ্ঘন করে, তাহলে আমাদের আর তা রক্ষা করার দায় থাকে না।”
অমিত শাহ তাঁর বক্তব্যে জোর দিয়ে জানান, ভারতের অংশের জল পাকিস্তানের হাতে আর যাবে না। বরং সেই জল খাল কেটে রাজস্থানের মতো জলসঙ্কটগ্রস্ত অঞ্চলে পাঠানো হবে। তাঁর কথায়, “যে জল এতদিন অন্যায়ভাবে পাকিস্তান পাচ্ছিল, এবার সেই জলের ব্যবহার হবে ভারতের প্রয়োজন মেটাতে।”
পাকিস্তানের সঙ্গে যাবতীয় দ্বন্দ্ব, যুদ্ধে মুখোমুখি অবস্থান বা দীর্ঘদিনের শত্রুতার ইতিহাস সত্ত্বেও, এতদিন সিন্ধুর জল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ভারত। এই প্রথমবার, পহেলগাঁও হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই, কেন্দ্র বড় কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয় এবং চুক্তি স্থগিত করে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারত সরকারের এখনও পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে কঠোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ, যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে পাকিস্তানের ওপর। দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান দাবি করে এসেছে যে নয়াদিল্লি সিন্ধুর বিপুল পরিমাণ জল ধরে রাখতে পারবে না। কিন্তু এবার কেন্দ্র এমন পরিকাঠামো তৈরির ইঙ্গিত দিয়েছে, যাতে জল আটকে রাখা সম্ভব হবে।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাসে সিন্ধু জলচুক্তি সবসময়ই ছিল এক শান্তিপূর্ণ নিদর্শন। যুদ্ধ, হামলা, কূটনৈতিক চাপ সবকিছুর মাঝেও এই চুক্তি অটুট ছিল। কিন্তু ২০২৫-এ এসে তা ভেঙে গেল, এবং তার স্থায়ী পরিণতির কথা স্পষ্ট করে দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে।
এখন দেখার, এই কড়া সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কী হয়, এবং ভারতের ভিতরে ও বাইরে এর কূটনৈতিক প্রতিফলন কতটা তীব্র হয়। তবে এটা স্পষ্ট, ভারতের জল সম্পদ ভবিষ্যতে নিজের প্রয়োজনেই ব্যবহার হবে—আর প্রতিবেশী দেশের ‘অন্যায় সুবিধা’ নেওয়ার সুযোগ শেষ।